অনলাইন ডেস্ক ॥ বিশ্বে বিভিন্ন স্থানে গতবছর যুদ্ধক্ষেত্রে নিহত হয়েছে দুই হাজার সাতশর মতো শিশু এবং যুদ্ধে সহায়তার জন্য সাড়ে আট হাজারের বেশি শিশু সৈনিককে ব্যবহার করা হয়েছে ।
সোমবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে শিশু বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যুদ্ধবিক্ষুব্ধ এলাকায় শিশু হত্যা, তাদের পঙ্গুত্ব বরণ করা ও যৌন নির্যাতন, অপহরণ কিংবা সৈন্য হিসেবে নিয়োগ করা, শিক্ষা এবং চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত করার চিত্র তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে অন্তত ২১টি স্থানে ১৯ হাজার ৩৭৯ শিশুর ক্ষেত্রে অধিকার লংঘনের ঘটনা চিহ্নিত করার কথা বলা হয়েছে। ২০২০ সালে শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বেশি ঘটেছে সোমালিয়া, ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অব কঙ্গো, আফগানিস্তান, সিরিয়া ও ইয়েমেনে।
জাতিসংঘের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে গতবছর আট হাজার ৫২১ জন শিশুসেনা ব্যবহার করা হয়েছে যুদ্ধক্ষেত্রে। এ সময়ে দুই হাজার ৬৭৪ জন শিশু নিহত এবং পাঁচ হাজার ৭৪৮ শিশু আহত হয়েছে। শিশু অধিকার ক্ষুণ্ন করছে যুদ্ধরত এমন গোষ্ঠী বা সংস্থার একটি কালো তালিকাও প্রতিবেদনে রাখা হয়েছে। শিশু সুরক্ষা নিশ্চিতে দেশগুলোর ওপর চাপ সৃষ্টিই মূলত এই তালিকার লক্ষ্য। যদিও অনেকদিন ধরে এই তালিকাটি নিয়ে বিতর্ক চলছিল। কারণ সৌদি আরব এবং ইসরায়েলের পক্ষ থেকে চাপ ছিল তালিকায় যেন তাদেরকে না রাখা হয়। ইসরায়েল কখনও এই কালো তালিকায় ছিল না। অন্যদিকে ইয়েমেন যুদ্ধে শিশুদের হতাহত করার ঘটনায় প্রথমবারের মতো নাম আসার কয়েকবছর পর সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটকেও ২০২০ সালের কালো তালিকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
বিতর্ক এড়াতে ২০১৭ সালের গুতেরেসের প্রতিবেদনে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর দুইটি তালিকা প্রকাশ করা হয়। একটি তালিকায় রাখা হয় শিশু সুরক্ষা নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়া পক্ষকে, অন্যটিতে থাকে সুরক্ষা পদক্ষেপ না নেওয়া পক্ষগুলো। সোমবার যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে উল্লেখযোগ কিছু পরিবর্তন এসেছে। শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিচ্ছে না, এমন রাষ্ট্রীয় বাহিনীর তালিকায় মিয়ানমার ও সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর নাম উঠে এসেছে এতে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে শিশু হত্যা, তাদের পঙ্গু করা এবং যৌন সহিংসতার অভিযোগ।
আর সিরিয়ান বাহিনীর বিরুদ্ধে শিশু সৈনিক নিয়োগ, হত্যা, পঙ্গু করা, যৌন সহিংসতার পাশাপাশি স্কুল এবং হাসপাতালে হামলার অভিযোগ রয়েছে।