ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১

ফ্রান্সে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ আজ

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ৭ জুলাই ২০২৪

ফ্রান্সে দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ আজ

ফরাসি জনগণ তাদের চলতি বছরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নির্বাচনগুলোর মধ্যে একটিতে ভোট দেবে

প্রথম দফায় কট্টর ডানপন্থিদের কাছে হারের পর ফ্রান্সে পার্লামেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ আজ। 

দ্বিতীয় দফার এই ভোটে কট্টর ডানপন্থিরা ঐতিহাসিক বিজয়ের আশা করলেও রাজনৈতিক অচলাবস্থার সম্ভাবনাই বেশি মনে হচ্ছে। শনিবার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোববার ফরাসি জনগণ তাদের চলতি বছরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য নির্বাচনগুলোর মধ্যে একটিতে ভোট দেবে, এই নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়ের আশায় রয়েছে অতি ডানপন্থিরা, কিন্তু কার্যত দেশটিতে রাজনৈতিক অচলাবস্থা সৃষ্টির সম্ভাবনা বেশি।

এই প্রথম মেরিন লে পেন এবং জর্ডান বারডেলার অভিবাসন বিরোধী ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) দেশটিতে সরকার পরিচালনা এবং জাতীয় পরিষদের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বাস্তবসম্মত সুযোগ পেয়েছে।

কিন্তু গত রোববারের আগাম সেই পার্লামেন্ট নির্বাচনে আএন-এর প্রথম রাউন্ডের বিজয়ের পর শত শত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অন্যদেরকে অতি ডানপন্থিদের পরাজিত করার আরও ভালো সুযোগ দিতে নিজেদের মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন।

ফ্রান্সের মূল ভূখণ্ডে ভোটগ্রহণ শুরু হবে রোববার স্থানীয় সময় সকাল ৮টায় এবং প্রথম এক্সিট পোল ১২ ঘণ্টা পরে প্রকাশিত হবে। নির্বাচনের ফলাফল যাই হোক না কেন, প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর জন্য কঠিন অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসা বর্তমানে বেশ কঠিন।

ফ্রান্সে গত রোববার অনুষ্ঠিত সংসদীয় নির্বাচনের প্রথম দফায় ৩৩ শতাংশের বেশি ভোট নিয়ে এগিয়ে ছিল ডানপন্থি দল ন্যাশনাল র‍্যালি (এনআর)। আর ২৮ শতাংশ ভোট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ফ্রান্সের বামপন্থি জোট নিউ পপুলার ফ্রন্ট (এনপিএফ)।

অন্যদিকে ২১ শতাংশের কাছাকাছি ভোট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ছিলেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর দল। মূলত এরপরই সংসদের নিয়ন্ত্রণ যাতে ডানপন্থিদের হাতে চলে না যায়, সেজন্য ফ্রান্সের মধ্যপন্থি ও বামপন্থি দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ।

তবে মেরিন লে পেন-এর উগ্র ডানপন্থি ন্যাশনাল র‍্যালি (আরএন) ৭ জুলাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডের ভোটের পর ফরাসি জাতীয় অ্যাসেম্বলিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে কি না, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য তাদের নিরঙ্কুশ সংখ্যগরিষ্ঠতা প্রয়োজন।

মূলত গত জুন মাসের ৬-৯ তারিখের ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচনে আরএন-এর হাতে ম্যাক্রোঁর মধ্যপন্থি জোটের ভরাডুবি হলে, ম্যাক্রোঁ বেশ আকস্মিক ভাবেই জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দেন। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নিজের কিছু ঘনিষ্ঠ মিত্রদেরও হতবাক করে দেন ম্যাক্রোঁ।

কিন্তু তার এই সিদ্ধান্ত - যেটা অনেকে বাজী ধরার সাথে তুলনা করেছেন - এখন উল্টো ফল দিতে যাচ্ছে। ম্যাক্রোঁর জোট এখন পার্লামেন্টে আগের চেয়ে ছোট আকার ধারণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এছাড়া আগামী ২৬ জুলাই প্যারিস অলিম্পিক শুরু হওয়ার কথা রয়েছে এবং এর মধ্যেই ইউরোপের এই দেশটিতে দুই দফা নির্বাচন কার্যত একটি ধাক্কা হিসাবে সামনে এসেছে। দেশটিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ইতোমধ্যেই কঠোর অবস্থায় রয়েছে এবং উচ্চতর রাজনৈতিক উত্তেজনার জন্য এখন আরও ৩০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিবিসি বলছে, ভোটের ফলাফল যাই হোক না কেন প্যারিস এবং অন্যান্য ফরাসি শহরে সহিংসতার আশঙ্কা রয়েছে এবং রোববার সন্ধ্যায় ফরাসি জাতীয় পরিষদের বাইরে পরিকল্পিত বিক্ষোভও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

তাসমিম

×