ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১

মুসলিমদের ভোট পেতে ট্রাম্পের নতুন কৌশল

প্রকাশিত: ২১:৫৪, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

মুসলিমদের ভোট পেতে ট্রাম্পের নতুন কৌশল

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ইসরায়েল ও গাজা নীতিতে অসন্তুষ্ট এবং ক্ষুব্ধ আরব আমেরিকান ও মুসলিম ভোটারদের সমর্থন পাওয়ার চেষ্টা করছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ কারণেই শনিবার (২৭ অক্টোবর) মিশিগানের প্রচার সমাবেশে কয়েকজন মুসলিম নেতাকে তার সাথে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান ট্রাম্প। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ খবর জানিয়েছে।

ডিয়ারবর্ন শহরের কাছাকাছি অবস্থিত ডেট্রয়েট শহরতলিতে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ট্রাম্প বলেন, ‘তারা ভোটের ফলাফল একদিকে বা অন্যদিকে নিয়ে যেতে পারে।’ ডিয়ারবর্নকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আরব সংখ্যাগরিষ্ঠ শহর ঘোষণা করা হয়।

ট্রাম্প তার ভাষণে জানান, তিনি এদিন মুসলিম নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তার সঙ্গে মঞ্চে ছিলেন মিশিগানের মুসলিম সম্প্রদায়ের বিশিষ্ট নেতারা। এই নেতাদের একজন ইমাম বিলাল আলজুহাইরি ট্রাম্পকে শান্তির প্রার্থী হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

আলজুহাইরি বলেন, আমরা মুসলিমরা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে আছি কারণ তিনি শান্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন-যুদ্ধের নয়।

তিনি আরও বলেন, আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করছি কারণ তিনি মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউক্রেনের যুদ্ধের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

মুসলিম সমর্থন টানতে এমনকি ট্রাম্প জনসমক্ষে গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের পদক্ষেপের সমালোচনাও করেছেন। বলেছেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তার সামরিক বাহিনীকে দ্রুত কাজ শেষ করতে হবে।

তিনি প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসেরও সমালোচনা করেছেন ইসরায়েলকে যথেষ্ট সমর্থন না দেওয়ার জন্য। যদিও বর্তমান প্রশাসন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইসরায়েলের সমালোচনা এড়িয়ে চলে এবং দেশটিতে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করার কথা বিবেচনায় আনে না। অথচ ২০১৭ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মাসেই সাতটি মুসলিম-প্রধান দেশের নাগরিকদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ট্রাম্প। দেশগুলো হলো- ইরাক, সিরিয়া, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান এবং ইয়েমেন। এই দেশগুলোর নাগরিকদের ৯০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন তিনি।

এছাড়া এই আদেশের অধীনে সিরিয়ান শরণার্থীদের অনির্দিষ্টকালের জন্য নিষিদ্ধ করা হয় এবং চার মাসের জন্য সকল শরণার্থীর প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়। দীর্ঘ আদালত লড়াইয়ের পর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আংশিকভাবে টিকে যায়। তবে বাইডেন ২০২১ সালে শপথ গ্রহণের পরপরই এই আদেশগুলো বাতিল করেন।

ট্রাম্পের প্রচার শিবির গাজা যুদ্ধ এবং সাম্প্রতিককালে লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অব্যাহত সমর্থনের কারণে আরব আমেরিকান এবং মুসলিমদের ক্ষোভ কাজে লাগাতে চেয়েছে। তারা বাইডেন ও হ্যারিসের সমালোচনা করে বলেছে, ট্রাম্প শান্তি আনতে সক্ষম হবেন এবং দাবি করেছেন যে ডেমোক্র্যাটরা ইসরায়েল সমর্থকদের পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন দিচ্ছে না।

অবশ্য মুসলিম ভোটারদের সমর্থন পেতে গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে হ্যারিস বলেছেন তিনি দুই-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে। ফ্লিন্টে একটি সংক্ষিপ্ত বৈঠকে আরব আমেরিকান নেতারা কমলাকে অনুরোধ জানান যাতে তিনি বাইডেন প্রশাসনের নীতি থেকে কিছুটা ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর মিশিগানের কালামাজুতে প্রচারণাকালে হ্যারিস তার বক্তৃতার শুরুতেই বাধার সম্মুখীন হন। এক প্রতিবাদকারী চিৎকার করে বলেন,‘গাজা যুদ্ধ আর নয়।’

শিহাব উদ্দিন

×