ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

পোশাকশিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ব্যাপক: দুবাইয়ে পরিবেশমন্ত্রী

প্রতিনিধি, ইউএই থেকে

প্রকাশিত: ২২:৫৫, ৬ মে ২০২৪; আপডেট: ২২:৫৬, ৬ মে ২০২৪

পোশাকশিল্প ও তথ্যপ্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা ব্যাপক: দুবাইয়ে পরিবেশমন্ত্রী

পরিবেশমন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের নধ্যয়নযোগ্য জ্বালানি, পর্যটন, তৈরি পোশাকশিল্প, পাটজাত ও চামড়াজাত শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ জনসম্পদকে জনশক্তিতে রূপান্তরকরণ, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার প্রতি জোড় দিয়েছে। বাংলাদেশের ভূপ্রাকৃতিক অবস্থান, বিশাল কনজ্যুমার পপুলেশনের কারণে এখানে বিনিয়োগ অনেক বেশি লাভজনক। 

বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা, বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির উৎকর্ষের সাথে প্রযুক্তির বিভ্রাট ও চ্যালেঞ্জ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্পোরেট ট্যাক্স পলিসি এর উপর বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দুবাইর আয়োজনে দুবাইস্থ বেস্ট ওয়েস্টার্ন ক্রিক হোটেল ব্যাংকুয়েট হলে রবিবার (৫ মে) অনুষ্ঠিত  ইনভেস্টমেন্ট প্রসপেক্ট  ইন বাংলাদেশ টেক ট্রান্সফর্মেশন অ্যান্ড ডিসকরুপশন  “ এন্ড ইউএই টেক্স পলিসি " শীষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর উক্ত সেমিনারে গেস্ট অফ অনার হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ কনস্যুলেট, দুবাই-এর কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও কাউন্সেলর (পলিটিক্যাল) মো. আশফাক হোসেন এর পরিচালনায় সেমিনারে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, সাংবাদিকবৃন্দ, ভারত ও শ্রীলংকার ব্যবসায়ীসহ প্রায় দু' শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনার বিভিন্ন ক্ষেত্র তথা পর্যটন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, তৈরি পোশাকশিল্প, পাটজাত ও চামড়াজাত শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তিখাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের প্রভূত সম্ভাবনার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

উক্ত সেমিনারে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাতের করনীতির সাম্প্রতিক পরিবর্তনসমূহ, এর প্রভাব ও করণীয় সম্পর্কে বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন ডি টেমপিট লিমিটেডের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মিস মোহসেনা খানম। এরপর তথ্যপ্রযুক্তির রুপান্তর, উদ্ভূত সমস্যা ও করণীয় সম্পর্কে বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের হুয়ায়ে টেক এর সিইও শাহরিয়ার পাভেল। বাংলাদেশের বিনিয়োগ সম্ভাবনার বিভিন্ন ক্ষেত্র সম্পর্কে বিষয়বস্তু উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের কমার্শিয়াল কাউন্সেলর আশীষ কুমার সরকার।

ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল দুবাইর সভাপতি সিআইপি মাহাতাবুর রহমান নাসির সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার, আমিরাতের ব্যবসায়ী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য। বর্তমান সরকার বিনিয়োগকারীদের সকল সুবিধা প্রদানে বদ্ধপরিকর।

রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর বর্তমান সরকারের গৃহীত কিছু বিনিয়োগবান্ধব পদক্ষেপের কথা উল্লেখপূর্বক সবাইকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের অনুরোধ করেন এবং বর্তমান সরকারের অধীনে বাংলাদেশের প্রভূত উন্নয়নের বিষয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে তুলে ধরার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সভাপতির বক্তব্যে দুবাই কনসাল জেনারেল বি এম জামাল হোসেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নে সবাই এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বান্ধব যে সকল অবকাঠামো/সুবিধাদি এবং পলিসি সাপোর্ট সৃষ্টি করা হয়েছে তার সর্বোত্তম ব্যবহার করে বাংলাদেশে বিনিয়োগ। পাশাপাশি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীগণকে আরব আমিরাত সরকারের বর্তমান টেক্স পলিসি অনুসারে কর্পোরেট ট্যাক্স এবং ভ্যাট সংশ্লিষ্ট আইন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা পূর্বক আরব আমিরাতে ব্যবসা পরিচালনা করার বিষয়ে সকলকে সচেষ্ট হওয়ার অনুরোধ করেন। এর অন্যথায়, ব্যবসায়ীগণ জরিমানার মুখোমুখি হওয়াসহ তাদের ব্যবসা পরিচালনায় বিভিন্ন ধরণের সমস্যায় পড়তে পারেন বলে তাদের সতর্ক থাকতে অনুরোধ জানানো হয়। 

বর্তমানে বাংলাদেশে যে সকল দেশ হতে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স প্রেরণ করা হয় গত প্রায় ১০ মাস যাবৎ ইউএই রেমিট্যান্স বাংলাদেশে প্রেরণকারী দেশ হিসাবে এক নম্বর স্থানে রয়েছে। ইউএই হতে চলমান এই রেমিটেন্স  প্রবাহ আরো বেগবান করার আহবান ব্যবসায়ীদের জানানো হয়। 

উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত আরব আমিরাতের সাবেক রাষ্ট্রদূত সায়েদ মোহাম্মদ আল মুহিরি, সারজা চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রি সেক্রেটারি বোর্ড ডাইরেক্টর খামিজ মুহাম্মদ আর যাইওদি, কনস্যুলেট জেনারেল ইন্ডিয়া কাউন্সিলরকে কালিমোতো,  ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া টেট ফেসিলিটেটিং পরিচালক আজিজ সাবা, তুর্কি কনস্যুলেট কমার্শিয়াল অ্যাটাচ মোহাম্মদ আমিন এরকাল, আমার রিয়েল স্টেট দুবাই এক্সিকিউটিভ সেলস আনন্দ পান্ডে, ইএটিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুবিন খান, শ্রীলঙ্কান বিজনেস কাউন্সিল দুবাই প্রেসিডেন্ট রিজা মোহাম্মদ, ইন্ডিয়ান বিসনেস এন্ড প্রফেশনাল কাউন্সিল দুবাই এর চেয়ারম্যান সুরেশ কুমার, দানিয়ুব গ্রুপ, দুবাই এর জেনারেল ম্যানেজার আরিফ ভালদার, রাজ গ্রুপ অব কোম্পানীজ এর কর্ণধার ড. মুস্তাফা শাশা, মালাবার গোল্ড ডায়মন্ড ইন্টারন্যাশনাল অপারেশনস ম্যানেজার হরিহরণ এন, দুবাইস্থ স্ট্যান্ডার্ড সেটার্ড ব্যাংক, আজমান ব্যাংক, দুবাই ইসলামী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক লি., দুবাই এর প্রতিনিধিগণ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর রিজিওনাল ম্যানেজার শাকিয়া সুলতানা, বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী বাবুল, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ রাজা মল্লিক, সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন আহমেদ, নেফলেক্স গ্রুপ দুবাই চেয়ারম্যান এ কে আজাদ, কেবিএন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইয়াকুব সৈনিক, মোহাম্মদ সেলিম রেজাসহ সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত বাংলাদেশি সিআইপি গণ, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, পেশাজীবীগণ, বাংলাদেশ কনস্যুলেট, দুবাই এর সকল কমকর্তা, গণমাধ্যম প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন। 

বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি যেমন আমাদের দৈনন্দিন জীবন, ব্যবসা বাণিজ্য এবং রাষ্ট্র্রীয় ক্ষেত্রে অভাবনীয় ভূমিকা পালন করছে, তেমনি এর চলমান রূপান্তরের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত বিভ্রাট যে আমাদের জীবন ও কমকে কতটা চ্যালেঞ্জিং  করে তুলকে পারে এই বিষয়েও উক্ত সেমিনারে উপস্থিত বক্তাগণ তাদের বক্তৃতায় তুলে ধরেন। ব্যবসায় বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং কর নীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত বলে বক্তাগণ অভিমত ব্যক্ত করেন।

এম হাসান

×