আজ (৫ নভেম্বর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।আর এই নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে এখন গোটা বিশ্ব।এই নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে আগামী বিশ্বের ভবিষ্যৎ।এর মধ্যে রয়েছে বর্তমানে বহুল আলোচিত ফিলিস্তিন-লেবানন সংকটের মত ইস্যুসমূহ।তাই নির্বাচনকে ঘিরে ফিলিস্তিন-লেবাননের জনগোষ্ঠী প্রবল আগ্রহের জায়গা সৃষ্টি হয়েছে।
গাজার এক বাসিন্দা আম্মার জুদেহ এ সম্পর্কে বলেন, “যদি ট্রাম্প জয়ী হন, আমাদের জন্য তা একটি বিপর্যয় হবে। এর পূর্বে তার প্রেসিডেন্সি আমাদের ফিলিস্তিনের জন্য ছিল মারাত্মক।তিনি জেরুজালেমকে ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন এবং আরব দেশগুলোর সাথে ইসরায়েলের সম্পর্ক উন্নয়নও বৃদ্ধি পায়।যদি তিনি আবারও প্রেসিডেন্ট হন, তবে উত্তর গাজা থেকে আমাদেরকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়ন করবেন।
গাজার আরেক বাসিন্দা তাহানি আরাফাত বলেন যে,“আশার কোনো সুযোগ নেই, যেহেতু আলোচনাগুলো শুধু লেবাননের সংঘাত সমাপ্তির দিকে মনোনিবেশ করছে, এক্ষেত্রে আমরা যেন অস্তিত্বহীন। তবে আমি মনে করি, ট্রাম্প দ্রুত কিছু সমাধান আনতে পারেন।যুদ্ধের সূচনা বাইডেনের অধীনে, এবং তা আট মাস ধরে চলছে। আমেরিকা যদি সত্যিই যুদ্ধ থামাতে চেষ্টা করতো, তা অনেক আগেই শেষ হতো।"
আল-সাতি শরণার্থী শিবিরে আশ্রয়গ্রহণকারী ইমাদ আল-দায়া বলেন “আমাদের সবচেয়ে বড় আশা, এই যুদ্ধের অবসান। আমি আমেরিকান জনগণের প্রতি বলতে চাই যে কোনো অবস্থায় এই যুদ্ধের অবসানের পক্ষে সমর্থন করুন। ট্রাম্পের সময় আমাদের জন্য বিপর্যয়কর ছিল।আমি চাই না তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট হন, কারণ তিনি শুধুমাত্র ইসরায়েলের চাহিদা মেটাবেন। আমাদের দুর্ভোগ যেন কারও কাছে দৃশ্যমান নয়, তবে প্রতিটি দিন রক্ত, অশ্রু, এবং শোকের ভেতর দিয়ে কাটছে।"
অন্যদিকে লেবাননের বৈরুতের বাসিন্দা জয় স্লিম এ বিষয়ে জানান যে “বর্তমানে, আমাদের জন্য, আরব হিসেবে বিশেষ করে ফিলিস্তিন-লেবাননের বাসিন্দাদের জন্য খুবই সংকটকালীন সময়। আমি আগে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে থাকলেও বাইডেনের শাসনের পর এখন ট্রাম্প জেতাকেই বেশি ভালো মনে করছি।"
বৈরুতের আরেক বাসিন্দা শরীফ খাইলি বলেন,“লেবাননে বিভিন্ন মানুষের বিভিন্ন মতামত আছে। কেউ বলবেন হ্যারিস যুদ্ধ চালিয়ে যাবেন এবং কেউ বলবেন ট্রাম্প তা বন্ধ করতে পারেন।’'
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনে এ পর্যন্ত সাত কোটি ৭৬ লাখ ভোটার তাদের আগাম ভোট প্রদান করেছেন যা ২০২০ সালের মোট ভোটের প্রায় অর্ধেক।তবে যুক্তরাষ্ট্রে আরব ও মুসলিম আমেরিকান, সেই সঙ্গে প্রো-প্যালেস্টাইনি প্রগতিশীলদের একাংশ মনে করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কামালা হ্যারিসের প্রশাসন এই সংকট কমাতে যথেষ্ট ভূমিকা রাখেনি। ফলে, অনেকেই ভাবছেন,আসন্ন নির্বাচনে বাইডেনকে ভোট না দেওয়াই সঠিক সিদ্ধান্ত।রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন জানিয়ে আসছে,অনেক আমেরিকান মনে করেন তাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনঃনির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত বিপজ্জনক হতে পারে।এই অবস্থায়, পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যেই জয়ী হোক, তার নীতিতে গাজা, পশ্চিম তীর ও লেবাননের জনগণের কী প্রভাব পড়বে, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক বিতর্ক।
নাহিদা