
ছবি: সংগৃহীত
শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য সম্প্রতি কুয়েত বিবাহের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর নির্ধারণ করেছে, যা শিশু বিবাহ প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। তবে, আরব বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই, বিশেষ করে সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে, এই প্রচেষ্টা এখনও সফল হয়নি। ২০২৪ সালে কুয়েত তার ব্যক্তিগত আইন পরিবর্তন করে শিশু বিবাহের হার কমানোর চেষ্টা করেছে। তবে, তা সত্ত্বেও, আরব বিশ্বে শিশু বিবাহের প্রথা এখনও গভীরভাবে প্রতিষ্ঠিত রয়েছে।
কুয়েতের পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন, যেমন শিশু অধিকার সনদ এবং নারী বিরুদ্ধে সকল প্রকার বৈষম্য নির্মূল সনদের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তবে, আরব অঞ্চলের অনেক দেশে যুদ্ধ, দারিদ্র্য এবং সংস্কৃতিগত কারণে শিশুবিবাহ একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইয়েমেন, ইরাক, সিরিয়া, এবং অন্যান্য সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
বিশেষ করে, যুদ্ধ এবং বাস্তুচ্যুতির কারণে মেয়েরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে পরিবারগুলো নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে, এবং অনেক পরিবার তাদের মেয়েদের বাঁচাতে বা শোষণের হাত থেকে রক্ষা করতে শিশু বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয়। ইরাকে, একটি নতুন আইনের মাধ্যমে ৯ বছর বয়সী মেয়ে শিশুরাও বিবাহিত হওয়ার অনুমতি পাচ্ছে, যা আন্তর্জাতিক মহলে সমালোচিত হয়েছে।
শিশু বিবাহের নেতিবাচক প্রভাব শুধুমাত্র মেয়েদের জীবনে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের ভবিষ্যৎ, পরিবার এবং সমাজকেও ক্ষতিগ্রস্ত করে। এটি তাদের শিক্ষা বা কর্মসংস্থানের সুযোগকে বাধাগ্রস্ত করে, এবং গর্ভধারণ ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। অধিকাংশ সময়, শিশুবিবাহের কারণে তাদের জীবনে সহিংসতা এবং বৈষম্য বৃদ্ধি পায়।
অক্সফাম এবং ইউনিসেফের মতো সংস্থাগুলি এই সমস্যা প্রতিরোধে সচেতনতা তৈরি এবং নীতিগত পরিবর্তন আনার জন্য কাজ করছে। তারা সমাজে শিশু বিবাহের বিরোধিতা করছে এবং এই প্রথা বন্ধ করার জন্য দেশগুলোর আইন পরিবর্তনের জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এটি স্পষ্ট যে, কুয়েতের আইন সংশোধন কিছু আশা জাগালেও, এই অঞ্চলে শিশুবিবাহের বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য আরও অনেক কাজ বাকি। সাংস্কৃতিক চেতনা, আইনি ফাঁক এবং যুদ্ধকালীন পরিস্থিতির কারণে এই সমস্যা এখনো ব্যাপক। তবে, আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাগুলি এই ধরনের প্রথা বন্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, যা ভবিষ্যতে শিশুবিবাহের হার কমাতে সহায়তা করবে।
সূত্র: https://www.arabnews.com/node/2594529/middle-east
আবীর