’চরণামৃত’ ভেবে এসির জল পান ভক্তদের। ছবি - সংগৃহীত
হিন্দুদের তীর্থক্ষেত্র বৃন্দাবনে এসি থেকে বের হওয়া পানিকে ভগবানের চরণামৃত ভেবে পান করছেন হাজার হাজার ভক্ত! মন্দিরের দেওয়ালে লাগানো হাতির মূর্তির গা বেয়ে গড়িয়ে পড়া পানি খাওয়ার জন্য হুড়োহুড়ি করছেন ভক্তরা।
ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলার বৃন্দাবনের বাঁকে বিহারী মন্দিরে। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একের পর এক ভক্ত হাতির মুখের একটি ভাস্কর্য থেকে পড়া জল পান করছেন। ভগবান কৃষ্ণের চরণামৃত ভেবে সেই জল পান করছেন সকলে। কেউ কেউ মাথায়ও দিচ্ছেন সেই জল। আবার কেউ কেউ কাপে করে সেই জল সংগ্রহ করে পরিবারের সদস্যদের জন্যও নিয়ে যাচ্ছেন।
পরে জানা যায় হাতির ভাস্কর্য থেকে আসা পানি আসলে শীততাপ নিয়ন্ত্রিত মেশিনের। যা সুন্দর কারুকার্যের মাধ্যমে ওই হাতির মুখ দিয়ে পড়ছে। ভাইরাল ভিডিওতে শোনা যায় এক ব্যক্তি সকল ভক্তদের বলছেন, “ওই জল এসির জল। কোনও চরণামৃত নয়।” তারপরেও অনেকে তা পান করেন এবং মাথায় ছিটিয়ে নিচ্ছেন।
বৃন্দাবনের মন্দিরের এই ভিডিও নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে সমালোচনার ঢেউ। নেটিজেনরা লিখেছেন, “এ্রদের অবিলম্বে শিক্ষিত করা দরকার। চরণামৃত ভেবে এসির জল কী করে খেতে পারেন!’’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘‘সবাই করছে বলেই করতে হবে। এদের এমনই কুসংস্কার যে, কোনও কাজ করার আগে নিজের যুক্তি, বুদ্ধিকে এক বারও কাজে লাগাবে না। ভারতীয়েরা কি এতটাই অশিক্ষিত!’’
তবে কেউ কেউ ওই কুসংস্কারে উস্কানি দেওয়ার দায় চাপিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষের উপরেও। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘কুসংস্কারের মাত্রা দেখলে অবাক হতে হয়। আরও অদ্ভুত বিষয় হল, কথাটা মন্দিরের পূজারিরা শুধু মুখে না বলে একটি লিখিত নোটিস তো ওখানে লাগিয়ে দিতে পারতেন। সেটা না করে মন্দির কর্তৃপক্ষও বিষয়টিতে উস্কানি দিচ্ছেন না কি!’’
২০১২ সালে এই ধরণের ঘটনা ঘটেছিল মুম্বাইতে। যীশুখ্রিস্টের মূর্তির পায়ের পাতা থেকে জল পড়তে শুরু করে। ভক্তরা প্রথমে ভেবেছিলেন অলৌকিক ঘটনা। কিন্তু ভারতীয় যুক্তিবাদী সানাল এদামারুকু তদন্ত করে সত্য সামনে আনেন। তিনি জানান, পানিটি আসলে আটকে থাকা ড্রেনেজ পাইপ থেকে বেরিয়েছিল।
নাহিদা