ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১

ইউক্রেনকে সহায়তা বিষয়ে পশ্চিমাদের আবারও পুতিনের হুমকি

প্রকাশিত: ১৯:০৫, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

ইউক্রেনকে সহায়তা বিষয়ে পশ্চিমাদের আবারও পুতিনের হুমকি

ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির ন্যাটো মিত্ররা ইউক্রেনকে দূরপাল্লার পশ্চিমা ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে রাশিয়ার গভীরে হামলা চালাতে সহায়তা করলে কীভাবে জবাব দেওয়া হবে তা নিয়ে কাজ করছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। রবিবার (২৭ অক্টোবর) রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স্ এ খবর জানিয়েছে।

ইউক্রেনে দুই বছরের বেশি সময় চলমান যুদ্ধটি শীতল যুদ্ধের পর পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার সবচেয়ে বড় সংঘাত সৃষ্টি করেছে। রুশ কর্মকর্তারা বলছেন, যুদ্ধ এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে।

রাশিয়া কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির মিত্রদের সতর্ক করে আসছে। তারা যদি ইউক্রেনকে রুশ ভূখণ্ডে গভীর আঘাত হানার অনুমতি দেয়, তাহলে মস্কো এটিকে বড় ধরনের উত্তেজনা বৃদ্ধির পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করবে। গত ১২ সেপ্টেম্বর পুতিন বলেছিলেন, এ ধরনের পদক্ষেপ পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সরাসরি যুদ্ধে জড়িত হওয়ার সমান। কারণ, ক্ষেপণাস্ত্র লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানোর জন্য ন্যাটোর সামরিক অবকাঠামো এবং কর্মীরা অংশ নেবে।

পুতিন বলেছেন, ইউক্রেনের সম্ভাব্য দূরপাল্লার হামলার জবাবে রাশিয়া কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে বিভিন্ন প্রতিরক্ষা বিকল্প নিয়ে ভাবা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে ইউক্রেনকে রুশ ভূখণ্ডে হামলার অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত জানায়নি। তবে কিছু মার্কিন কর্মকর্তা মনে করছেন, এ ধরনের পদক্ষেপ যুদ্ধের ফলাফল উল্লেখযোগ্যভাবে বদলাবে না। ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী ইতোমধ্যে দূরপাল্লার ড্রোন ব্যবহার করে রাশিয়ার গভীরে হামলা চালিয়ে আসছে।

এদিকে, রুশ বাহিনী ইউক্রেনের ডনেস্ক অঞ্চলের সেলিদোভে শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে রুশপন্থি সামরিক ব্লগাররা দাবি করেছেন। রুশ বাহিনী শহরটি আক্রমণ করার এক সপ্তাহ পর এ নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা হলো।

পুতিন ইউক্রেনে চলমান যুদ্ধকে রাশিয়া ও পশ্চিমাদের মধ্যকার লড়াই হিসেবে উল্লেখ করে আসছেন। তিনি দাবি করেছেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর থেকে পশ্চিমারা রাশিয়ার স্বার্থ উপেক্ষা করেছে। অপরদিকে, ইউক্রেন ও দেশটির পশ্চিমা মিত্ররা পুতিনের যুদ্ধকে একটি সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন বলে উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে, রাশিয়া যদি এই যুদ্ধে জয়লাভ করে, তাহলে বিশ্বব্যাপী একনায়কতান্ত্রিক দেশগুলো আরও সাহসী হয়ে উঠবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে পুতিন রাশিয়ার পারমাণবিক নীতি পরিবর্তন করেছেন। ক্রেমলিনের মতে পশ্চিমা বিশ্বে ইউক্রেন থেকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আলোচনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের চেষ্টা।

সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের উত্তরে পুতিন বলেন, আমি আশা করি, তারা আমাদের সতর্কবাণীশুনেছে। কারণ, অবশ্যই আমাদের নিজেদের জন্যও কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, শুধু ন্যাটো কর্মকর্তারাই রাশিয়ার ভেতরে এ ধরনের অস্ত্র ব্যবহার করতে পারবে এবং এর জন্য তাদের পশ্চিমা উপগ্রহ ডেটা ব্যবহার করতে হবে। তাই মূল প্রশ্ন হলো, তারা রাশিয়ার গভীরে আঘাত করার সাহস দেখাবে কি না।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতকে আরও বাড়াতে চায় না। তবে নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট কীভাবে যুদ্ধের প্রতি প্রতিক্রিয়া দেখাবেন তা এখনও অনিশ্চিত। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাবেন। অন্যদিকে ডেমোক্র্যাটিক ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস জানিয়েছেন, তিনি ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবেন।

মাহাতাব

×