ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২

বাতাসে পোড়া লাশের গন্ধ, ৩২ ফিলিস্তিনি নিহত

গাজায় ২৪ ঘণ্টা নারকীয় হামলা

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

গাজায় ২৪ ঘণ্টা নারকীয় হামলা

ধ্বংসপ্রাপ্ত বুলডোজারের পাশে গাজার বাসিন্দারা

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরাইলি বাহিনী নারকীয় হামলার মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। এবার তারা বিমান হামলা চালিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে মৃতদের উদ্ধারে ব্যবহৃত সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে। এ ছাড়া গাজার বিভিন্ন স্থানে গত ২৪ ঘণ্টা বেসামরিক লোকদের লক্ষ্য করে নারকীয় হামলা চালিয়ে ৩২ ফিলিস্তিনিকে হত্যা হরেছে দখলদাররা। এর মধ্যে খান ইউনিসে বাড়ির ভেতরে ১১ জন পুড়ে মারা গেছে। ওই বাড়ির আশপাশের বাতাসে পোড়া লাশের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। একই দিন পশ্চিম গাজা সিটিতে আশ্রয় নেওয়া বাড়িতে বিমান হামলায় একই পরিবারের সাত সদস্য নিহত হন। নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে একদল লোককে লক্ষ্য করে ইসরাইলি বিমান হামলায় দুই মেয়েসহ তিন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। খবর আলজাজিরার।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনী মধ্যরাতে গাজা শহরের আল তুফাহ পাড়ায় অবস্থিত আল দুররা শিশু হাসপাতালের আইসিইউতে গোলাবর্ষণ করেছে। টেলিগ্রামে একটি পোস্টে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি বিমান হামলায় ওই হাসপাতালের সৌর প্যানেলও ধ্বংস হয়ে গেছে। এদিকে গাজার বর্তমান অবস্থা যেন এক বন্দি শিবিরে রূপ নিয়েছে। ইসরাইলি বাহিনী উপত্যকার প্রধান সংযোগ সড়কগুলো বন্ধ করে ফেলার পাশাপাশি গাজাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে ফেলেছে। গাজার মোট ভূখণ্ডের ৬৯ শতাংশকেই ‘নো-গো জোন’ হিসেবে ঘোষণা করেছে দখলদার ইসরাইল। যেখানে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা প্রবেশ তো দূরের কথা, নড়াচড়াও করতে পারছে না। সংঘাতময় এই প্রেক্ষাপটে ইসরাইলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সরকার যুদ্ধবিরতির সময় মুক্তিপ্রাপ্ত ফিলিস্তিনি বন্দিদের পুনরায় গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করছে, যেন হামাসের ওপর চাপ আরও বাড়ানো যায়। গাজায় অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। টানা ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। হামলার পাশাপাশি ইসরাইল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে। এর ফলে গাজায় বহু মানুষ দুর্ভিক্ষের মুখে পড়েছেন। আর এবার ইসরাইলের বাধায় গাজায় পোলিও টিকা প্রবেশ বন্ধ হয়ে গেছে।
এতে ঝুঁকিতে পড়েছে গাজার ৬ লাখেরও বেশি শিশু। ইসরাইল পোলিও টিকা গাজায় প্রবেশ করতে না দেওয়ায় ৬ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু ভয়াবহ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, টিকা ঢুকতে না দেওয়ার কারণে পোলিও প্রতিরোধে শুরু হওয়া চতুর্থ পর্যায়ের ক্যাম্পেন বন্ধ হয়ে গেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, টিকা সরবরাহ অব্যাহত না থাকলে ৬ লাখ ২ হাজারের বেশি শিশু আজীবনের জন্য পক্ষাঘাতগ্রস্ত বা স্থায়ীভাবে অক্ষম হয়ে পড়তে পারে। মন্ত্রণালয় আরও জানায়, গাজার শিশুদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতি বর্তমানে নজিরবিহীন ও ভয়াবহ। কারণ সেখানে যথাযথ পুষ্টি ও নিরাপদ খাবার পানির পুরোপুরি অভাব রয়েছে।

প্যানেল

×