পশ্চিমাদেশে তুমুল জনপ্রিয় হলেও এশিয়ায় তেমন পরিচিত ছিল না হ্যালোইন উৎসব। তবে সম্প্রতি ভারতে বাড়ছে ভূত-উৎসবের কদর। উৎসবে প্রবীণ থেকে নবীনদের কৌতুহল বেশ চোখে পড়ার মতো। আর সে কারণেই উৎসবের আগেই কলকাতার প্রাণ কেন্দ্র অ্যাকাডেমি অফ ফাইন আর্টসে দেখা মিলল নানা রকমের ভূতের, অর্থ্যাৎ ভূত সেজে বেড়ানো তরুণ-তরুণীর।
বাতাসে রাতের দিকে হালকা শীতের শিরশিরানি, শীত আসবে আসবে ভাব— এমনই একটা সময়ে কলকাতায় পালন করা হয় ভূত চতুর্দশী। আর পাশ্চাত্যে আসে হ্যালোউইন। সর্বজনস্বীকৃত ভূতেদের দিন। কালীপুজোর আগের রাতে কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে ভূত চতুর্দশী পালিত হয়। ওই দিন বাড়িতে বাড়িতে চোদ্দটি প্রদীপ জ্বালানো এবং চোদ্দো শাক খাওয়ার চল বহু দিন ধরেই। তবে ওইটুকুই, ভূত চতুর্দশীর দিন ভূতেদের নিয়ে এর থেকে বেশি মাতামাতি করে না বাঙালি। ভূত চতুর্দশী আর পাশ্চাত্যের হ্যালোউইন দিবস প্রায় কাছাকাছি সময়েই আসে। বিদেশে হ্যালোউইন এখন উৎসবের রূপ নিয়েছে। তবে ভারতেও পাশ্চাত্যের পাশাপাশি হ্যালোউইনের ছায়া ক্রমে জাঁকিয়ে বসছে। ক্রিসমাসকে ভারতীয়রা যে ভাবে আপন করে নিয়েছে, ঠিক সে ভাবেই চেনা-জানা ভূতেদের থেকেও সাহেব ভূতেদের প্রতি তাদের আকর্ষণও অল্পবিস্তর বাড়ছে বইকি।
৩১ অক্টোবর হ্যালোউইন পালন করেন খ্রিস্টানরা। এটি সেল্টিক সামহেইন নামক প্রাচীন ফসল কাটার উৎসব থেকে উদ্ভূত হয়েছে, যেখানে বিশ্বাস করা হত, এই রাতে মৃতদের আত্মারা পৃথিবীতে ফিরে আসে। পরে খ্রিস্টধর্মের প্রভাবে এটি ‘অল হ্যালোজ ইভ’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠে এবং ধীরে ধীরে মজাদার এবং ভৌতিক উৎসবে পরিণত হয়।
কী হয় হ্যালোউইনে? নিজেরই বাড়িতে বা এলাকার কমিউনিটি হলে বিশেষ পার্টি দেওয়া হয়। অনেক পার্টিতে থিম থাকে। তা হতে পারে সুপারহিরো অথবা ‘কনজুরিং’ জাতীয় ভূতের সিনেমা। কুমড়োর খোল শুকিয়ে চোখ-মুখ কেটে ভিতরে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বাতি। এই দিনটায় খুদেরা কিম্ভূত সাজগোজ করে। কেউ রক্তখেকোর সাজে, তো কেউ জ়ম্বির। শিশুরা নানা রকম ভূত সেজে, দলবেঁধে এলাকার প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে ঝুলি পেতে ক্যান্ডি, মিষ্টি, স্ন্যাক্স কিংবা ছোটখাটো উপহার চায়। তা না দিলে কিন্তু আপনাকে পড়তে হতে পারে ‘ট্রিক অর ট্রিট’-এর গেরোয়। অর্থাৎ, উপহার না পেলে বাচ্চারা মজার ছলেই এটা-ওটা নষ্ট করে। বড়রা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে বনফায়ার, ভূতুড়ে সাজ ও পোশাক পরে পার্টি, ভৌতিক স্থান ভ্রমণ, ভয়ের সিনেমা দেখার মতো নানা রকম কাজকর্ম করেন সে দিন।
ফুয়াদ