রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে সামরিক ও অন্যান্য খাতে সহায়তা বাবদ মোট যে অর্থ প্রদান করেছে ওয়াশিংটন তা প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনকে সহায়তা বাবদ ২০ হাজার কোটি ডলার প্রদান করা হয়েছে বলে যে অভিযোগ ট্রাম্প করেছেন, তা সঠিক নয়। গত মাসে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, আমরা এ পর্যন্ত ইউক্রেনকে ২০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি পরিমাণ অর্থ সহায়তা প্রদান করেছি। এই পরিমাণ অর্থ ইউরোপীয় ইউনিয়নও দেয়নি। খবর অরটির।
সম্প্রতি মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন জেলেনস্কি। সেখানে ট্রাম্পের এই মন্তব্য সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, সামরিক সহায়তা বাবদ যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইউক্রেন ২০ হাজার কোটি ডলার গ্রহণ করেছে এটি সঠিক তথ্য নয়। সহায়তার এই বিপুল অর্থ কোথায় গিয়েছে আমি জানি না। এমন হতে পারে যে মার্কিন প্রশাসনের কাগজপত্রে এই সংখ্যা লিখিত আছে। আমি ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তর্ক করতে চাই না এবং ওয়াশিংটন আমাদের জন্য এ পর্যন্ত যা যা করেছে, সেজন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্র ও সেখানকার জনগণের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। কিন্তু সত্য হলো, যে আমরা যুদ্ধের শুরু থেকে এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে প্রায় ৭ হাজার ৬০০ কোটি ডলার পেয়েছি। এই সহায়তার মধ্যে নগদ অর্থের পরিমাণ ছিল খুবই কম। ৭ হাজার কোটিরও বেশি ডলার সমমূল্যের অস্ত্র ও গোলবারুদ দেওয়া হয়েছে। এমনটা হতেই পারে যে ইউক্রেনে হয়তো যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক মানবিক সহায়তা বিষয়ক প্রকল্প আছে। যেগুলোর ব্যাপারে আমি হয়তো অবগত নই। কিন্তু আমি সত্যিই জানি না যে সহায়তার এই ২০ হাজার কোটি ডলার কোথায় গেল।
এদিকে দক্ষিণ রাশিয়ার জ্বালানি স্থাপনাগুলোর ওপর ডজনখানেক ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। সোমবার চালানো হামলায় রাশিয়ার একটি প্রধান তেল শোধনাগার ও গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্রে আগুন ধরে যায়। এছাড়া ভোলগা থেকে ককেশাস পর্বতমালা পর্যন্ত ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয় বলে জানিয়েছেন রাশিয়া ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তাদের বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিট রুশ ভূখণ্ডে মোট ৭০টি ইউক্রেনীয় ড্রোন ভূপাতিত করেছে। এর মধ্যে ২৫টি ভোলগোগ্রাদ, ২৭টি রোস্তভ ও ৭টি আস্ত্রাখান অঞ্চলে ধ্বংস করা হয়েছে। ড্রোনের ধ্বংসাবশেষের কারণে একটি তেল শোধনাগারে আগুন লাগে বলে জানান ভোলগোগ্রাদ গভর্নর আন্দ্রেই বোচারভ।
তবে তিনি নির্দিষ্ট করে বলেননি কোন শোধনাগারটি আগুনে পুড়েছে। রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান লুকওয়েলের একটি শোধনাগারের কাছে একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।