ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা
ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়াকে উত্তর কোরিয়া, ইরান এবং চীনের সামরিক ও অর্থনৈতিক সহায়তা অব্যাহত থাকলে বিশ্বে নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণ তৈরি হতে পারে। জোটবদ্ধ হয়ে এসব দেশ পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে থাকলে, পাল্টা জবাব দিতে পারে পশ্চিমা বিশ্ব। যা রূপ নিতে পারে প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো আরেকটি বৈশ্বিক সংঘাতে। খবর সিএনএনের।
ইউক্রেনে আড়াই বছরের বেশি সময় ধরে চলা রুশ অভিযানে একে একে পুতিনের পাশে দাঁড়াচ্ছে পশ্চিমাবিরোধী রাষ্ট্রগুলো। সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব দেশের মধ্যে অংশীদারিত্ব বাড়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সতর্ক করেছে মার্কিন গোয়েন্দারা। ব্রিকসের সদস্য বৃদ্ধিসহ অন্যান্য উপায়ে সক্ষমতা বাড়াচ্ছে পশ্চিমাবিরোধী জোট। স্থায়ী-অস্থায়ী অংশীদার নিয়ে ব্রিকসের বর্তমান সদস্য দেশের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩টিতে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, অস্ত্রের পাশাপাশি সেনা দিয়েও রাশিয়াকে সহায়তা করছে উত্তর কোরিয়া।
এ ছাড়া কিয়েভের বিরুদ্ধে মস্কোকে সমর্থন অব্যাহত রেখেছে তেহরান ও বেজিং। মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেন, উত্তর কোরিয়ার সেনা ইউক্রেনে রাশিয়ার পক্ষে যুদ্ধ করাটা খুবই গুরুতর বিষয়। এটি কেবল ইউরোপেই নয়, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও প্রভাব ফেলবে। রাশিয়া ও তার মিত্রদের আক্রমণ প্রতিহত করতে যুক্তরাষ্ট্র সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবে। সিএনএনের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, শত শত ইরানি ড্রোন ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করছে মস্কো। এমনকি মস্কোকে স্বল্পপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও সরবরাহ করেছে তেহরান। এদিকে যুদ্ধে রাশিয়াকে মাইক্রো ইলেক্ট্রনিক্স উন্নত সব প্রযুক্তি দিয়ে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে চীনের বিরুদ্ধে।
তা ছাড়া গত সপ্তাহে অস্ত্র সরবরাহের দায়ে দুই চীনা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিসের সিনিয়র ফেলো টং ঝাও বলেন- রাশিয়া, উত্তর কোরিয়া ও ইরান এমন একটি পক্ষ যার সঙ্গে চীন খোলাখুলিভাবে যুক্ত হতে চায় না। চীন এটি স্পষ্ট করতে চায় যে, তাদের সঙ্গে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে একটি ত্রিপক্ষীয় জোট গঠিত হবার সুযোগ নেই। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অন্যতম জোট ছিল জার্মানি, ইতালি এবং জাপান নিয়ে গঠিত অক্ষশক্তি। যাদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণে যুদ্ধের ভয়াবহতা বেড়ে যায় কয়েকগুণ।
তাই বিশ্লেষকদের শঙ্কা, বিশ্বে নতুন একটি জোট তৈরি হলে তা তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র এই উত্থানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে গিয়ে আরেকটি বৈশ্বিক সংঘাত শুরু করতে পারে বলেও মত তাদের। মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন এই দাবি করেছে, রাশিয়ায় ১০ হাজার সেনা পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এসব সেনাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠানো হবে। পেন্টাগনের মুখপাত্র সাবরিনা সিং বলেন, রাশিয়ার উত্তরাঞ্চলে ১০ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। এর মধ্যে তিন হাজার সেনাকে সীমান্তের কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এরইমধ্যে সেনাদের একটি অংশ ইউক্রেনের কাছাকাছি চলে গেছে।