অনলাইন ডেস্ক ॥ ইরান পরমাণু সমঝোতায় দেয়া নিজের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করছে কিনা সে সম্পর্কে মন্তব্য করা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা বা আইএইএ’র দায়িত্ব নয়। আমেরিকা সফররত আইএইএ’র মহপরিচালক রাফায়েল গ্রোসি এ মন্তব্য করেছেন।
সম্প্রতি তিনি একটি মার্কিন থিংক ট্যাংকে দেয়া বক্তৃতায় বলেন, পাশ্চাত্যের সঙ্গে ইরান যে পরমাণু সমঝোতা সই করেছে সে ব্যাপারে আইএইএ নিরপেক্ষতা বজায় রাখবে। তিনি বলেন, ইরান পরমাণু সমঝোতার ধারাগুলো মেনে চলছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখার দায়িত্ব রয়েছে তার সংস্থার; তবে এ ব্যাপারে আইএইএ কোনা মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকবে।
গ্রোসি আরো বলেন, ইরানের প্রতিটি পরমাণু স্থাপনার ক্ষুদ্রতম তৎপরতাকে তার সংস্থা নজরদারিতে রেখেছে। এ ছাড়া, গ্রোসি মার্কিন দৈনিক ফিনান্সিয়াল টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে দাবি করেন, ইরান পরমাণু সমঝোতার ধারাগুলো মেনে চলবে না বলে ঘোষণা দেয়ার পর এখনো দেশটি তার জন্য নির্ধারিত ইউরেনিয়ামের মজুদের পরিমাণ বাড়ায়নি।
আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ২০১৫ সালের জুলাই মাসে পরমাণু সমঝোতা সই করেছিল যা ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাস থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর ২০১৮ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে তার দেশকে এ সমঝোতা থেকে বের করে নেন।
এ অবস্থায় সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী তিন ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি ইরানকে পরমাণু সমঝোতা টিকে থাকার আহ্বান জানিয়ে ঘোষণা করে, তারা এ সমঝোতা থেকে ইরানকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সুবিধা দেবে। কিন্তু এসব দেশ তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে না পারায় ২০১৯ সালের মে মাস থেকে ধাপে ধাপে নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন স্থগিত রাখে ইরান। গত ৫ জানুয়ারি সর্বশেষ পঞ্চম ধাপে তেহরান ঘোষণা করে, দেশটি আপাতত পরমাণু সমঝোতার কোনো বাধ্যবাধকতা মেনে চলবে না।
তবে ইরান একথাও বলে রেখেছে যে, আমেরিকা পরমাণু সমঝোতায় ফিরে এলে এবং ইউরোপীয়রা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করলে তেহরানও আবার এ সমঝোতার ধারাগুলো মেনে চলতে শুরু করবে।