প্রবাসীরা। ছবি: সংগৃহীত।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে শুধু দেশের মানুষই নয়, প্রবাসীদের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করছে। কাজের ফাঁকে অবসরে, চায়ের দোকানে কয়েকজন মিলিত হলে শুরু হয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে চুলচেরা বিশ্লেষণ এবং নানা হিসেব-নিকেশ।
সব প্রার্থীকে নির্বাচনের মাঠে প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণে সুষ্ঠু প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনের দেখার প্রত্যাশা প্রবাসীদের। মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক দেশের রাজনৈতিক সংগঠনের প্রবাসী নেতারা নিজের পছন্দের দলে মনোনীত প্রার্থীকে বিজয়ী করতে ছুটি নিয়ে দেশে এসেছেন।
কুয়েতপ্রবাসী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছি। আমি যেন আমার পরিবার নিয়ে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারি কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা যেন না হয় নির্বাচন কমিশনের প্রতি এই প্রত্যাশা করেন প্রবাসীরা।
দীর্ঘদিন প্রবাসে অবস্থান করার কারণে স্বল্প সময়ের জন্য ছুটিতে এসে অনেকেরই ভোটার হওয়া সময় সুযোগ থাকে না। এদের মতো অনেক প্রবাসী জনসংযোগ সভা সেমিনারে অংশগ্রহণ করতে দেখা গেলেও জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকায় ভোট দেওয়ার স্বাদ মিটবে না অনেকেরই। ছুটিতে আসা প্রবাসীদের দ্রুত এনআইডি সেবা প্রদানের দাবি জানান ছুটিতে আসা অনেক প্রবাসীরা।
প্রবাসী আব্দুর রাজ্জাক ভূঁইয়া বলেন, দেশের বাইরে বিভিন্ন দেশে প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী থাকে যাদের বেশিরভাগই মধ্যপ্রাচ্যে। রিজার্ভ বৃদ্ধি ও রেমিট্যান্স বাড়াতে হলে প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা বিমানবন্দরে হয়রানি, মৃত প্রবাসীর মরদেহ সরকারি খরচে দেশে আনাসহ আরও অন্যান্য সমস্যা সম্ভাবনার কথা তুলে ধরতে প্রবাসীদের মধ্য থেকে জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসন রাখা জরুরি।
ভেনিস প্রবাসী মো. আকতার উদ্দিন বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক—একজন প্রবাসী হিসেবে এটাই আশা করি। তবে দুঃখের বিষয় হলো আওয়ামী লীগকে হারানোর মতো কোনো দলের অস্তিত্ব নেই দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে।
বিএনপি ও তাদের সমমনা দলগুলোর নির্বাচন বর্জনের বিষয়ে তিনি বলেন, তফসিল ঘোষণার আগে থেকে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আচরণ এবং প্রশাসনের পক্ষপাতমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে তারা নির্বাচন বর্জন করতে বাধ্য হয়েছে। সরকার হয়তো ভাবছে, নির্বাচন করে ফেলতে পারলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কিছুদিন সমালোচনা হবে, পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। অতীতে এমন ঘটনা ঘটলেও এবার হয়তো তা হবে না। সরকারকে বেশ বেকায়দায় পড়তে হতে পারে।
লন্ডন প্রবাসী শেখ জালালের মতে, দেশ এখন ভালো অবস্থায় আছে। গত ১৫ বছরে দেশের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে দেশের আরও উন্নয়ন হবে, দেশের চেহারা বদলে যাবে। এই সরকারের আমলে দ্রব্যমূল্য কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু তা বৈশ্বিক কারণে। ইংল্যান্ডেও জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে।
ইতালি প্রবাসী আমিনুল বলেন, বাংলাদেশে জবাবদিহিতার সরকার প্রতিষ্ঠিত হবে, একজন প্রবাসী হিসেবে এমন একটি নির্বাচন আশা করি। রেমিট্যান্সযোদ্ধা প্রবাসীদের ভোটাধিকার থাকা উচিৎ এবং জাতীয় সংসদে প্রবাসীদের জন্য সংরক্ষিত আসন থাকা উচিৎ। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগের জন্য যা আবশ্যক।
যদিও এখন পর্যন্ত বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও নৌকা প্রতীকের বিপরীতে বেশিরভাগ আসনে রয়েছে সরকার দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রবাসীদের তীক্ষ্ম দৃষ্টি এখন কে হারে আর কে জেতে ওই দিকে।
এম হাসান