গাজার সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
গাজা ভূখণ্ডের রাফা ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ইসরায়েল। রাফা ক্রসিংয়ের একপাশে গাজা, অন্যপাশে মিসরের সিনাই উপদ্বীপ। এরপরই গাজার সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা ‘অগ্রহণযোগ্য’ বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বুধবার (৮ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।
আরও পড়ুন : ব্রাজিলে ভয়াবহ বন্যায় মৃত্যু বেড়ে ৯০
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েল গাজার দক্ষিণের রাফা শহরে ট্যাংক পাঠিয়ে এবং মিসরের সাথে সীমান্তবর্তী ক্রসিংয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পর মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস বলেছে, গাজার সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা ‘অগ্রহণযোগ্য’।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি কারিন জ্যঁ-পিয়েরে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, ‘যে ক্রসিংগুলো বন্ধ করা হয়েছে সেগুলো আবারও চালু করা দরকার, সেগুলো বন্ধ করা অগ্রহণযোগ্য।’
তিনি আরও বলেন, গাজা ও ইসরায়েলের মধ্যে অবস্থিত কেরেম শালোমে আরেকটি ক্রসিং বুধবার পুনরায় খোলা হতে পারে আশা করা হচ্ছে।
পৃথক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা আনাদোলু জানিয়েছে, ইসরায়েল বুধবার কেরাম শালোম ক্রসিং এবং রাফা ক্রসিং জ্বালানি সরবরাহের জন্য পুনরায় খুলে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্র মঙ্গলবার জানিয়েছে। এই দুটি ক্রসিং অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ রুট হিসেবে পরিচিত।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইসরায়েল আগামীকাল (বুধবার) কেরেম শালোম ক্রসিং পুনরায় চালু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাস্তবে যেন এটিই ঘটে তা আমরা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছি, এতে করে মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখা যাবে।’
হামাসের হামলার কারণে কেরেম শালোম ক্রসিং বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে মিলার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এটিকে ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ পুনরায় চালু করতে চায়।
মিলার আরও বলেন, ‘রাফার ক্ষেত্রেও একই জিনিস চায় যুক্তরাষ্ট্র। তারা (ইসরায়েল) বলেছে, জ্বালানি সরবরাহের জন্য রাফাহ ক্রসিং পুনরায় চালু করবে। পানি বিশুদ্ধকরণের জন্য এই জ্বালানি অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ, গাজার ভেতরে মানবিক সহায়তা সরবরাহকারী ট্রাকগুলোতেও জ্বালানি সরবরাহ করা অবিশ্বাস্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ এবং বেকারি চালানোর জন্যও এটি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটি সম্পূর্ণরূপে পুনরায় চালু দেখতে চাই।’
এর আগে সোমবার অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরের একাংশ খালি করে দিতে সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি নির্দেশ দেয় ইসরায়েল। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর নির্দেশের পর রাফার পূর্বাঞ্চল থেকে বহু মানুষ সরে যেতে শুরু করেন।
পরে গাজার সঙ্গে মিসরের সীমান্তে অবস্থিত রাফা ক্রসিংয়ের দখল নেয় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। রাফা ক্রসিংয়ের একপাশে গাজা, অন্যপাশে মিসরের সিনাই উপদ্বীপ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের আগ্রাসন শুরুর আগ পর্যন্ত এই সীমান্তপথটিকে গাজায় বসবাসকারী ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘লাইফ লাইন’ বলে বিবেচনা করা হতো।
কারণ এই সীমান্তপথ দিয়েই খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানিসহ জীবনধারণের জন্য প্রয়োজনীয় সব সামগ্রীর সরবরাহ প্রবেশ করত গাজায়।
তাসমিম