বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বর্ষীয়ান কমিউনিস্ট নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে দক্ষিণ কলকাতার পাম এভিনিউয়ের বাড়িতে শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। বুদ্ধদেবের ছেলে সুচেতন ভট্টাচার্য বলেন, সকালে নাস্তা করার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তার বাবা, তারপর স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ২০ মিনিটে চিরবিদায় নেন। খবর আনন্দবাজার অনলাইনের।
পশ্চিমবঙ্গে টানা ৩৪ বছর ধরে চলা বামফ্রন্টের শাসনামলে বুদ্ধদেব দ্বিতীয় ও শেষ মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। ২০০০ থেকে ২০১১ পর্যন্ত টানা ১১ বছর রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের প্রয়াত সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর উত্তরসূরি ছিলেন তিনি। বুদ্ধদেব দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। এ নিয়ে কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাকে।
গত বছরের জুলাইতে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। নিউমেনিয়ায় আক্রান্ত বুদ্ধদেব কলকাতার ওই বেসরকারি হাসপাতালে কয়েকদিন ভেন্টিলেশনে ছিলেন। ফুসফুস ও শ্বাসনালিতে মারাত্মক সংক্রমণ ধরা পড়লেও ১২ দিন পর সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরেন। এরপর থেকে কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে জীবন কাটাতে হচ্ছিল তাকে।
২০২১ সালের মে মাসে করোনায় আক্রান্ত হন তিনি। তখনো হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বুদ্ধদেবকে। ভারতের বিজেপি সরকার তাকে রাষ্ট্রীয় খেতাব পদ্মভূষণে সম্মানিত করতে চাইলেও তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। বুদ্ধদেবের মুখ্যমন্ত্রীদের শেষ মেয়াদে পশ্চিমবঙ্গে বামফ্রন্টের জনপ্রিয়তা তলানিতে নামতে থাকে। এ মেয়াদে শিল্পায়ন নীতি নিয়ে এগোতে থাকা বামফ্রন্ট সরকারের জমি অধিগ্রহণ পদ্ধতি ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়ে।
এই নিয়ে সৃষ্ট বিতর্কে তার সরকার জনপ্রিয়তা হারায়। ২০০৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ব্যাপক জয় নিয়ে ফের ক্ষমতাসীন হলেও ২০১১ সালে শোচনীয় পরাজয় বরণ করে বামফ্রন্ট। এর মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘ বাম শাসনের অবসান ঘটে। শুরু হয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূলক কংগ্রেস পার্টির (টিএমসি) শাসন। বুদ্ধদেব ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টির (মার্কসবাদী) সর্বোচ্চ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী পরিষদ পলিটব্যুরোর সদস্য ছিলেন। তাকে কীভাবে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হবে সে সিদ্ধান্ত তার দলই নেবে।