ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১

গাজার রণাঙ্গনে চাপে ইসরাইল

হামাসের ফাঁদে নিহত ইসরাইলের শীর্ষ কমান্ডার

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২২:৪০, ২১ অক্টোবর ২০২৪

হামাসের ফাঁদে নিহত ইসরাইলের শীর্ষ কমান্ডার

.

গাজায় হামাসের পেতে রাখা বোমায় ইসরাইলের এক শীর্ষ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। এহসান দাকসা নামে ৪১ বছর বয়সী এই কমান্ডার ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফ এর একজন চৌকস অফিসার ছিলেন। তার মৃত্যুতে গাজার রণাঙ্গনে ইসরাইলি বাহিনী প্রচন্ড চাপে পড়তে পারে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে। এহসান দাকসা ইসরাইলের ৪০১তম আর্মার্ড ব্রিগেডের কমান্ডার হিসেবে উত্তর গাজায় কর্মরত ছিলেন। রবিবার আইডিএফ এই মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে। সোমবার টাইমস অব ইসরাইল জানায়, দেশটির দালিয়াত আল-কারমেল শহরের বাসিন্দা দাকসা গাজা যুদ্ধে নিহত ইসরাইলি সেনাদের মধ্যে সবচেয়ে সিনিয়র। উপত্যকায় এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে মোট ছয়জন আইডিএফ কর্নেল নিহত হলেন। খবর বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের।  
আইডিএফের তদন্তে জানা গেছে, প্রাণ হারানোর আগে জাবালিয়া অঞ্চলে দাকসা ও কয়েকজন কর্মকর্তা একটি ট্যাঙ্কের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন দাকসা। এ সময় তিনি ৫২তম ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ও অপর দুই কর্মকর্তা ট্যাঙ্ক থেকে বের হয়ে কয়েক মিটার হেঁটে একটি পর্যবেক্ষণ চৌকির কাছে যান। চৌকির আশপাশের জায়গাটিতে বোমার ফাঁদ পেতে রাখা ছিল। সেই বোমা বিস্ফোরণে দাকসা ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তার সঙ্গে থাকা ৫২তম ব্যাটালিয়নের কমান্ডার এবং অপর দুই কর্মকর্তা গুরুতর আহত হন। তবে ওই দুই কর্মকর্তার আঘাত গুরুতর নয়। গত জুন মাসে ৪০১তম ব্রিগেডের দায়িত্ব নেন দাকসা। এই সেনা কর্মকর্তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজগ। সোমবার তিনি বলেন, এহসান দাকসার মৃত্যু ইসরাইলিদের জন্য বিশাল ক্ষতি। আমরা ইসরাইলের দ্রুজ সমাজ ও এহসান দাকসার পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি।
দাকসার স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন কর্নেল মেইর বাইডারম্যান। তিনি ১৬২তম ডিভিশনের উপপ্রধান ছিলেন। আপাতত ৪০১তম ব্রিগেডের অস্থায়ী কমান্ডার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করবেন। দাকসার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ইসরাইলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ত। তিনি তাকে সাহসী কমান্ডার ও দেশের নিরাপত্তায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা একজন সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে অভিহিত করেন। এ মাসের শুরুতে নতুন করে জাবালিয়ায় স্থল অভিযান শুরু করে আইডিএফ। তাদের দাবি, সেখানে এখনো হামাস কর্মী ও অবকাঠামো টিকে রয়েছে। এমনকী, সেখানে নতুন করে পুনর্গঠিত হচ্ছে হামাস, এমন দাবিও করেছে আইডিএফ। এদিকে গাজায় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। সোমবার উপত্যকার একাধিক স্থানে হামলা চালায় আইডিএফ। এতে অন্তত ৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪২ হাজার ৬০০ ছাড়িয়ে গেছে।

এ ছাড়া গত বছরের অক্টোবর থেকে চলা এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও এক লাখ ফিলিস্তিনি। উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরাইল গাজায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এসব হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। মূলত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় গাজা। জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।

 

×