যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস
যুক্তরাজ্যের নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের পরিকল্পনার প্রায় সবকটি বাতিল করেছেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজেই ভুল করার জন্য ক্ষমা চাইলেন। তবে তিনি পদত্যাগ করবেন না বরং টোরিদের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন।
লিজ ট্রাস সোমবার (১৭ অক্টোবর) এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমি আমার ভুল সিদ্ধান্তের দায়ভার নিচ্ছি এবং দুঃখ প্রকাশ করছি’।
তিনি বলেন, ‘আমি কাজ করতে চেয়েছিলাম, করের সমস্যা মোকাবিলা এবং জ্বালানি বিল নিয়ে সাহায্য করতে, কিন্তু আমরা খুব বেশি এবং খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি’।
তিনি স্বীকার করেন যে তার এক মাসের সামান্য বেশি প্রিমিয়ারশিপ ‘নিখুঁত ছিল না’। তবে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক ছিল যে আমরা নীতি পরিবর্তন করেছি’।
লিজ ট্রাস তার প্রতিশ্রুতি পুনরায় ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমি দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে আমাদের এটিকে বিকল্প ভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে’।
ট্যাক্স ইস্যুকে কেন্দ্র করে টানাপোড়েন তৈরি হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস অর্থমন্ত্রীর পদ থেকে কোয়াসি কোয়ার্টেংকে সরিয়ে দেন গত ১৪ অক্টোবর। তার স্থলাভিষিক্ত হন জেরেমি হান্ট। চলতি বছর শুক্রবার নিয়োগ পাওয়া যুক্তরাজ্যের চতুর্থ অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট।
করপোরেশন ট্যাক্সের পরিকল্পিত বৃদ্ধি বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লিজ ট্রাস কনজারভেটিভ পার্টির নেতৃত্বে প্রচারে নেমেছিলেন। তার দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ছয় সপ্তাহ হলো।
চলতি বছর মার্চের বাজেটে তৎকালীন ব্রিটিশ অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক এই কর ২০২৩ সালের এপ্রিলে ১৯ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তার যুক্তি ছিল, কোভিড মহামারিতে ধুঁকতে থাকা অর্থনীতিতে সরকার কোম্পানিগুলোকে শত শত কোটি পাউন্ড দিয়ে সহায়তা করেছে। ফলে তাদের কাছ থেকে এই বাড়তি কর চাওয়া অন্যায় কিছু নয়। কিন্তু সুনাকের এই সিদ্ধান্তই বাতিলের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন লিজ ট্রাস।
কিন্তু তোপের মুখে পড়ে শুক্রবার (১৪ অক্টোবর) তিনি সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসায় সুনাকের সিদ্ধান্তই বহাল থাকলো। যারা দেড় লাখ ইউরো বা এর বেশি আয় করেন তাদের ওপর কর ৪৫ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশ করা হবে বলে জানিয়েছিলেন লিজ ট্রাসের অর্থমন্ত্রী কোয়াসি কোয়ার্টেং।
লিজ ট্রাস পরে স্বীকার করেন যে বাজারের প্রত্যাশার চেয়ে আরও বেশি এবং দ্রুত নেওয়া হয়েছিল এ সিদ্ধান্ত। এখন তিনি বলছেন যে তার অগ্রাধিকার তার ঋণদাতাদের কাছে ব্রিটেনের বিশ্বাসযোগ্যতা পুনরুদ্ধার করা। মাঝারি মেয়াদে জিডিপির শতাংশ হিসাবে ঋণ কমছে তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি ‘যা কিছু প্রয়োজন’ তা করবেন।
টিএস