রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ দিন দেশটির সাধারণ ভোটাররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ গণতন্ত্রের দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন নিয়ে পুরো বিশ্বের আগ্রহ থাকে। অন্যান্য দেশগুলোর মতো এ নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের চির প্রতিদ্বন্দ্বী রাশিয়াও। অন্য সময়ের তুলনায় এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় রাশিয়ার আগ্রহটা আরও বেশি।
ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয়ের প্রত্যাশায় অপেক্ষা করছে রাশিয়া। অন্যদিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ডেমোক্র্যাটিক দলের পরাজয়ও চাচ্ছে মস্কো। কারণ জো বাইডেনের দল হেরে গেলে ইউক্রেনের জন্য কোনো সামরিক সহায়তা দিতে চাইলে, তা সহজে দিতে পারবেন না বাইডেন। সংসদ থেকে অর্থ সহায়তার বিষয়টি অনুমোদন করিয়ে নিয়ে আসতে হবে। যদি সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দল নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিতে পারে তখন বাইডেন চাইলেও অনেক কিছু করতে পারবেন না।
ভোটাভুটি শেষে প্রাপ্ত ফলাফল থেকে যে তথ্য পাওয়া যাচ্ছে তাতে দেখা গেছে, ট্রাম্পের রিপাবলিকানরা নিশ্চিতভাবে প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে যাচ্ছে। তবে রিপাবলিকানদের হাতে প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ গেলেও একেবারে সঙ্গে সঙ্গে যে ইউক্রেনে সহায়তা বন্ধ হয়ে যাবে এমন আশাও করছে না মস্কো।
এর বদলে এখন ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে নজর দিচ্ছে সরকারপন্থি রাশিয়ানরা। তাদের আশা প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিতর্কিত হবে এবং সামনের বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেবে।
রাশিয়ার উগ্রপন্থি সিনেটর এবং পররাষ্ট্রনীতি বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্সি পুসকোভ টেলিগ্রামে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস নির্বাচনে রিপাবলিকানদের জয় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনবে না এবং ইউক্রেনের প্রতি ওয়াশিংটনের সহায়তাও শেষ হবে না। তবে কংগ্রেসের মাধ্যমে কিয়েভের জন্য সহায়তা প্রদানের বিষয়টি বাইডেন প্রশাসনের জন্য কঠিন হয়ে যাবে এবং যারা ইউক্রেনে সীমাহীন সহায়তার বিরুদ্ধে আছেন তাদের অবস্থান শক্তিশালী করবে।’
তবে মস্কোভিত্তিক বৈশ্বিক রাজনীতি বিশ্লেষক একটি সংগঠন জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল দেশটির ইউক্রেন নীতির ওপর খুব বেশি প্রভাব ফেলবে না। রাশিয়ার উগ্রজাতীয়তাবাদীদের যে দলটি আছে তারা জানত যুক্তরাষ্ট্রের ও বৈশ্বিক রাজনীতিতে এ মধ্যবর্তী নির্বাচনের একটি লম্বা প্রভাব পড়বে।
রুশ অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টিভি চ্যানেল তারগ্রাদ জানিয়েছিল, এই মধ্যবর্তী নির্বাচন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটি সর্বনাশের কারণ হবে। নিউজ পোর্টালটি তাদের এক প্রতিবেদনে লিখেছিল, ‘বিশ্বের এই সংকটকালীন ইতিহাসে, এই নির্বাচন বৈশ্বিক রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে ইউক্রেনে।’
তারা আরও বলেছিল, যদি বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়তে পারে যার প্রেক্ষিতে ইউক্রেনে সহায়তা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
টিএস