ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১

পালিয়ে যেতে বাধ্য হলো ইউক্রেন সেনারা

রাশিয়ার দখলে ভুলেদার শহর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

প্রকাশিত: ২১:২৬, ২ অক্টোবর ২০২৪

রাশিয়ার দখলে ভুলেদার শহর

ভুলেদার দখল করে নিয়েছে রাশিয়া

ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কে কিয়েভের কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর ভুলেদার দখল করে নিয়েছে রাশিয়া। বুধবার রুশ সেনারা এটি দখল করেছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের ক্রাউড-সোর্সড ট্র্যাকিং সাইট ডিপস্টেটের বিশ্লেষকরা। ইউক্রেনের ৭২ম মেকানাইজড ব্রিগেডের সেনারা ভুলেদারকে রক্ষা করার দাবি করেছে। বুধবার বিবিসিকে শহর থেকে ইউক্রেনীয় সেনাদের প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে তারা। এ সময় কিয়েভ সেনারা হেঁটে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন রুশ সেনারা। তবে এ বিষয়ে মস্কো বা কিয়েভ কোনো পক্ষই আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি। খবর মস্কো টাইমসের।
একটি দুর্গ শহর হিসেবে পরিচিত ভুলেদারের চারপাশের পরিবেশ এবং উঁচু অবস্থানের কারণে ইউক্রেনীয় সেনাবাহিনীর জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই শহর দখল মস্কোর জন্য একটি বড় সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত হবে। আড়াই বছর ধরেই কৌশলগত সাবেক কয়লা-খনির শহরটি দখলে নিতে একাধিক প্রচেষ্টা চালিয়েছে রুশ সেনারা। ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের পূর্বের একটি প্রতিবেদন বলা হয়, এই শহর দখলের জন্য হাজার হাজার সেনা এবং শত শত ট্যাঙ্ক ও সাঁজোয়া যান ব্যবহার করেছিল মস্কো। 

চলতি মাসের শুরুতে মস্কো টাইমসের সঙ্গে একটি সাক্ষাতে ভুলেদারকে দনবাস অঞ্চলের দক্ষিণাঞ্চলের প্রবেশদ্বার হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউক্রেনের সামরিক বিশ্লেষক ইভান স্টুপাক। এই শহরের দখল এই অঞ্চলে রাশিয়ার আরও অগ্রগতির পথ পরিষ্কার করবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। পশ্চিম রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের আকস্মিক অনুপ্রবেশ সত্ত্বেও আগস্ট ও সেপ্টেম্বরে পূর্ব ইউক্রেনে অগ্রগতি করে চলেছে মস্কো।

সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে রুশ সেনারাও ভুলেদার থেকে প্রায় ৫০কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত পোকরভস্কে কিয়েভের প্রধান লজিস্টিক হাব দখলে নেওয়ার পথে। উল্লেখ্য, রাশিয়া ২০২২ সালে এক গণভোটের মাধ্যমে দোনেৎস্ককে মস্কোর আওতায় নিয়ে নেয়। ভুলেদার শহরটি রাশিয়া ও ইউক্রেন উভয় বাহিনীর সেনাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান। কারণ এখানে সরবরাহ হাব গড়ে তোলা গেলে ইউক্রেনের পূর্ব ও দক্ষিণ উভয় দিকেই সহজে পৌঁছানো যায়। ইউক্রেন দীর্ঘদিন ধরে শহরটি রক্ষা করে আসার চেষ্টা করে আসছিল। তবে এই দফায় শহরটি রাশিয়ার দখলে চলে গেল।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই শহর দখলের মধ্য দিয়ে পুরো দোনেৎস্কের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল। রাশিয়ার মূল ভূখ- থেকে ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সংযোগকারী একটি রেললাইনের খুব কাছে হওয়ায় ভুলেদারের গুরুত্ব আরও বেশি। এই রেললাইন ক্রিমিয়াকে দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক অঞ্চল নিয়ে গঠিত দনবাস অঞ্চলকে ক্রিমিয়ার সঙ্গে যুক্ত করেছে। এ বিষয়টি রাশিয়াকে বাড়তি সুবিধা দেবে। 
এর আগে গত আগস্ট মাসের শেষ দিকে ইউক্রেনের আরও তিনটি গ্রাম দখলে নেওয়া দাবি করে রাশিয়া। সে সময় রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, তারা ইউক্রেনের দোনেৎস্ক, লুহানস্ক ও খারকিভ অঞ্চল এই তিন গ্রাম দখল করেছে। 
রাশিয়ার দখল করা গ্রাম তিনটি হলো- দোনেৎস্ক ও পোকরোভস্ক শহরের মাঝামাঝি অবস্থিত নোভোজেলেন, খারকিভ অঞ্চলের সিঙ্কিভকা এবং দোনেৎস্কের কোস্তিয়ানতিনিভকা। ইউক্রেন রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে অভিযান শুরুর কয়েক সপ্তাহ পর এই গ্রামগুলো দখলের ঘোষণা দিল মস্কো।

×