ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

ইসরায়েলের পতন নিয়ে পবিত্র কোরআনে যে ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে

প্রকাশিত: ০৭:৫৭, ১১ এপ্রিল ২০২৫

ইসরায়েলের পতন নিয়ে পবিত্র কোরআনে যে ভবিষ্যদ্বাণী রয়েছে

ইসরাইলের নৃশংস আগ্রাসনে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। এই বর্বরতার হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না নারী ও শিশুরাও। অথচ এই ভূমি ছিল অসংখ্য নবী ও রাসুলের পূণ্যভূমি। সেই পবিত্র ভূখণ্ডেই এখন চলছে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ। জনমনে প্রশ্ন জাগছে-ইসরাইলের হাত থেকে কবে মুক্তি পাবে ফিলিস্তিনিরা? আর এই ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের পতন নিয়ে কী বলা হয়েছে পবিত্র কোরআনে?

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার জেরে গাজায় নৃশংস গণহত্যা শুরু করেছে ইসরাইল। এরপর থেকেই গাজায় নির্বিচারে বোমা বর্ষণ ও হামলা চালিয়ে যাচ্ছে নেতা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বাহিনী। মাঝে কয়েকদিন যুদ্ধবিরতির পর আবারও হত্যাযোগ্যে মেতে উঠেছে তেল আবিব। মজলুমদের এই জনপদে অবিরাম বোমাবর্ষণে ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে অসহায় নারী ও শিশুদের দেহ। এই দৃশ্য নাড়িয়ে দিচ্ছে প্রতিটি বিবেকবান মানুষের হৃদয়। আর এসব বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ছে পৃথিবীর নানা প্রান্তে।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা যুগে যুগে বনী ইসরাইলের পাপ, নবীদের হত্যা এবং পৃথিবীতে ফিতনা-ফাসাদের জন্য তাদের কঠোর শাস্তির কথা বলে রেখেছেন। বনী ইসরাইল বারবার অপমানিত, লাঞ্ছিত ও ধ্বংস হয়েছে। কেয়ামত পর্যন্ত তাদের এই পরিণতি চলতে থাকবে। আর আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে নির্ধারিত এক শাস্তির সময় তাদের জন্য একদিন আসবেই।

পবিত্র কোরআনের সূরা বনী ইসরাইলের চার ও পাঁচ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-“আমি বনী ইসরাইলকে কিতাবে পরিষ্কারভাবে বলে দিয়েছি যে, তোমরা পৃথিবীর বুকে দুবার অনর্থ সৃষ্টি করবে এবং খুব বড় ধরনের অবাধ্যতায় লিপ্ত হবে। অতঃপর যখন প্রতিশ্রুতির প্রথম সময়টি এলো, আমি তোমাদের বিরুদ্ধে কঠোর যোদ্ধা পাঠালাম। আর তারা প্রতিটি জনপদের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়ল।”
এটি ছিল আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূরণের প্রথম ধাপ।

পরবর্তীতে সূরা বনী ইসরাইলের ছয় নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে-“তখন আমি তোমাদের জন্য তাদের বিরুদ্ধে পালা ঘুরিয়ে দিলাম। তোমাদের ধনসম্পদ এবং পুত্রসন্তান দ্বারা সাহায্য করলাম। এবং তোমাদের জনসংখ্যা বাড়িয়ে দিলাম। যেন তোমরা একটি বিরাট বাহিনীতে পরিণত হও।”

দ্বিতীয় ধ্বংসের সময় সম্পর্কে সূরা বনী ইসরাইলের সাত নম্বর আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন-“তখন আমি অন্য বান্দাদের পাঠাবো, যারা তোমাদের মুখমণ্ডল বিকৃত করবে এবং মসজিদে ঢুকে পড়বে, যেমন প্রথমবার ঢুকেছিল। তারা যেখানে জয়ী হবে, সেখানে সম্পূর্ণ ধ্বংস চালাবে।”

পরবর্তী আয়াতে মহান আল্লাহ তাআলা বলেন-“তোমরা যদি পুনরায় একই কাজ করো, আমি তখনও একইভাবে প্রতিশোধ নেব। আমি জাহান্নামকে কাফেরদের জন্য কয়েদখানা করে রেখেছি।”

বর্তমান বিশ্বের ঘটনাবলীতে অনেক মুফাসসিরের মতে, এই ভবিষ্যদ্বাণী বনী ইসরাইলের উপর দ্বিতীয় বিপর্যয়ের ঘটনা হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। তাদের ধারণা কোরআনে বর্ণিত ঐক্যহীনতা ও ধ্বংসের পথে ইসরাইল ইতোমধ্যেই পদচারণা শুরু করেছে। মুসলিম বিশ্বে তাদের নৃশংস কার্যকলাপের কারণে একদিন আল্লাহর পক্ষ থেকে চূড়ান্ত শাস্তি অবধারিত হয়ে উঠবে।


ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় জুলুম ও ফিতনার পথ যতই দীর্ঘ হোক, এর পরিণতি ধ্বংস। পবিত্র কোরআনের ভবিষ্যদ্বাণীতে ইসরাইলের যে পতনের বার্তা আছে, তা আজকের বাস্তবতার সাথে মিলে যাচ্ছে বহু ক্ষেত্রে। 


সূত্র:https://tinyurl.com/36sn3se2

আফরোজা

×