ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ, যেভাবে যাবেন

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ৫ জানুয়ারি ২০২৪

কানাডায় ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে যাওয়ার সুযোগ, যেভাবে যাবেন

নিয়মিতভাবেই কানাডায় বাড়ছে বাংলাদেশীদের সংখ্যা 

অভিবাসীবান্ধব দেশ কানাডায় প্রতিবছর তিন থেকে চার লাখ মানুষ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে এসে বসবাস করেন। কেউ আসেন সরাসরি পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি ভিসা নিয়ে, কেউ শিক্ষার্থী হিসেবে পড়তে এসে পড়াশোনা শেষ করে চাকরি নিয়ে একটি নির্দিষ্ট সময় পর পার্মানেন্ট রেসিডেন্সি নিয়ে এই দেশে থেকে যান। 

অনেকে নিজ দেশে বিভিন্ন সমস্যার কারণে রিফিউজি হিসেবে কানাডায় নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। অনেকেই দেশটিতে ভিজিট ভিসায় এসে চলে যান। আর একটি অংশ আসে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে। ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে কয়েক বছর কাজ করার পর তারা নাগরিকত্ব লাভ করে।

তবে ওয়ার্ক পারমিট নিয়ে যাঁরা কানাডায় আসতে চান, তাঁরা অনেকেই কানাডার ভেতরে ও বাইরে থাকা মানুষের দ্বারা প্রতারিত হন। একারণে প্রতারণার হাত থেকে কীভাবে বাঁচবেন আর কীভাবে ওয়ার্ক পারমিট পাওয়া যায় এবিষয়টি ভালোভাবে জেনে নিতে হবে।


কীভাবে ওয়ার্ক ভিসা হয়
অনেকেই মনে করেন, কানাডায় ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে সরাসরি আসা যায়, তারপর কানাডায় এসে কাজ খুঁজে নিতে হয়। ব্যাপারটা আসলে এতোটাও সহজ নয়। এখানে চাকরির বাজারের চাহিদার ওপর ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে আসতে হয়। এক্ষেত্রে  কোনো কোম্পানি যদি একটি চাকরির জন্য কানাডা থেকে লোক খুঁজে না পায়, শুধু তখনই তারা বিদেশ থেকে ওই চাকরির জন্য লোক আনতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রথমে তারা কানাডার বিভিন্ন চাকরির ওয়েবসাইটে বিজ্ঞাপন দেবে, কয়েকবার বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরও যদি তারা কাঙ্ক্ষিত লোক না পায়, এরপর তারা সরকারের কাছে আবেদন করে কানাডার বাইরে থেকে ওই কাজের জন্য লোক আনার। 

ওয়ার্ক ভিসায় কানাডায় আসার জন্য পৃথিবীর অধিকাংশ দেশ থেকে মানুষ অপেক্ষা করে। এই ধরনের চাকরির খবর (www.indeed.com) ওয়েবসাইটে থাকে। আরও কিছু ওয়েবসাইটে থাকে। ওই ধরনের চাকরির ওয়েবসাইটে গিয়ে Labor Market Impact Assessment (LMIA) লিখে সার্চ দিলে চাকরিগুলো পাবেন। আপনার রেজুমে (বায়োডাটা) যদি তাদের পছন্দ হয়, তাহলে তারা আপনাকে ইন্টারভিউর জন্য ডাকবে। 

ইন্টারভিউগুলো অনলাইন হয়ে থাকে। আপনাকে যদি তারা  যোগ্য মনে করে, তাহলে তারা আপনাকে নিয়োগ দেওয়ার আগে সরকারের কাছে এলএমআইএর জন্য আবেদন করবে। এরপর সরকার আরেক দফা যাচাই-বাছাই করবে। কানাডার সরকার দেখতে চাইবে, ওই কোম্পানি সঠিক লোক নিয়োগ দিচ্ছে কি না, নাকি ওই কোম্পানি টাকার বিনিময়ে বিদেশ থেকে লোক আনছে। 

যাচাই–বাছাই করার পর যদি সরকার আপনাকে যোগ্য মনে করে, তবে এলএমআইএ ইস্যু করবে। আপনি কোম্পানির কাছ থেকে জব অফার ও সরকার কর্তৃক এলএমআইএ পেলে তখন ভিসার জন্য আবেদন করবেন। এক-দুই বছরের জন্য দেওয়া হয় এ ধরনের ভিসা । পরবর্তী সময়ে কয়েক বছর কাজ করে পার্মানেন্ট রেসিডেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন।


যে ধরনের প্রতারণার খপ্পরে পড়তে পারেন
জব অফারের নাম করে অনেকেই আপনার কাছ থেকে অবৈধভাবে টাকা নিতে পারেন। অনেকে আপনাকে বলতে পারেন যে তাঁরা আপনাকে ৮–১০ লাখ টাকার বিনিময়ে জব অফার এবং এলএমআইএ জোগাড় করে দেবেন। মনে রাখবেন, আপনাকে কেউ টাকার বিনিময়ে জব অফার বা এলএমআইএ জোগাড় করে দিতে পারবেন না। 

আপনাকে আপনার নিজের যোগ্যতায় ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরি নিতে হবে। যখনই দেখবেন, আপনাকে কেউ ইন্টারভিউ ছাড়া চাকরির জন্য জব অফার পাঠানোর কথা বলবেন, তখনই মনে করবেন, তা সঠিক নয়।

যে যে চাকরিতে এলএমআইএ পেতে পারেন
 বিভিন্ন ওল্ড হোমে সাপোর্ট ওয়ার্কার, হেভি ট্রাক ড্রাইভার, ইন্ডিয়ান বা চায়নিজ রেস্তোরাঁয় শেফ, কম্পিউটার সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারসহ বেশ কিছু টেকনিক্যাল কাজে কানাডা ওয়ার্ক ভিসা দিয়ে বিদেশ থেকে লোক আনে।


যে বিষয়টি মনে রাখবেন
অবশ্যই আপনার মনে রাখতে হবে বাংলাদেশে যদি আপনি বাংলাদেশের কোনো একটি কাজের জন্য আবেদন করেন, তা হলে আপনাকে শুধু বাংলাদেশি মানুষদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। আর কানাডার কোনো একটি ওয়ার্ক ভিসার কাজের জন্য আপনাকে সারা পৃথিবীর কমপক্ষে ১৮০টি দেশের মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজের অভিজ্ঞতা, ইংরেজি ভাষাগত যোগ্যতা ও পরীক্ষার সময় চাকরিদাতাকে কতটুকু কনভিন্স করতে পারছেন, তার ওপর নির্ভর করবে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা।

এবি

সম্পর্কিত বিষয়:

×