তীব্র সংকটে পড়েছে জার্মান অর্থনীতি। চলতি বছর দেশটির জিডিপি সংকুচিত হতে পারে শূন্য দশমিক এক শতাংশ। বিডিআই ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন এ তথ্য জানিয়েছে। জার্মানির একত্রীকরণের পর এই প্রথম তিনবার কম জিডিপি প্রবৃদ্ধি দেখতে যাচ্ছে দেশটি। খবর রয়টার্সের।
বিডিআই জানিয়েছে, ইউরোজোনের প্রবৃদ্ধি হতে পারে এক দশমিক এক শতাংশ। একই সময়ে বিশ্বের প্রবৃদ্ধি হতে পারে তিন দশমিক দুই শতাংশ। ইউরোপে যেসব দেশ পিছিয়ে থাকবে তার মধ্যে জার্মানি অন্যতম। বিডিআই প্রেসিডেন্ট পিটার লেইবিঙ্গার বার্লিনে বলেছেন, পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। বিশেষ করে শিল্পের প্রবৃদ্ধি কাঠামোগত ব্রেকের সম্মুখীন হয়েছে। বিদেশ থেকে ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতা, উচ্চ জ্বালানি খরচ, এখনো উচ্চ সুদের হার এবং অনিশ্চিতয়তা জার্মান অর্থনীতিতে মারত্মক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৪ সালে টানা দ্বিতীয়বারের মতো দেশটির অর্থনীতি সংকুচিত হয়। লেইবিঙ্গার বলেছেন, জার্মানির অর্থনৈতিক সংকট মহামারি বা ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের ফলাফলের চেয়েও বেশি কিছু। তা ছাড়া সমস্যাগুলো নিজেদের তৈরি ও ২০১৮ সাল থেকে কাঠামোগত দুর্বলতার ফলাফল, যা সরকারগুলো মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের অর্থনীতির রূপান্তর ও স্থিতিস্থাপকতায় সরকারি বিনিয়োগ জরুরিভিত্তিতে প্রয়োজন। এ ছাড়াও আমলাতন্ত্র হ্রাস ও জ্বালানির দাম কমানোর পাশাপাশি জার্মান উদ্ভাবন এবং গবেষণা ল্যান্ডস্কেপকে শক্তিশালী করার জন্য একটি স্পষ্ট কৌশলের আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এদিকে জার্মানির সরকার ও প্রধান বিরোধী শিবির রাজনৈতিক আশ্রয় ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক বিষয়ে সংস্কারের লক্ষ্যে প্রাথমিক আলোচনা চালিয়েছে। বিরোধীরা জার্মানিতে প্রবেশ আরও কঠিন করতে চায়। জোলিঙেনের ঘটনার পর থেকে জার্মানির রাজনৈতিক জগতে রাজনৈতিক আশ্রয় ও নিরাপত্তার বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। সেই সঙ্গে গত রবিবার পূর্বের দুটি রাজ্যে নির্বাচনে মূল স্রোতের রাজনৈতিক দলগুলোর খারাপ ফলাফল অবৈধ অনুপ্রবেশ, আশ্রয়ের আবেদন নাকচ হওয়ার পর বিদেশীদের প্রত্যর্পণ, অপরাধ দমনে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার তাগিদ আরও বেড়ে গেছে। জার্মানির জোট সরকারের তিন শরিক দল ও প্রধান বিরোধী ইউনিয়ন শিবিরের দুই দল প্রথমবারের মতো সে বিষয়ে আলোচনা করেছে। এর আগে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার প্রস্তাবিত পদক্ষেপের এক খসড়া প্রকাশ করেছিল। তার ভিত্তিতেই প্রাথমিক আলোচনা হয়। সরকার ও বিরোধী প্রতিনিধিরা সে বিষয়ে বিস্তারিত মন্তব্য না করলেও এই উদ্যোগকে ইতিবাচক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।