ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

অন্যায় আদেশ না মানার পরামর্শ জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সাবেক উপ-প্রধানের

ইসরাইলি বাহিনীতে বিদ্রোহের ইঙ্গিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:০৯, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

ইসরাইলি বাহিনীতে বিদ্রোহের ইঙ্গিত

ইসরাইলি বাহিনীতে বিদ্রোহের ইঙ্গিত

উত্তর গাজায় ইসরাইলের সেনারা সম্ভবত এমনকিছু করছে যা যুদ্ধাপরাধের আওতাভুক্ত হতে পারে। ইসরাইলি সামরিক কর্মকর্তা ও সৈনিকদের উচিত যুদ্ধক্ষেত্রে অপরাধ বলে বিবেচিত হতে পারে এমন কোনো ঊর্ধ্বতন আদেশ মানতে অস্বীকার করা। এমনটাই মনে করছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের সাবেক উপ-প্রধান এরান ইতজিওন। তিনি চারজন ইসারাইলি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করেছেন। এমনকি নিজেও একজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনীতে কাজ করেছেন। খবর বিবিসি অনলাইনের। 
এক সাক্ষাৎকারে ইতজিওন জানান, যদি কোনো সৈনিক অথবা একজন কর্মকর্তা মনে করেন কোনো আদেশ পালনের কারণে এমন কোনো ঘটনা ঘটতে পারে যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে তাহলে তাদের উচিত তা মানতে অস্বীকার করা। এ সময় তিনি দায়িত্বে থাকলেও আদেশ অমান্য করতেন বলে জানান সাবেক এ সেনা কর্মকর্তা। তাই যে কোনো ইসরাইলি সেনারই উচিত এমনটা করা। ইতজিওন মনে করেন, যে কোনো মূল্যবোধের বিপজ্জনক ক্ষয় আছে। এমনকি যে কোনো রাগের বিস্তৃতি প্রতিশোধ নেওয়ার স্পৃহাও রয়েছে।

যার কারণে তিনি ফিলিস্তিন ও ইসরাইলের জনগণের জন্য বেশ চিন্তিত। তিনি মনে করেন গতবছরের ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরাইলিরা একটি ট্রমার ভেতর আছে। ফলে ইসরাইলের প্রতিশোধের নেশা অনুধাবন করা যায়। সাবেক এ ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা মনে করেন, এখানে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। ইসরাইলি বাহিনী কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ বা সশস্ত্র সংগঠন নয়। তারা একটি সার্বভৌম দেশের বাহিনী।

তাদের একটি ইতিহাস আছে, নীতি ও মূল্যবোধ আছে। ইসরাইলি বাহিনীর উচিত আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক মানদ- অনুসরণ করে অভিযান পরিচালনা করা। কারণ ইসরাইল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশ হিসেবে তার অস্তিত্ব বজায় রাখতে চায়।    
ইতজিওনের সন্তানরা এখন ইসরাইলি সেনাবাহিনীতে কাজ করছে এমনকি তার বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরা এখনো এই সেনাবাহিনীতে আছে। তিনি জানান, একজন উদ্বিগ্ন নাগরিক হিসেবে তিনি শুধু তার কথা বলতে চান। তিনি চান তার দেশের সেনারা যাতে কোনো প্রকার যুদ্ধাপরাধে জড়িয়ে না পড়ে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিশেষ বার্তা নিয়ে ইসরাইলে হাজির হয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি সংকটের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলাপ করেন তিনি।

এছাড়া গাজার উত্তরাঞ্চলে মানবিক সহায়তা প্রদান এবং ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য জোট গঠন নিয়েও আলোচনা করেন উভয় নেতা। তবে ব্লিনকেনের কথায় পাত্তা দেননি নেতানিয়াহু। ব্যক্তিগত মিটিংয়ে উত্তরাঞ্চলীয় গাজাকে বিচ্ছিন্ন করবেন না বলে ব্লিনকেনকে আশ্বস্ত করেন তিনি। 
তবে সে কথা প্রকাশ্যে ঘোষণা করতে রাজি হননি তিনি। উভয় নেতাই স্বীকার করেন, হামাসের নেতা ইয়াহহিয়া সিনওয়ারের হত্যাকা- জিম্মিদের মুক্তির রাস্তা খুলে দিয়েছে। তবে এ নিয়ে অচলাবস্থা রয়েই গেছে।যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর মিলে কয়েক মাস ধরে একটি যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে আলোচনা চালিয়ে আসছে। তবে ইসরাইল বা হামাস কেউই তাদের অবস্থান থেকে নমনীয়তা দেখাচ্ছে না। বিশেষ করে, হামাস কোনো কোনো ইস্যুতে রাজি হলেও, তাতে বেঁকে বসে ইসরাইল।

×