ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১

আমাকে দমিয়ে রাখা যাবে না- হত্যাচেষ্টা থেকে রক্ষার পর ট্রাম্প

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আমাকে দমিয়ে রাখা যাবে না- হত্যাচেষ্টা থেকে রক্ষার পর ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প

যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ফের হত্যার চেষ্টা করা  হয়েছে। তবে এবারও তিনি রক্ষা পেয়েছেন। সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিক্রেট সার্ভিস আততায়ীর হামলার এই পরিকল্পনা ব্যর্থ করে দেয়। রবিবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে ফ্লোরিডার ওয়েস্ট পাম বিচে ট্রাম্প যখন নিজের গলফ কোর্সে খেলছিলেন, তখনই হামলার চেষ্টা চলে।

মার্কিন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা জানান, ট্রাম্প যেখানে গলফ খেলছিলেন সেখান থেকে কয়েকশ’ গজ দূরে গলফ কোর্সের সীমানায় ঝোপঝাড়ের মধ্যে এক বন্দুকধারীকে দেখতে পেয়ে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা, কিন্তু সন্দেহভাজন পালিয়ে যায়। সেই ঝোপের মধ্যে যেখানে ওই আততায়ী আত্মগোপন করেছিল সেখানে একটি একে-৪৭ অ্যাসল্ট রাইফেল ও অন্যান্য সরঞ্জাম পাওয়া যায়।

সন্দেহভাজন একটি গাড়িতে করে পালিয়ে গেলেও পরে তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়। এফবিআই প্রাথমিকভাবে এ ঘটনাটিকে ‘একটি হত্যা চেষ্টা’ বলে অভিহিত করে। পাম বিচ কাউন্টি শেরিফ রিক ব্র্র্র্যাডশো জানান, ট্রাম্প খেলা শুরু করার আগে গলফের হোলগুলোকে সম্ভাব্য হুমকি মুক্ত করছিলেন সিক্রেট সার্ভিসের এজেন্টরা। তখন তারা দেখেন, ট্রাম্প যেখানে আছেন সেখান থেকে প্রায় ৪০০-৫০০ গজ দূরে ঝোপের ভেতর থেকে রাইফেলের একটি বাঁট বের হচ্ছে।

তখনই এজেন্টরা অন্তত চার রাউন্ড গুলি  ছোড়ে বন্দুকধারীকে ঠেকিয়ে দেয়। এজেন্টদের গুলির মুখে বন্দুকধারী তার রাইফেল ফেলে দিয়ে দৌড়ে গিয়ে একটি কালো নিশান গাড়িতে চেপে পালিয়ে যায়। সে যেখানে অবস্থান নিয়েছিল সেখানে দুটি ব্যাগপ্যাক ও অন্যান্য জিনিস ফেলে যায়।

শেরিফ জানান, এক প্রত্যক্ষদর্শী বন্দুকধারীকে দেখতে পেয়ে সে চলে যাওয়ার আগেই তার গাড়ি ও গাড়ির নম্বর প্লেটের ছবি তুলে রাখতে সক্ষম হন। এই হত্যা চেষ্টার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, আমি ভালো আছি। তবে এসব করে আমাকে দমিয়ে রাখা যাবে না। আমি সিদ্ধান্তে অটল থাকতে চাই। খবর সিএনএন, ফক্স নিউজ, নিউইয়র্ক টাইমস ও বিবিসি অনলাইনের। 
ওই সন্দেহভাজন হাওয়াইয়ের বাসিন্দা। তার নাম রায়ান ওয়েসলি রুথ (৫৮)। তবে এফবিআই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।  কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। রুথের নামে বহন করা সামাজিক অ্যাকাউন্ট থেকে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে, তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে ইউক্রেনের কট্টর সমর্থক। তিনি ইউক্রেন যুদ্ধে সহায়তা করতে সেনা সংগ্রহ করে সাহায্য করার চেষ্টা করেছেন।

উল্লেখ্য, মাত্র দুই মাস আগে পেনসিলভানিয়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় ট্রাম্প তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ছোড়া গুলিতে আহত হয়েছিলেন, তখন গুলি তার ডান কান চিরে বেরিয়ে গিয়েছিল।
মাত্র সাত সপ্তাহের একটু বেশি সময় পর আগামী ৫ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। তার আগে এই ঘটনায় দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়া ও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ প্রচার পরিস্থিতিতে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর নিরাপত্তা বজায় রাখার চ্যালেঞ্জ সামনে এলো। ওই সময়টিতে ট্রাম্প যে গলফ খেলছেন, সন্দেহভাজন তা কীভাবে জানল তা পরিষ্কার হয়নি। কিন্তু এই ঘটনায় নিশ্চিতভাবেই এ প্রশ্ন উঠবে যে ট্রাম্পকে কোন স্তরের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী  কমলা হ্যারিসের সঙ্গে ট্রাম্পের বিতর্কের পর রিপাবলিকান শিবিরে হতাশার কালো মেঘ জড়ো হচ্ছে। প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তায় ধস নামছে। সোমবার প্রকাশিত এক জরিপের ফলে বলা হচ্ছে, কমলা হ্যারিস পেয়েছেন ৫২ শতাংশ ভোট। সেখানে ট্রাম্প পেয়েছেন ৪৬ শতাংশ। মানে কমলার তুলনায় ছয় শতাংশ ভোটে পিছিয়ে রয়েছে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।  ১০ ডিসেম্বর এবিসি টেলিভিশনের বিতর্কে ট্রাম্পকে একরকম নাস্তানাবুদ করে ছাড়েন কমলা।

দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর  পারফরম্যান্সকে ‘দুর্বল’ উল্লেখ করে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেছেন, সুযোগ হাতছাড়া হয়ে গেলো। তিনি লক্ষ্যে স্থির থাকতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে মঞ্চে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ হারিয়েছেন। ওই বিতর্ক অনুষ্ঠানের পর এবিসি নিউজ থেকে অনলাইনে জনমত জরিপ চালানো হয়। ১১ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর চলে এই জরিপ। আর  সেই ফলাফল সামনে আসতেই রিপাবলিকানরা চমকে উঠেছেন।

জরিপে অংশ নেওয়াদের ৫২ শতাংশ কমলাকে আর ৪৬ শতাংশ ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছে। তবে দুই শতাংশ ভোটার এদের কাউকেই ভোট দেননি। মানে তারা এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। আবার ভোটারদের মধ্যে যারা সরাসরি কোনো দলেরই নন, তাদেরও বেশিভাগই কমলাকেই সমর্থন করছেন। এই ধরনের ভোটারদের কাছে তিনি পেয়েছেন ৫৩ শতাংশ ভোট। অপরদিকে এই নিরপেক্ষ ভোটারদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা কম, তিনি পেয়েছেন মাত্র ৪৪ শতাংশ।

আর স্বাভাবিকভাবেই নারীরা বেশিরভাগই ঝুঁকছেন কমলা হ্যারিসের দিকে। ৫৫ শতাংশ নারীই সমর্থন দিচ্ছেন তাকে। সেখানে নারীদের কাছ থেকে ট্রাম্প পাচ্ছেন মাত্র ৪৪ শতাংশ ভোট। তবে মজার বিষয় হচ্ছে, পুরুষ ভোটারদের ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী দুজনই পেয়েছেন ৪৯ শতাংশ করে। কমবয়সী ভোটারদের মধ্যে কমলা হ্যারিসের জনপ্রিয়তা বেশি। ত্রিশের নিচে বয়সীদের ৫৯ শতাংশ হ্যারিসকে ভোট দেবেন বলে জানিয়েছেন।

অন্যদিকে এই ভোটারদের ৪০ শতাংশ ট্রাম্পকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন। কমবয়সী নারী ভোটারদের মধ্যে কমলা ও ট্রাম্পের ব্যবধান আরও বেশি। ত্রিশের নিচে ৬৮ শতাংশ নারী কমলাকে বেছে নিয়েছেন। আর সেখানে ট্রাম্প পেয়েছেন মাত্র ৩০ শতাংশ ভোট। এই ভোটারদের চেয়ে ট্রাম্প পিছিয়ে পড়েছেন ৩৮ শতাংশ ভোটে। ত্রিশের নিচে পুরুষ ভোটারদের মধ্যে কমলার জনপ্রিয়তা বেশি হলেও এ ক্ষেত্রে ভোটের ফারাক অনেক কম। এই প্রজন্মের ৫১ শতাংশ ভোটার কমলাকে এবং ৪৮ শতাংশ ট্রাম্পকে ভোট দিয়েছেন।  

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের মাটি থেকে ফের অভিবাসী তাড়ানোর অঙ্গীকার করে সমালোচনার জন্ম দেন ট্রাম্প। শুক্রবার লস অ্যাঞ্জেলেসের কাছে অবস্থিত নিজস্ব মালিকানার এক অবকাশকেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। ট্রাম্প বলেন, আমি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে হাইতির অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্র থেকে তাড়িয়েই ছাড়ব। উল্লেখ্য, প্রথমদফা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ও অভিবাসী তাড়ানোর কথা বলেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট। 
ট্রাম্প বলেন, ওহাইও অঙ্গরাজ্যের স্প্রিংফিল্ড শহরের সব অবৈধ অভিবাসীকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হবে। কোনো তথ্য-প্রমাণ ছাড়াই মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত নির্বাচনী বিতর্কে হাইতির অভিবাসীদের বিষয়ে এক অদ্ভুত অভিযোগ তোলেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, স্প্রিংফিল্ড শহরের অভিবাসীরা স্থানীয়দের পোষা প্রাণীদের ধরে খেয়ে ফেলছে। স্প্রিংফিল্ডে প্রায় ১৫ হাজার হাইতি থেকে আসা অভিবাসী রয়েছেন, যাদের অধিকাংশই বৈধ পন্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এসেছেন।

এতদিন ট্রাম্প সাধারণত অবৈধ অভিবাসীদের তাড়ানোর হুমকি দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এবার ‘কুকুর-বেড়াল খেয়ে ফেলছে’ অভিযোগ নিয়ে তিনি সব অভিবাসীর ওপর চড়াও হলেন। তার এমন ‘খোঁড়া’ যুক্তি নিয়ে দেশজুড়ে উপহাস চললেও স্প্রিংফিল্ডের অভিবাসীরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এক অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির দুইদিন ধরে টানা বোমা হামলার হুমকিতে শহরের মোট তিনটি স্কুল শুক্রবার বন্ধ ঘোষণা করা হয়, যেখানে হাইতিয়ান অভিবাসীদের সন্তানরা পড়াশোনা করে।

তবে কমলা হ্যারিস বলেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে তিনি নির্দিষ্ট ফেডারেল চাকরিতে কলেজ ডিগ্রির (স্নাতক) বাধ্যবাধকতা তুলে দেবেন। তার মতে ডিগ্রি দিয়ে মানুষের দক্ষতা মাপা যায় না। শুক্রবার পেনসিলভানিয়ায় দেওয়া এক বক্তব্যে কমলা হ্যারিস এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন,  প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে আমি কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরিতে ডিগ্রির বাধ্যবাধকতা-সংক্রান্ত এই অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বাদ দেব।

যেসব মানুষের চার বছরের ডিগ্রি নেই, তাদের জন্য কাজের সুযোগ বাড়াতে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অভিবাসীদের প্রতি ট্রাম্পের এমন বিদ্বেষমূলক আচরণে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, যা-ই হচ্ছে, মারাত্মক ভুল হচ্ছে। আমেরিকায় এসবের স্থান নেই। তিনি (ট্রাম্প) যা করছেন, তা থামাতে হবে। অবশ্যই থামাতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত হাইতি সম্প্রদায়ের নেতারা বলেন, রিপাবলিকান প্রার্থীর এমন মন্তব্যের কারণে তাদের নিরাপত্তা ক্ষুণœ হতে পারে।

বিশেষত স্প্রিংফিল্ডের পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হয়ে উঠতে পারে। এ বিষয়ে শহরটির মেয়র রব রুয়ে বলেন, আমাদের বিদ্বেষ নয়, সহমর্মিতা দরকার। শহরে পোষা প্রাণী খেয়ে ফেলার মতো ঘটনার বিশ্বাসযোগ্য কোনো অভিযোগ তারা এখনো পাননি বলে জানিয়েছেন স্প্রিংফিল্ড নগর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র ক্যারেন গ্রেভস। অভিবাসীদের লক্ষ্য করে কোনো বিদ্বেষমূলক অপরাধ সংঘটনের বিষয়েও তিনি অবগত নন বলেও জানান।

২০২৩ সালের শুরুর দিকে ইউএস সেন্সাস ব্যুরো প্রকাশিত জরিপে দেখা গেছে, ২৫ বছর বা তার বেশি বয়সী মার্কিন নাগরিকদের মধ্যে ৬২ শতাংশের বেশি মানুষের স্নাতক ডিগ্রি নেই। ২০২০ সালে ভোটারদের প্রতি পাঁচজনের মধ্যে তিনজনেরই কলেজ ডিগ্রি ছিল না। বেসরকারি খাতগুলোকেও একই রকম পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাবেন বলে উল্লেখ করেন কমলা। কমলা বলেছেন, ডিগ্রি থাকা মানেই ওই ব্যক্তি দক্ষ, এমনটা নয়।

কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প দুজনই বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোটারদের কাছে টানার চেষ্টা করছেন। কমলা বলেছেন, তিনি মধ্যবিত্তদের জন্য কর কমাতে চান। আর ট্রাম্প বলছেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে ওভারটাইম ফির (নির্দিষ্ট সময় শেষে অতিরিক্ত সময়ের কাজের জন্য ভাতা) ওপর কর কমাবেন। তারা দুজনই বকশিশ হিসেবে পাওয়া অর্থের ওপর থেকে কর বাদ দেবেন। কমলা পেনসিলভানিয়ার উইলকস ব্যারেতে বক্তব্য দেওয়ার সময় গাজায় ইসরাইলের হামলায় মার্কিন সহায়তার বিরোধিতাকারীরা হট্টগোল করে।

গাজায় যুদ্ধ বন্ধ এবং ইসরাইলকে অস্ত্রের চালান দেওয়ার ওপর কড়াকড়ি আরোপের দাবিতে কয়েক মাস ধরেই যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ হচ্ছে। ওই বক্তব্যে আবারও গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তি চুক্তির বিষয়ে নিজের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন কমলা। তিনি বলেন, জিম্মি মুক্তি চুক্তি এবং যুদ্ধবিরতির সময় হয়েছে। এ সময় বিক্ষোভকারীরা হট্টগোল শুরু করলে কমলা তাদের থামিয়ে দিয়ে বলেন, আমি আপনাদের কণ্ঠস্বরকে শ্রদ্ধা করি। তবে এ মুহূর্তে আমি কথা বলছি। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে কমলা ও ট্রাম্পের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলছে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, মুসলিম এবং আরব আমেরিকান ভোটাররা যদি এবার কমলাকে ভোট না দেন তবে তা তার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেবে। গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুসলিম এবং আরব আমেরিকানরা ব্যাপকভাবে ডেমোক্রেটিক পার্টিকে ভোট দিয়েছিল। আসন্ন নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ট্রাম্পকে সমর্থন দেবেন পঞ্চাশ বছরের কম বয়সী প্রতি চারজনের একজন কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ; সম্প্রতি এনএএসিপির এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে ডেমোক্র্যাটদের সবচেয়ে অনুগত ভোটার কৃষ্ণাঙ্গরা।

তবে ডেমোক্রেটিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রেসিডেন্সির মেয়াদকালে কিছু অল্পবয়সী কৃষ্ণাঙ্গ ও সব বয়সী পুরুষ কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার ক্ষমতাসীন দলটির প্রতি আস্থা হারিয়েছেন। ২০২০ সালে বাইডেনের হোয়াইট হাউজ জয়ের  পেছনে কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের বেশ বড় একটা ভূমিকা ছিল। সেই পথ ধরেই ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস কৃষ্ণাঙ্গদের সমর্থন সুরক্ষিত করতে চেয়েছিলেন। ৬ আগস্ট থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে এক হাজার নিবন্ধিত কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারের সাক্ষাৎকার নেওয়া এনএএসিপির জরিপে দেখা যায়, ৬৩ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ ভোটার হ্যারিসকে সমর্থন করার পরিকল্পনা করছেন আর ট্রাম্পকে ১৩ শতাংশ।

তবে ৫০ বছরের কম বয়সী ২৬ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ জানিয়েছেন, তারা ট্রাম্পকে সমর্থন করবেন। এ বয়সী ৪৯ শতাংশ হ্যারিসের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। তবে পঞ্চাশোর্ধ্ব কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের ক্ষেত্রে হ্যারিসকে সমর্থনকারীর সংখ্যা ৭৭ শতাংশ। ৬৭ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ নারী বলেছেন, তারা হ্যারিসকে সমর্থন করছেন; আর ৮ শতাংশ বলেছেন তারা ট্রাম্পকে সমর্থন দেবেন। জরিপে দেখা গেছে, কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের জন্য প্রধান ইস্যু হলো অর্থনীতি, অপরাধ ও জননিরাপত্তা। তাদের জন্য সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক চাপ হয়ে এসেছে খাদ্য ও খুচরা পণ্যের মূল্য, বাড়ি ভাড়া ও ইউটিলিটি বিল। ৫০ বছরের কম বয়সী কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষদের মধ্যে ৮২ শতাংশ আর সব বয়সী ৭৫ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ নারী অর্থনৈতিক দশাকে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা বলে চিহ্নিত করেছেন।

জরিপে দেখা গেছে, ভোটারদের কাছে পাঠানো বার্তার যেগুলোতে ‘অধিকার হরণ করা হচ্ছে’ বলে জোর দেওয়া হয়েছে, সেগুলোই সিদ্ধান্তহীন ভোটার ও কৃষ্ণাঙ্গ তরুণদের সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত করতে পারে। আসন্ন নির্বাচনের আগে কমলা হ্যারিসের সঙ্গে আর কোনো টেলিভিশন বিতর্কে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি বলেন, যখন কেউ লড়াইয়ে হেরে যায়, তখন তার মুখ থেকে প্রথমেই বের হয় আমি আবার নতুন করে লড়াই করতে চাই। বৃহস্পতিবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে এমন ঘোষণা দেন রিপাবলিকান দলের এই প্রার্থী। ট্রাম্প  লেখেন, তৃতীয় কোনো বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে না।

×