
ছবি: সংগৃহীত
অবশেষে মধ্যপ্রাচ্যে নতুন এক জোটের ইঙ্গিত মিলছে— এক হচ্ছে ইরান ও তুরস্ক। এই ঐক্য শুধু দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক নয়, বরং একটি শক্তিশালী জোটের ইঙ্গিত দিচ্ছে যা ফিলিস্তিনকে আর একা রাখবে না। এই খবরে আশার আলো দেখছেন গাজাবাসী, আর তা যেন উৎসবে রূপ নিচ্ছে বিশ্বের মুসলিম জনগণের মনে।
গত শনিবার, ১২ মার্চ, তেহরানে ইরান-তুরস্ক উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাইয়েদ খতিবজাদে জানান, খুব শিগগিরই তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান ইরান সফরে যাচ্ছেন। তার ভাষ্য অনুযায়ী, এই সফর ‘সাধারণ কোনও সফর নয়’— বরং এটি বহুদূর প্রসারী সিদ্ধান্ত ও কৌশলগত পরিবর্তনের পূর্বাভাস।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই সফর কেবল কূটনৈতিক সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং একটি বড় ধরনের ঘোষণা বা চুক্তির ‘ট্রেইলার’। কারণ, বর্তমানে ইরান একদিকে পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চাপা টানাপোড়নের মধ্যে রয়েছে, অন্যদিকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের আবেগ সংযুক্ত। ফলে এই দুই পরাশক্তির সমন্বয় মধ্যপ্রাচ্যের রাজনৈতিক মানচিত্রে বড় পরিবর্তন আনতে পারে।
তুরস্ক ইতিমধ্যেই নিজস্ব সামরিক প্রযুক্তি যেমন টাইফুন ক্ষেপণাস্ত্র, আতমাকা ক্রুজ মিসাইল ও হিসার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে একটি হেভিওয়েট প্রতিরোধ শক্তিতে পরিণত হয়েছে। অন্যদিকে ইরান, তার দৃঢ় প্রতিরক্ষা নীতি ও কূটনৈতিক তৎপরতায় চমকপ্রদ দক্ষতা দেখিয়েছে বারবার। দুই দেশের এই মিলিত অবস্থান শুধু বিবৃতি নয়, বাস্তব পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষমতা রাখে।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ইরান-তুরস্কের এই আসন্ন ঐক্য ফিলিস্তিন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ চাপ তৈরি করতে পারে। এটি হতে পারে এমন এক উচ্চমাত্রার কূটনৈতিক মঞ্চ, যা দীর্ঘমেয়াদে মুসলিম বিশ্বের জন্য একটি সাহসী অবস্থান তৈরি করবে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে— তবে কি মধ্যপ্রাচ্যে একটি নতুন শক্তিধর ব্লকের উত্থান ঘটছে? ইরানের স্থিরতা আর তুরস্কের কৌশলগত প্রবলতা একত্রিত হয়ে গড়ে তুলতে পারে এমন এক বলয়, যেখানে জালেম শক্তির কোনও ঠাঁই থাকবে না। বিশ্লেষকদের মতে, এই ঐক্যই হতে পারে ফিলিস্তিনের দীর্ঘদিনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে একটি কার্যকর আন্তর্জাতিক প্রতিরোধের সূচনা।
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/BSHTTWxeXk8?si=n679hFEXvZfaC2CT
এম.কে.