রব বাউয়ার
রাশিয়ার সঙ্গে সরাসরি যুদ্ধের জন্য ন্যাটো প্রস্তুত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জোটের সামরিক কমিটির চেয়ারম্যান রব বাউয়ার। সোমবার পর্তুগিজ টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেন তিনি। পর্তুগিজ আরটিপি টিভির সঙ্গে সাক্ষাৎকারে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক বাহিনী ন্যাটো রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত কিনা জানতে চাইলে বাউয়ার বলেন, আমরা অবশ্যই প্রস্তুত আছি। তিনি বলেন, আমি মনে করি, এটি রাশিয়ানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, আমাদের অবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে। খবর আরটির।
বাউয়ার আরও বলেন, কয়েক দশক ধরে অনেক ন্যাটো দেশ ভেবেছিল তারাই সিদ্ধান্ত নেয় যে, কখন এবং কোথায় তাদের বাহিনী মোতায়েন করা হবে। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ এই ধারণা বদলে দিয়েছে। রাশিয়া সুযোগ মতো তাদের সামরিক অভিযান শুরু করেছে, তাই আমাদের এখন আরও অনেক বেশি প্রস্তুত থাকতে হবে। কারণ তারা কখন হামলা করে এটা তাদের ওপর নির্ভর করছে। ইউক্রেনে পশ্চিমা দেশগুলোর দেওয়া আধুনিক অস্ত্রের চালানকে বাড়াবাড়ি নয় বলেও উল্লেখ করেন বাউয়ার।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে ন্যাটোকে রাশিয়ার জন্য নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে অভিহিত করে রুশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ভ্যালেরি গেরাসিমভ বলেন, পশ্চিমারা একজোট হয়ে মস্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছে ন্যাটো। প্রধান প্রধান নিরাপত্তা হুমকিগুলোর বিষয়েও কথা বলেন জেনারেল গেরাসিমভ। তিনি বলেন, বর্তমানে এসব হুমকির মধ্যে ন্যাটোর পরিধি ফিনল্যান্ড ও সুইডেন পর্যন্ত সম্প্রসারণের আকাক্সক্ষা যেমন রয়েছে, তেমনি ইউক্রেনকে ব্যবহার করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে একটা কৃত্রিম যুদ্ধ শুরু করার মতো হুমকিও আছে। ১৯৪৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ১২টি দেশ নিয়ে সামরিক জোট ন্যাটোর যাত্রা শুরু।
দেশগুলো প্রতিশ্রুতি দেয়, কোনো সদস্যদেশ আক্রান্ত হলে তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে পড়ার পর ওয়ারস প্যাক্টভুক্ত কয়েকটি দেশ ন্যাটোতে যোগ দেয়। বর্তমানে ন্যাটোর সদস্যসংখ্যা ৩০। ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর অভিযান শুরুর পর ফিনল্যান্ড ও সুইডেন ন্যাটোর সদস্য হতে গত বছরই আবেদন করে। তবে দেশ দুটি এখনো সদস্যপদ পায়নি। এদিকে চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞরা ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর সম্পৃক্ততার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। সোমবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস বলেছে, ইউরোপে আরেকটি বিশ্বযুদ্ধের বিপদ বাড়ছে।
চীনা সামরিক বিশেষজ্ঞ এবং টিভি ভাষ্যকার গান ঝংপিং বলেছেন, কিয়েভ সব সময় ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ের জন্য তার ন্যাটো মিত্রদের টেনে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালাবে। এর আগে ইউক্রেনকে সহায়তা দেওয়া ন্যাটো দেশগুলো বৈধ সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছিলেন সাবেক রুশ প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ।