
তুরস্কের সঙ্গে ৪০ বছরের সংঘাতের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে নিষিদ্ধ ঘোষিত বিদ্রোহী গোষ্ঠী কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। গোষ্ঠীটি বলেছে, কারাবন্দি কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালানের অস্ত্র সমর্পণের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা তুরস্কের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়ন করবে। খবর আলজাজিরার।
পিকেকে নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ফিরাত নিউজ এজেন্সি (এএনএফ) শনিবার গোষ্ঠীটির যুদ্ধবিরতির এই ঘোষণার খবর প্রকাশ করেছে। এই ঘোষণাকে তুরস্কের সঙ্গে গোষ্ঠীটির ৪০ বছরের সংঘাতের অবসানে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ২৭ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দি কুর্দি নেতা আবদুল্লাহ ওকালান তার অনুসারী যোদ্ধাদের অস্ত্র সমর্পণের নির্দেশ দেন। সেইসঙ্গে তুর্কি রাষ্ট্রের সঙ্গে কয়েক দশকের সংঘাতের অবসানের লক্ষ্যে পিকেকেকে বিলুপ্ত করার আহ্বানও জানান। এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পিকেকে ও তুর্কি রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টির একটি প্রতিনিধিদল আবদুল্লাহ ওকালানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে কারাগারে যান। যেখানে তিনি ১৯৯৯ সাল থেকে বন্দি রয়েছেন। প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের পর ওকালান একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে পিকেকেকে অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি অস্ত্র সমর্পণের আহ্বান জানাচ্ছি এবং আমি এই আহ্বানের ঐতিহাসিক দায়িত্ব গ্রহণ করছি। কুর্দিপন্থি ডিইএম পার্টির প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনাদের দলের কংগ্রেস বা সম্মেলন আহ্বান করুন এবং সিদ্ধান্ত নিন। সব গোষ্ঠীকে তাদের অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে এবং পিকেকেকে অবশ্যই বিলুপ্ত হতে হবে। একইসঙ্গে তিনি কুর্দিদেরকে রাষ্ট্র ও সমাজের সঙ্গে মিলিত হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পিকেকে নেতার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানায় তুরস্ক সরকার। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ক্ষমতাসীন একে পার্টির ডেপুটি চেয়ারম্যান এফকান আলা বলেন, পিকেকে যদি অস্ত্র সমর্পণ করে এবং নিজেদের বিলুপ্তির ঘোষণা দেয় তাহলে এই দেশ শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হবে। আলা আরও বলেন, সরকার আশা করছে পিকেকে যোদ্ধারা ওকালানের আহ্বান মেনে নেবে। ১৯৮৪ সালে কুর্দিদের জন্য একটি পৃথক আবাসভূমি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে লড়াই শুরু করে পিকেকে। সেই লড়াইয়ে এখন পর্যন্ত ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। পরে কুর্দিরা তাদের বিচ্ছিন্নতাবাদী লক্ষ্য থেকে সরে এসে দক্ষিণ-পূর্ব আনাতোলিয়ায় একটি স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল এবং কুর্দিদের জন্য বৃহত্তর অধিকারের দাবি জানাতে থাকে।