ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

কমে যাবে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগিতা

প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে ব্রিটেন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০০:৪২, ৬ মার্চ ২০২৫

প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াচ্ছে ব্রিটেন

যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগেই যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর ঘোষণা

যুক্তরাষ্ট্র সফরের আগেই যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। বুধবার তিনি বলেছেন, ২০২৭ সালের মধ্যে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ২.৩ শতাংশ থেকে প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়িয়ে ২.৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে। এরপর ২০২৮ সালে তা আরও বাড়িয়ে ২.৬ শতাংশ করা হবে। খবর সিএনএনের।
ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই এই ঘোষণা এলো। ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সদস্যদের স্টারমার বলেন, আমাদের ইতিহাস, দেশ ও দলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো ভুল পথ বেছে নেওয়া যাবে না। আমরা আমাদের মিত্রদের মধ্যে কোনো বিভাজন মেনে নেব না। তিনি ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে দেশটির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপক্ষীয় জোট বলে অভিহিত করেন।

স্টারমার বলেন, এই সপ্তাহে আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করব। আমি স্পষ্ট করব, এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে চাই। স্টারমার প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৩ শতাংশে নেওয়ার লক্ষ্যও নির্ধারণ করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, এই লক্ষ্য অর্জন তখনই সম্ভব হবে, যখন অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনুকূলে থাকবে। ট্রাম্প ন্যাটো দেশগুলোর প্রতি প্রতিরক্ষা ব্যয় জিডিপির ৫ শতাংশে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন এবং ভবিষ্যতে ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র কাজ করবে না বলে স্পষ্ট করেছেন।

স্টারমার পার্লামেন্টে বলেন, এই সরকার শীতল যুদ্ধের পর থেকে প্রতিরক্ষা ব্যয়ে সবচেয়ে বড় ও স্থায়ী বৃদ্ধি শুরু করবে। এই ব্যয় বৃদ্ধির একটি অংশ অর্থায়ন করা হবে আন্তর্জাতিক উন্নয়ন খাতের বাজেট কমিয়ে। আগামী কয়েক বছরে এই খাতে ব্যয় জিডিপির ০.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ০.৩ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। স্টারমার বলেন, এটি এমন কিছু নয়, যা ঘোষণা করতে আমার ভালো লাগছে। তবে প্রতিরক্ষা ব্যয় বৃদ্ধি শুধু কঠোর সিদ্ধান্তের মাধ্যমেই অর্থায়ন করা সম্ভব।

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন খাতের বাজেট কমানোর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে এমন বেশ কয়েকটি দাতব্য সংস্থা স্টারমারের এই সিদ্ধান্তে হতবাক ও বিস্মিত হয়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করা দাতব্য সংস্থা ওয়াটারএইড এই সিদ্ধান্তকে বিশ্বজুড়ে দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের প্রতি নিষ্ঠুর বিশ্বাসঘাতকতা বলে অভিহিত করেছে।

সেভ দ্য চিলড্রেন ইউকের প্রধান নির্বাহী মোয়াজ্জাম মালিক এক বিবৃতিতে বলেন, এই বাজেট কাটছাঁট বর্তমান ও ভবিষ্যতে শিশুদের জন্য বিশ্বকে আরও বিপজ্জনক করে তুলবে। দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী নারী ও মেয়েদের নিয়ে কাজ করা দাতব্য সংস্থা অ্যাকশনএইড ইউকের সহ-প্রধান নির্বাহী হানা বন্ড এই সিদ্ধান্তকে অবিবেচনাপ্রসূত উল্লেখ করে বলেন, ভূরাজনৈতিক উন্নয়ন মোকাবিলায় বিশ্বের সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে বারবার পরিত্যাগ করার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

×