ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১০ অক্টোবর ২০২৪, ২৫ আশ্বিন ১৪৩১

জাতিসংঘ মহাসচিবের সতর্কবার্তা

লেবানন সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:৩৪, ৯ অক্টোবর ২০২৪

লেবানন সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে

আন্তোনিও গুতেরেস

পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলের দেশ লেবানন এই মুহূর্তে সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে সতর্কবার্তা দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। তিনি বলেছেন, এখনো এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ সম্ভব। বুধবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে এক ব্রিফিংয়ে আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, আমি গত কয়েক মাস ধরে বলছি যে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ছে এবং দিন যত যাচ্ছে পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। লেবানন এই মুহূর্তে সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। সেখানে সংঘাত ঘনীভূতও হচ্ছে। কিন্তু এখনো সম্ভাব্য যুদ্ধ থামানোর মতো সুযোগ রয়েছে। যদি আমরা সব দেশের সার্বভৌমত্ব এবং ভৌগলিক অখ-তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকি তাহলে এখনো এই পরিস্থিতির উত্তরণ সম্ভব। খবর বিবিসির। 
ব্রিফিংয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ২০ সেপ্টেম্বর ইসরাইলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত লেবাননে প্রাণ হারিয়েছেন ২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ১ হাজার ৫ শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে স্থল বাহিনী হামলা শুরুর পর থেকে। এই নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বেসামরিক লোকজন, নারী ও শিশু। এদিকে লেবাননও ফিলিস্তিনের গাজার মতো ধ্বংসের মুখোমুখি হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

সে সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর সদ্য প্রয়াত নেতা হাসান নাসরাল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরি এবং তারও উত্তরসূরিকে ইসরাইল হত্যা করেছে বলে দাবি করেন তিনি। বুধবার লেবাননের বাসিন্দাদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় এ হুঁশিয়ারি দেন নেতানিয়াহু। এতে তিনি দাবি করেন, হিজবুল্লাহ বহু বছর ধরে যেমন দুর্বল ছিল, এখন তার চেয়েও বেশি। নেতানিয়াহু গাজার কথা উল্লেখ করে বলেন, লেবাননকে একটি দীর্ঘ যুদ্ধের অতল গহ্বরে পতিত হওয়ার আগে এবং গাজার মতো ধ্বংস ও দুর্ভোগের মুখোমুখি হওয়ার আগে আপনাদের কাছে একে বাঁচানোর সুযোগ আছে। আমি লেবাননবাসীর উদ্দেশে বলছি, আপনাদের দেশ হিজবুল্লাহমুক্ত করুন, যাতে করে এ যুদ্ধ শেষ হয়।

ইসরাইলের সঙ্গে লেবাননের দ্বন্দ্ব মূলত সশস্ত্র ইসলামী গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে ঘিরে। ইরানের সমর্থন ও মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ লেবাননভিত্তিক হলেও লেবাননের মূল ক্ষমতা কাঠামোতে সরাসরি কোনো অংশগ্রহণ নেই গোষ্ঠীটির। বরং ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে হিজবুল্লাহ ইসরাইলকে ধ্বংসের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এমনিতে বিগত দশকগুলোতে ইসরাইলকে লক্ষ্য করে বিচ্ছিন্নভাবে হামলা পরিচালনা করলেও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের অতর্কিত হামলা এবং তার জবাব হিসেবে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর হামলা শুরুর পর থেকে সংঘাত বেড়েছে।

গাজায় ইসরাইলি হামলা শুরু হওয়ার পর হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে সীমান্তের অপর প্রান্তে উত্তর ইসরাইলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো শুরু করে হিজবুল্লাহ। পাল্টা জবাব দিতে শুরু করে ইসরাইলও। উভয় পক্ষের এই রকেট-ক্ষেপণাস্ত্র বিনিময়ের জেরে গত এক বছরে প্রাণ হারিয়েছেন কয়েক হাজার মানুষ। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননে হামলা শুরু করে ইসরাইলের বিমানবাহিনী। প্রায় ১০ দিনের সেই হামলায় নিহত হয়েছেন হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরাল্লাহসহ কয়েকজন শীর্ষ কমান্ডার।

×