ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৭ ভাদ্র ১৪৩১

পশ্চিমা অনুরোধ প্রত্যাখ্যান

ইসরাইলে হামলা করবেই ইরান

প্রকাশিত: ২১:২৩, ১৪ আগস্ট ২০২৪

পশ্চিমা অনুরোধ প্রত্যাখ্যান

হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া ইরান

হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে মরিয়া ইরান। দেশটি ইসরাইলে হামলা চালানোর সিদ্ধান্তে এখনো অটল। তবে সেই গাজা যুদ্ধই তেহরানকে ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরত রাখতে পারে। ইরানের তিন সিনিয়র কর্মকর্তা এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এ সূত্র জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি ইরানের সিদ্ধান্ত বদল করতে পারে।

নয়তো পশ্চিমা দেশগুলোর কোনো হুমকি বা অনুরোধ ইরানকে বিরত রাখতে পারবে না। এমন অবস্থায় ইসরাইলে হামলা না চালাতে ইরানকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাজ্য ও অন্যান্য কয়েকটি পশ্চিমা দেশ। তবে সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। মঙ্গলবার দেশটির একাধিক সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করে। খবর বিবিসি ও পার্স টুডে অনলাইনের। 
খবরে বলা হয়েছে, গত মাসে তেহরানে হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার দায়ে ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়া থেকে বিরত থাকার জন্য যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছে। মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে আন্তর্জাতিক কূটনীতির তৎপরতার মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার গত সোমবার টেলিফোন কথোপকথনে ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানকে ইসরাইলে ‘সামরিক হামলার চলমান হুমকি থেকে সরে আসার’ আহ্বান জানান।

তবে ইরানের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া অনুসারে, প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেছেন, ‘অপরাধ বন্ধ করার উপায়’ হিসেবে প্রতিশোধ নিতে হবে এবং এটি ইরানের ‘আইনি অধিকার’। ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী স্টারমারকে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান বলেছেন, ইসরাইলের  প্রতি পশ্চিমা দেশগুলোর সমর্থন দেশটিকে ‘নৃশংসতা চালিয়ে যেতে’ উৎসাহিত করেছে এবং শান্তি ও নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।

ইরনা আরও জানিয়েছে, ‘পেজেশকিয়ান বলেছেন- ইসলামী প্রজাতন্ত্র ইরান মনে করে, বিশ্বের যে কোনো অংশে যুদ্ধ কোনো দেশের স্বার্থে ভালো নয়। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, আক্রমণকারীকে শাস্তিমূলক জবাব দেওয়া রাষ্ট্রগুলোর একটি আইনি অধিকার এবং একইসঙ্গে এটি অপরাধ এবং আগ্রাসন বন্ধ করার একটি উপায়ও।’
ইসরাইল অবশ্য হানিয়া হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার বা অস্বীকার কোনোটিই করেনি। তবে ইরানের সম্ভাব্য হামলার বিষয়ে ইতোমধ্যেই ইসরাইল তার সামরিক বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্কতার স্তরে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করে বলেছে, এই সপ্তাহের মধ্যেই ‘উল্লেখযোগ্য আক্রমণের’ প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান বা তার প্রক্সিরা। এ ছাড়া ইসরাইলকে রক্ষা করতে মধ্যপ্রাচ্যে নিজেদের সামরিক উপস্থিতিও আরও বাড়িয়েছে দেশটি। 

অন্যদিকে লেবাননের শক্তিশালী ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীও বৈরুতে বিমান হামলায় শীর্ষ কমান্ডারদের একজনকে হত্যার ঘটনায় ইসরাইলের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে। এমন অবস্থায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন গাজা যুদ্ধের অবসানের বিষয়ে আলোচনায় অংশ নিতে মঙ্গলবার তার মধ্যপ্রাচ্য সফরের পরিকল্পনা স্থগিত করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, এই সপ্তাহেই ইসরাইলের ওপর বড় ধরনের আক্রমণ করতে পারে ইরান। তিনি আরও বলেছেন, ‘আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ ওই হামলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি ও ইতালির নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানো নিয়ে কথা বলেছেন।

×