ওলাফ শলজ
জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলজ তার মন্ত্রিসভার অর্থমন্ত্রীকে বরখাস্ত করার পর বৃহস্পতিবার দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকারের পতন ঘটেছে। এর ফলে আগাম নির্বাচনের পথ খুলে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর ইউরোপের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশটিতে এ রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সূচনা হয়। খবর রয়টার্সের।
ফ্রি ডেমোক্র্যাটস (পিডিপি) পার্টির খ্রিস্তিয়ান লিনডনকে পদচ্যুত করার পর শলজ তার সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটসের সঙ্গে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল গ্রিন্সদের নিয়ে একটি সংখ্যালঘু সরকারের নেতৃত্ব দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ সময় আইন পাস করার জন্য তাকে পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের সমর্থনের ওপর নির্ভর করতে হবে। শলজ আগামী ১৫ জানুয়ারি পার্লামেন্টে আস্থা ভোট আয়োজনের পরিকল্পনা করেছেন আর তা মার্চের শেষ নাগাদ আগাম নির্বাচনের সূচনা ঘটাতে পারে। শলজ জানিয়েছেন, তিনি বাজেট পাস ও সামরিক ব্যয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে বিরোধী রক্ষণশীলদল নেতা ফ্রিদিরিখ ম্যাথসের সমর্থন চাইবেন।
এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথসের এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানানোর কথা রয়েছে। জরিপগুলোতে রক্ষণশীল দল সবাইকে ছাড়িয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে। বাজেট নীতি ও জার্মানির অর্থনীতির গতিমুখ নিয়ে শলজের তিন দলীয় জোট সরকারের মধ্যে কয়েক মাস ধরে বিবাদ চলছে, এর ফলেই তার সরকারের পতন ঘটেছে। গত কয়েক দিনের জরিপে দেখা যায়, শলজ সরকারের জনপ্রিয়তা নি¤œমুখী আর কট্টর ডানপন্থি আর কট্টর বামপন্থিদের শক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। শলজ জানিয়েছেন, বাজেট নিয়ে বিতর্কের মধ্যে লিনডনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী মনোভাবের জন্য তাকে পদচ্যুত করেছেন তিনি।
এই মন্ত্রী দেশের চেয়েও দলকে প্রাধান্য দেন এবং মিথ্যা অজুহাতে আইন আটকে রাখেন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। শলজ জানিয়েছেন, ২০২৫ সালের বাজেটে এক হাজার কোটি ইউরোর ঘাটতির মোকাবিলা করার জন্য একটা পরিকল্পনা অর্থমন্ত্রীকে দিয়েছিলেন। এই পরিকল্পনা নিয়ে মতবিরোধের জেরেই জোটে ভাঙন ধরল। গত সপ্তাহে লিনডন একটি নথি প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি আর্থিক প্রস্তাবের একটা তালিকা দেন, যা অন্য দলগুলো মানেনি।
তার মধ্যে ছিল জনকল্যাণে খরচ ছাঁটাই করা, পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে খরচ ছাঁটাই করা, কোম্পানিগুলোর কর কম করার প্রস্তাব কার্যকর করা নিয়ে দলগুলোর মধ্যে মতৈক্য হয়নি। শলজ বলেন, এফডিপি নেতা তার নতুন প্রস্তাব কার্যকর করার কোনো ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। অথচ ওই প্রস্তাবগুলো ছিল দেশের জন্য জরুরি ও ভালো। দেশের ক্ষতি হোক এটা তিনি চাননি।
শলজ বলেন, তিনি প্রস্তাব দিয়েছিলেন বিদ্যুতের দাম কমানোর জন্য, কোম্পানিগুলোকে সাহায্য করার জন্য, গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানিতে কর্মরতদের চাকরি বাঁচাতে বাড়তি ঋণ নেওয়া হোক। তিনি বিনিয়োগ করার জন্য কোম্পানিগুলোকে কর ছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।