.
এবার গাজা যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করতে সম্মত হয়েছে ইসরাইল। ১৫ আগস্ট থেকে এ আলোচনা শুরু হবে। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসরের মধ্যস্থতাকারীদের দাবির প্রেক্ষিতে তেলআবিব সম্মত হয়। শুক্রবার ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর থেকে এ খবর দেওয়া হয়।
এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র এবং মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাবের পর ইসরাইল যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করতে ১৫ আগস্ট একটি প্রতিনিধি দল পাঠাবে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নের বিস্তারিত বিষয় আলোচনা করতে সম্মত হওয়ার পর তারা এমন পদক্ষেপ গ্রহণ করল। যুক্তরাষ্ট্র, কাতার এবং মিসরের নেতারা বৃহস্পতিবার ইসরাইল ও হামাসকে পুনরায় আলোচনা শুরুর আহ্বান জানায়। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে মতপার্থক্য কাটিয়ে উঠতে আগামী সপ্তাহে হয় দোহা বা কায়রোয় এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। কাতারের আমির, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসরের প্রেসিডেন্ট স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, একটি ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি ‘এখন টেবিলে, শুধু বিশদ বিবরণসহ এটির বাস্তবায়ন’ সম্পন্ন করা বাকি রয়েছে। যুদ্ধবিরতির আলোচনা শুরুর মধ্যেই গাজা ভূখ-ে হামলা অব্যাহত রয়েছে।
বৃহস্পতিবারও উপত্যকার বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায় ইসরাইলি সৈন্যরা। এতে অন্তত ২২ ফিলিস্তিনি নিহত হন। এতে করে বিধ্বস্ত এই ভূখ-ের নিহতের মোট সংখ্যা পৌঁছে গেছে প্রায় ৩৯ হাজার ৭০০ জনে। এ ছাড়া গত ১০ মাসে আহত হয়েছেন সাড়ে ৯১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। খবর এএফপি, বিবিসি ও আলজাজিরা অনলাইনের।
বিশ্ব সম্প্রদায়ের গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি দাবির পরও ইসরাইল অবরুদ্ধ গাজায় নৃশংস হামলা অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক সংস্থার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ‘গাজায় যুদ্ধের সব নিয়ম ভঙ্গ করা হয়েছে।’
৭ অক্টোবর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরাইলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরাইলি ও বিদেশী নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরাইল। গাজার প্রায় সব স্থানেই হামলা চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। বাস্তুচ্যুত হওয়া ফিলিস্তিনিদের শেষ আশ্রয়ও তারা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে।
গাজার যেসব স্থান নিরাপদ বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে ফিলিস্তিনিরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কোথায় যাবে তা নিয়ে মানবিক বিপর্যয় তৈরি হয়েছে।
ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, গত ১০ মাসে গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছে।
এ ছাড়া ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এর আগে হামাসের নয়া প্রধান ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যার হুমকি দেয় নেতানিয়াহু। বৃহস্পতিবার ইসরাইলের একটি সামরিক ঘাঁটি সফরের সময় এই ঘোষণা দেন তিনি। নেতানিয়াহু বলেন, নিজেদের দেশকে রক্ষা করতে ইসরাইল প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যারা আমাদের ধ্বংস চায়, তাদেরকে আমরা নিশ্চিহ্ন করে দেব।