ইরানে বিক্ষোভ
ইরানের ছয় সাংবাদিকের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বাইডেন প্রশাসনের দাবি, পুলিশ হেফাজতে মাশা আমিনির মৃত্যুর প্রতিবাদে ইরানে চলমান বিক্ষোভ নিয়ে সাজানো প্রতিবেদন তৈরি ও প্রকাশ করায় এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (১৬ নভেম্বর) মার্কিন অর্থমন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ইরানে চলমান বিক্ষোভে হামলা চালিয়ে বেশ কয়েকজনকে হত্যা করেছে রাইসি প্রশাসন। কিন্তু দেশটির সরকারি গণমাধ্যম ইসলামিক রিপাবলিক অব ইরান ব্রডকাস্টিং (আইআরআইবি) বিষয়টি নিয়ে বানানো প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তারা সাধারণ নাগরিকদের স্বীকার করতে বাধ্য করেছে যে, তাদের স্বজনরা ইরানি কর্তৃপক্ষের হামলায় নিহত হননি।
নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা সাংবাদিকদের মধ্যে দুজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- আলী রেজভানি ও আমেনেহ সাদাত জাবিহপুর। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, এ দুজন সাংবাদিকই ওইসব ‘সাজানো’ প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিক ভূমিকা রেখেছেন। ইরানি গোয়েন্দা সংস্থার মদদে তারা জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায় করেছেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আলাদা এক বিবৃতিতে বলেন, আইআরআইবি ইরান সরকারের পক্ষে প্রচারণামূলক গণমাধ্যম হিসেবে কাজ করে। তাছড়া, রাইসি প্রশাসনের গণ-দমন আড়াল করার মূল হাতিয়ার এটি। মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে আমরা ইরানি কর্মকর্তা ও সরকারি প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির মুখে দাঁড় করাবো।
জাতিসংঘে ইরানের মিশন নতুন এ নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। তবে ইরান সরকার এর আগে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে করা একটি প্রতিবেদনকে অস্বীকার করে। তাদের অভিযোগ, ইরানকে অস্থিতিশীল করে তুলছে যুক্তরাষ্ট্র।
আল জাজিরার একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইরানের একটি আদালত রবিবার গভীর রাতে বিক্ষোভে জড়িত থাকা এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দেন। অপর একটি আদালত জাতীয় নিরাপত্তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার দায়ে পাঁচজকে ৫-১০ বছরের কারাদণ্ড দেন।
এদিকে, ইরানের পার্লামেন্ট আদালতগুলোকে বিক্ষোভকারীদের দমন করতে কঠোর হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এটিকে রাইসি প্রশাসনের দমন-পীড়নের আরেকটি কৌশল আখ্যা দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।
এ সপ্তাহের শুরুতেই ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও যুক্তরাজ্য মাশা আমিনিকে গ্রেফতার করা নৈতিক পুলিশ সদস্যদের মধ্য থেকে চারজনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে। সেই সঙ্গে রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ ওয়াহিদির বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
তাসমিম