ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু-সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান
ফিলিস্তিনকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে পুরো মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি। বছরখানেক আগে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকে এই অঞ্চলে উত্তেজনা কেবল বেড়েছেই। প্রতিবেশীরা এগিয়ে আসবে, এমন ধারণায় থাকলেও একা হয়ে পড়ছে দেশটি। দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা ফিলিস্তিন ইস্যুকে পাশ কাটিয়ে কয়েকটি মুসলিম দেশ ইতোমধ্যে ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ফেলেছে।
গুঞ্জন শোনা গেলেও সৌদি আরব এখনো পর্যন্ত ইসরায়েলের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধেনি। তবে সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা ও সৌদি যুবরাজের সর্বশেষ মন্তব্য উসকে দিচ্ছে সে সম্ভাবনাকে। অনেকে বলছেন, সৌদি আরব ইসরায়েলের কাছে নিজেকে বিক্রি করে দিয়েছে।
কয়েক বছর আগে সৌদি আরবের মিত্র সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ ইসরায়েলকে বন্ধু বানায়। তখন সৌদির সঙ্গেও ইসরায়েলের সম্পর্কের সুবাতাস বইতে শুরু করে। কিন্তু সৌদি সরকার হঠাৎ বলে বসে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব করবে না রিয়াদ।
গাজা যুদ্ধ বন্ধের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় সৌদি আরবকে খুব একটা সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যায়নি। এরই মধ্যে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে রীতিমতো বোমা ফাটাল যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য আটলান্টিক। তাদের দাবি, ফিলিস্তিন নিয়ে মোটেও মাথাব্যথা নেই সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনের সঙ্গে বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন সৌদি যুবরাজ। দ্য আটলান্টিকের বরাতে এমন খবর ছেপেছে মিডল ইস্ট আই।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সৌদির আল উলা শহরে যুবরাজ মোহাম্মদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ব্লিনকেন। তখন চলমান গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির সম্পর্ক স্থাপনের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এর কয়েক মাসে বেশ কিছু ঘটনায় মনে হয়েছিল, ইসরায়েলকে বন্ধু হিসেবে মেনে নিতে মানসিকভাবে প্রস্তুত রয়েছেন রিয়াদের কর্মকর্তারা।
তবে ৭ অক্টোবরের হামলায়, সে সুযোগ হাতছাড়া হয়। ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্বের বিষয়ে বৈঠকে সৌদি যুবরাজকে সরাসরি প্রশ্ন করে ব্লিনকেন। জবাবে যুবরাজ মোহাম্মদ বলেন, আমার দেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ আমার চেয়েও কম বয়সী। তাদের অধিকাংশই ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে বেশি কিছু জানত না। কিন্তু এই সংঘাতের মাধ্যমে তারা প্রথমবার এ বিষয়ে জানতে পারছে। এটা খুব বড় সমস্যা। ব্যক্তিগতভাবে ফিলিস্তিন ইস্যু নিয়ে আমি আগ্রহী না। কিন্তু আমার দেশের মানুষ আগ্রহী।
যদিও ওই সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে রিয়াদ। একজন সৌদি কর্মকর্তা বলেছেন, উভয় নেতার মধ্যে আলোচনা নিয়ে দ্য আটলান্টিকের বিরবণ অসত্য। যুবরাজ মোহাম্মদ প্রকাশ্যে বারবার বলে এসেছেন, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ছাড়া ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদি বন্ধুত্ব করবে না।
বারাত