ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ২ কার্তিক ১৪৩১

১৯৭১-এর পরে অসমে আসা বাংলাদেশিদের নয় নাগরিকত্ব

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ১৭ অক্টোবর ২০২৪

১৯৭১-এর পরে অসমে আসা বাংলাদেশিদের নয় নাগরিকত্ব

অসমে আসা বাংলাদেশিদের নয় নাগরিকত্ব

ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনের - ধারার সাংবিধানিক বৈধতা মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সংবিধান বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দিয়েছে। তবে ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই রায় হয়নি। প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি সূর্য কান্ত, বিচারপতি এমএম সুন্দ্রেশ এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্র রায়ের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন। - ধারাকেঅসাংবিধানিকবলেছেন বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা

অসমে অবৈধ অভিবাসন সংক্রান্ত ওই ধারাঅসাংবিধানিকবলে দাবি করে শীর্ষ আদালতে মোট ১৭টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেগুলি একত্র করে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সংবিধান বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরের গোড়ায়। বৃহস্পতিবার তার রায় ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘‘অসম চুক্তি মেনে অবৈধ অভিবাসনের সমস্যার এটি একটি রাজনৈতিক সমাধান।’’

আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ ছিল, ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইনের - ধারা ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদকে লঙ্ঘন করছে। ওই ধারা অনুযায়ী, অসমেঅবৈধ অনুপ্রবেশকারীহিসাবে চিহ্নিত ব্যক্তিকেই প্রমাণ করতে হয় তিনি ভারতীয় নাগরিক। কিন্তু ভারতীয় সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের সাম্যের অধিকার রয়েছে। যে কেউ, তিনি দেশি, বিদেশি এমনকি অনাগরিক হয়েও যদি ভারতে বাস করেন, তিনিও সংবিধানে বর্ণিত ওই সাম্যের অধিকার ভোগ করবেন। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, শরণনার্থীদের আশ্রয়ের প্রসঙ্গ নয়, ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়টির সাংবিধানিক বৈধতা বিচার করা হয়েছে

প্রসঙ্গত, কেবল মাত্র অসম রাজ্যের জন্যই নাগরিকত্ব আইনের - ধারাটি তৈরি করা হয়েছিল। অসমে অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের পরে ১৯৮৫-তে ভারত সরকার এবং আন্দোলনকারীদের মধ্যে হওয়াঅসম চুক্তি’- অঙ্গ হিসাবে নাগরিকত্ব আইনের - ধারা তৈরি করা হয়েছিল। ওই ধারা অনুযায়ী ১৯৬৬- জানুয়ারি থেকে ১৯৭১-এর ২৫ মার্চ পর্যন্ত অসমে অনুপ্রবেশ করা বাংলাদেশিদের নাগরিকত্বের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার পরে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে চলে আসা ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না

ক্ষেত্রে কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, পূর্ব পাকিস্তান স্বাধীন বাংলাদেশে রূপান্তরিত হওয়ার পরে ৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে ঘোষণা করেছিলেন, ১৯৭১-এর পরে দেশ ছেড়ে যাওয়া সবাইকে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। সেই জন্যই ৬এ ধারায় ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্য ১৯৭১-এর ২৫ মার্চকে বেছে নেওয়া হয়, কারণ, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ২৬ মার্চ। কিন্তু এই মামলার আবেদনকারীদের বক্তব্য— ‘অসম চুক্তি’-কে ২৫৩ ধারার অধীনে বৈধতা দেওয়ার জন্য কোনও পদক্ষেপ করেনি সংসদ। সুতরাং অসম চুক্তিরই বৈধতা নেই। কিন্তু শীর্ষ আদালত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের আবেদন মেনে১৯৭১-এর ২৫ মার্চ’-কে সময়সীমা ধার্য করার ব্যবস্থাতেই সায় দিয়েছে। 

আনন্দবাজার অনলাইন

×