ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৭ আশ্বিন ১৪৩১

মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রতিবেদন

ইরানের কাছে তিন হাজারের বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২৩, ২ অক্টোবর ২০২৪

ইরানের কাছে তিন হাজারের বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র 

ইরানের খাইবার ক্ষেপণাস্ত্র

মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরানের কাছে তিন হাজারের বেশি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগই উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার প্রযুক্তি থেকে অনুকরণ করা ডিজাইনের ওপর নির্ভরশীল। খবর টিআরটি ওয়ার্ল্ডের। সলিড ফুয়েজে চালিত সাজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র প্রায় ৭০০ কেজি ওজনের বিস্ফোরক বহন করতে সক্ষম এবং এটি ইরান থেকে আড়াই হাজার কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। তেহরান থেকে ইসরাইলের তেল আবিবের দূরত্ব প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার।

আরেকটি শক্তিশালী ক্ষেপণাস্ত্র হলো খাইবার। এটি এক হাজার ২৪০ মাইল দূরে দুই হাজার কেজি ওজনের বিস্ফোরক নিয়ে আঘাত হানতে পারে। শাহাব সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইরানের শত্রুদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ব্যবহৃত হয়। শাহাব-৩ প্রায় ৯০০ কিলোমিটার দূরত্ব পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। যদিও এটি সাধারণত শত্রুর নগর এলাকায় ভীতি সঞ্চার করতে ব্যবহৃত হয়। এর ধ্বংসাত্মক ক্ষমতা সাজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্রের চেয়ে কম। সাজ্জিল ও এর আরেকটি সংস্করণ কিয়াম ক্ষেপণাস্ত্রগুলো দ্রুত মোতায়েন করা যায় এবং ছোট যানবাহনের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে সরানো সম্ভব।

গত দুই দশকে ইরান তাদের গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য উন্নতি করেছে। ফাতেহ-১১০ সিরিজের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বিশেষভাবে সামরিক স্থাপনা লক্ষ্যবস্তু করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। যেমন ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে ইরানের হামলায় এর প্রমাণ দেখা গেছে। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ইরান ইরাকের এরবিল অঞ্চলে ইসরাইলি গোপন ঘাঁটিতে হামলা চালায়। যদিও যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সঠিকভাবে আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়েছিল। তেলআবিব বর্তমানে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলকে সহযোগিতা করছে এবং ইরান থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগে এপ্রিল মাসে ইরানের আরেকটি হামলার সময় যুক্তরাষ্ট্র জানায়, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র সফলভাবে প্রতিহত করা হয়েছিল। ইসরাইলে প্রায় ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে ইরান। মঙ্গলবার ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র বৃষ্টিতে ইসরাইলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল।

লাখো মানুষকে ছুটতে হয়েছিল আশ্রয়কেন্দ্রে। বাংকারে বৈঠক করেছে ইসরাইলি মন্ত্রিসভা। তেহরান দাবি করেছে, তাদের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের ৯০ শতাংশ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনেছে। তবে ইসরাইল বলেছে, বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করা হয়েছে। কেউ হতাহত হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষমতা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সামরিক শক্তি পর্যবেক্ষণ ওয়েবসাইট গ্লোবাল ফায়ারপাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলের চেয়ে সামরিক শক্তিতে কিছুটা এগিয়ে ইরান। ফায়ার পাওয়ার সূচকে ১৪৫টি দেশের মধ্যে ইরানের অবস্থান ১৪তম আর ইসরাইলের অবস্থান ১৭তম।

×