ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ মার্চ ২০২৫, ১৯ ফাল্গুন ১৪৩১

ইউরোপের রক্ষাকর্তা এখন এরদোয়ান!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০১:৪৪, ৩ মার্চ ২০২৫; আপডেট: ০২:০৮, ৩ মার্চ ২০২৫

ইউরোপের রক্ষাকর্তা এখন এরদোয়ান!

এরদোয়ান

ইউরোপ, এশিয়া আর আফ্রিকার বিস্তৃত অংশ নিয়ে গড়ে উঠা তুরস্কের অটোমান সাম্রাজ্যের সামনে এক সময় কাঁপতো গোটা বিশ্ব। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভেঙ্গে পড়ে সেই সাম্রাজ্য। বহু বছর পর তুরস্কের দায়িত্ব নিয়ে অটোমানের সেই আদিপত্য আবারো ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেন প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান।

একের পর এক সংঘাত যুদ্ধে ইউরোপ যখন ধুকছে। তখন তুরস্কের প্রতিপত্তি বেড়েছে পাল্লা দিয়েছে। ট্রাম্পের সাথে বিভেদের জেরে ইউরোপের নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতিতে অঞ্চলটির রক্ষাকর্তা হয়ে উঠতে পারেন এরদোয়ান।

এক বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, এক মাত্র তুরস্কই পারে ইউরোপকে বাঁচাতে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রশাসনের প্ররোচনায় শুরু হওয়া ইউক্রেন যুদ্ধে হাজার হাজার কোটি ডলার ব্যয় করেছে ইউরোপের দেশগুলো। ইউরোপের নিরাপত্তার অজুহাতে যুদ্ধের চার বছরে ইউক্রেনকে সহায়তায় এখন নিজেরাই ধুকছে দেশগুলো। এর মধ্যেই ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে ইউরোপকে বাদ দিয়ে সরাসরি রাশিয়ার সাথে বসছেন যুদ্ধ বন্ধের আলোচনায়।

প্রতিরক্ষা ও সামরিক বরাদ্ধ এবং সহায়তা তুলে নেওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র ন্যাটো থেকে সরে যেতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যেকোন সময়ের চেয়ে ভঙ্গুর ইউরোপিও ইউনিয়নকে দিয়েছেন নিষেধাজ্ঞার ঘোষনা।

ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁর মতো নেতারা ট্রাম্পের দোয়ারে ঘুরলেও পাত্তা পাননি। নিরাপত্তা আর অর্থনীতির ধুকতে থাকায় অবস্থায় ইউরোপিয়ন ইউনিয়ন রয়েছে ধ্বংসের মুখে। এমন পরিস্থিতিতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট  এরদোয়ান দিয়েছেন চমক জাগানো এক বার্তা। জানিয়েছেন তুরস্ককে ইউয়ের পূর্ণসদস্যের মর্যাদাই এখন অনিবার্য পতন থেকে বাঁচাতে পারে। অচল অবস্থায় ভেঙ্গে পড়ার অর্থনীতি থেকে শুরু করে সামরিক প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ইউরোপের লাইফলাইন হয়ে উঠতে পারে তুরস্ক।

অটোম্যান সাম্রাজ্যের পতনের পর তুরস্ক যখন নিজেকে গড়ে তুলতে শুরু করে। তখন দেশটিকে নিয়ে হাসি -তামাশা করতো ইউরোপের প্রভাশালী দেশগুলো। এমনকি ইউরোপের রুগ্ন মানুষের খেতাবও জুটে তুস্কের নামের পাশে। পশ্চিমা উন্নত দেশগুলো যেন স্বীকৃতি ও মর্যাদাই দিতে চাইতো না মুসলিম দেশটিকে।

ন্যাটোর সদস্য হলেও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম পেতেও হতো এরদোয়ানের দেশটিকে। তবে কয়েক দশকের ব্যবধানে সময় এখন পুরো ঘোরে গেছে। পশ্চিমাদের দ্বারস্থ এবং  অনুগ্রহের বদলে নিজেদের ভাগ্য নিজেরা গড়ে তুলেছে তুরস্ক। ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইউরোপ যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে কাড়ি কাড়ি অর্থ খরচ করছে। তখন ন্যাটো দেশ হয়েও রাশিয়ার সাথে সুসম্পর্ক রেখেছে তুরস্ক। জ্বালানী, জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি নিয়ে জামানী, ফ্রান্স, ব্রিটেনসহ পুরো ইউরোপের অর্থনীতি যখন ধুকছে তখন এরদোয়ানের নেতৃত্বে ফুলে ফেপে উঠছে তুরস্কের অর্থনীতি।

শুধু অর্থনীতিই নয়। এরদোয়ানের নেতৃত্বে এখন বিশ্বের অন্যতম পরাশক্তিতে পরিণত হয়েছে তুরস্ক। দেশটির অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান ড্রোন আর ট্যাংক দাঁপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্ব। কূটনৈতিকভাবেও তুরস্কের ভুমিকা ধরাছুঁয়ার বাইরে। স্বয়ং ট্রাম্পও ক্ষমতায় আসার পর স্বীকার করে নিয়েছেন। তুরস্কের আধিপত্য জানিয়েছেন সিরিয়ার মতো পুরো মধ্যপ্রাচ্চ্যে এরদোয়ানের প্রভাবের কথাও।

শহীদ

×