
ছবি: সংগৃহীত
পারমাণবিক কর্মসূচিকে এগিয়ে নিতে ইরানকে অর্থায়নের ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান পরমাণু আলোচনা চলাকালেই মস্কোর এমন ঘোষণা এসেছে। এরই মধ্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তৃতীয় দফার বৈঠকও কোনও ফলাফল ছাড়াই শেষ হয়েছে। দুই দেশ আবারো আলোচনায় বসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
অন্যদিকে ইরানের দক্ষিণাঞ্চলের শহীদ রাজাই বন্দরে রাসায়নিক ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান এই দুর্ঘটনার গভীর তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত জানুয়ারিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে কৌশলগত একাধিক চুক্তিতে সই করেছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ২০ বছরের এই চুক্তির আওতায় শিক্ষা, প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা ও শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি সহ একাধিক খাতে ইরানকে সহযোগিতা করবে রাশিয়া। চুক্তি বাস্তবায়নে সম্প্রতি একটি আইনও পাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন। ২৫ এপ্রিল ইরানের সরকারি সংবাদমাধ্যম নূর নিউজ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ইরানের জ্বালানি মন্ত্রী মহসেন পাকনেজাদ জানিয়েছেন, নতুন একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অর্থায়ন করবে রাশিয়া। একইসঙ্গে বুশেহর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের কাজেও রাশিয়ার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। এ লক্ষ্যে ইরান গ্যাস সরবরাহ সংস্থা গ্যাজপ্রমের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করতে কাজ করছে।
পাকনেজাদ আরও বলেন, রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি করে ইরান আঞ্চলিক গ্যাস হাবে পরিণত হওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে। এর ফলে অন্যান্য দেশে গ্যাস রপ্তানির জন্য ট্রানজিট সুবিধা বাড়ানোর কাজও চলমান রয়েছে।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন, যার ফলে তেহরানের জ্বালানি রপ্তানি কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখন ইরান পশ্চিমা দেশগুলোর উপর নির্ভরতা কমিয়ে জ্বালানি বাজারে ভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয়ভাবে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
পরমাণু ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সরাসরি সমঝোতা এখনো সম্ভব হয়নি। ২৬ এপ্রিল ওমানের মাসকাটে অনুষ্ঠিত তৃতীয় দফার পরোক্ষ বৈঠকও কোনও চুক্তি ছাড়াই শেষ হয়েছে। তবে আগামীতে আবারো আলোচনায় বসার দিনক্ষণ ঠিক করেছে উভয় পক্ষ। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাকজি জানিয়েছেন, আলোচনায় গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হলেও এখনও কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য রয়ে গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।
এদিকে ২৬ এপ্রিল, যখন আলোচনার প্রচেষ্টা চলছিল, তখনই ইরানের শহীদ রাজাই বন্দরে রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনারে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে অন্তত ৮০০ জন। ইরানের ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট সংস্থা জানিয়েছে, নিম্নমানের রাসায়নিক পদার্থ মজুদ থাকার কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্তে ইতোমধ্যে একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করেছে সরকার।
ভিডিও দেখুন: https://www.youtube.com/watch?v=kokaoooCus4
এম.কে.