ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৯ মার্চ ২০২৫, ১৫ চৈত্র ১৪৩১

ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার দাবি

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

প্রকাশিত: ২০:৫৪, ২৬ মার্চ ২০২৫

গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ

হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার দাবিতে গাজায় বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি হামলা অব্যাহত রয়েছে। নিরলস এই হামলায় প্রতিদিনই ঘটছে বিপুলসংখ্যক প্রাণহানির ঘটনা। এমন অবস্থায় ভূখণ্ডটিতে বুধবার বিক্ষোভ করেছেন শত শত ফিলিস্তিনি। গাজার ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী হামাসের ক্ষমতা থেকে সরে যাওয়ার দাবিতে এই বিক্ষোভ করেছেন তারা। এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে ইসরাইলি হামলায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেকেই নারী ও শিশু। এছাড়া সিরিয়াতেও হামলা চালিয়েছে ইসরাইল। ওই হামলায় দেশটিতে প্রাণ গেছে ৬ জনের। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত আরেক দেশ ইয়েমেনেও মার্কিন বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে। খবর বিবিসি ও আলজাজিরার।
বুধবার গাজায় ইসরাইলি বাহিনী কমপক্ষে ৩৭ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অনেক শিশু এবং নারীও রয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজার বিরুদ্ধে ইসরাইলের যুদ্ধে কমপক্ষে ৫০ হাজার ১৪৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং আরও ১ লাখ ১৩ হাজার ৭০৪ জন আহত হয়েছেন। গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনিদের প্রাণহানির সংখ্যা আপডেট করে ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি উল্লেখ করে জানিয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ হাজার হাজার ফিলিস্তিনিকে মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। এদিকে গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত আল বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের একটি আবাসিক অ্যাপার্টমেন্টে ইসরাইলি বিমান হামলায় এক শিশু নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। শিশুবিষয়ক আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা সেভ দ্য চিলড্রেন বলেছে, গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বাহিনী পুনরায় যুদ্ধ শুরু করার পর এক সপ্তাহে ২৭০ জনের বেশি শিশু নিহত হয়েছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর গত কয়েক দিন শিশুদের জন্য সবচেয়ে প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে। সংস্থাটির গাজায় শিশুবিষয়ক পরিচালক র‌্যাচেল কামিংস বলেছেন-  বোমা পড়ছে, হাসপাতালগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে, শিশুদের হত্যা করছে এবং বিশ্ব নীরব। কোনো সহায়তা নেই, কোনো নিরাপত্তা নেই, ভবিষ্যৎ নেই। এ ছাড়া সিরিয়ায় ইসরাইলের বোমাবর্ষণ অব্যাহত রয়েছে। দেশটির ডেরায় চালানো এই হামলায় কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে কাতার ও সৌদি আরব। এদিকে ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় হামাসবিরোধী বৃহত্তম বিক্ষোভে শত শত মানুষ অংশ নিয়েছেন। তারা স্বাধীনতাকামী এই গোষ্ঠীর ভূখণ্ডের শাসন ক্ষমতা থেকে সরে আসার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। তবে মুখোশধারী হামাস যোদ্ধারা যাদের মধ্যে কেউ কেউ বন্দুক এবং কেউ কেউ লাঠিসোঁটা নিয়ে বিক্ষোভকারীদের থামানোর চেষ্টা করেন এবং জোরপূর্বক ছত্রভঙ্গ করে দেন। বিক্ষোভকারীদের হামাসবিরোধী স্লোগানও দিতে শোনা যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় হামাসের সমালোচনাকারী কর্মীদের ব্যাপকভাবে শেয়ার করা বেশ কিছু ভিডিওতে বুধবার উত্তর গাজার বেইত লাহিয়ার রাস্তায় যুবকদের মিছিল করতে দেখা গেছে। ভিডিওতে তাদের ‘বেরিয়ে যাও, হামাস বেরিয়ে যাও’ স্লোগান দিতে শোনা যায়। তবে হামাসপন্থি সমর্থকরা ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এই সশস্ত্র দলটিকেই সমর্থন করেছেন। তারা বিক্ষোভের তাৎপর্যকে খাটো করে দেখেছেন এবং অংশগ্রহণকারীদের বিশ্বাসঘাতক বলে অভিযোগ করেছেন।

×