মাটির নিচেই আছে ১৫০০ বাড়িসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা
মাটির নিচেই আছে ১৫০০ বাড়িসহ সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। ঠিক যেন রূপকথার এক পাতালপুরী! দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় একটি ভূ-গর্ভস্থ শহর আছে, যেখানে মাটির নিচেই আছে হাজারো বাড়ি। মাটির নিচে হলেও সেখানে আপনি পেয়ে যাবেন সব ধরনের সুবিধা। এমনকি বিনোদন থেকে শুরু করে যাবতীয় পরিষেবা পাবেন সহজেই। এই পাতালপুরীতে সুপার মার্কেট, হোটেল, গির্জা, দোকান ও অন্য সব ধরনের সুবিধাই আছে। স্থানটির নাম কুবার পেডি। এরই মধ্যে হয়তো আপনি এই পাতালপুরী সম্পর্কে জেনে থাকবেন।
শহরটি যেখানে অবস্থিত সেখানে আছে অনেকগুলো ওপালের খনি। ওপাল একটি অত্যন্ত বহুমূল্য রতœ। বাংলায় একে বলে ময়ূরাক্ষী রতœ। জ্যোতিসশাস্ত্রে এর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। আংটিতে ওপাল বা ময়ূরাক্ষী পরা হয়। একাধিক ওপাল খনির কারণে কুবার পেডিকে বলা হয় ‘ওপাল ক্যাপিটাল অব দ্য ওয়ার্ল্ড।’
জানা যায়, কুবার পেডিতে খনির কাজ শুরু হয়েছিল ১৯১৫ সালে। মরুভূমি হওয়ায় গ্রীষ্মকালে সেখানকার তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায় ও শীতকালে অনেকটাই কমে যায়।
এই আবহাওয়ার ধরনের সঙ্গে বসবাস করা মানুষের পক্ষে খুব কঠিন। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে, মানুষ খালি পড়ে থাকা খনিগুলোতে বসতি স্থাপন শুরু করে। বর্তমানে স্থানটিতে ১৫০০টি বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। বাইরে থেকে বাড়িগুলো দেখতে অনেকটা স্বাভাবিক হলেও এই বাড়ির ভেতরে সব ধরনের আরাম ও সুযোগ-সুবিধা আছে। মাটির নিচে তৈরি এসব বাড়ির আবহাওয়া প্রচ- গরম বা ঠান্ডা নয়। গরমে এখানকার মানুষের এসি বা কুলারেরও প্রয়োজন হয় না এবং শীতকালে তাদের হিটার ব্যবহার করতে হয়।
কুবার পেডির মানুষের জীবনধারা বেশ অন্যরকম। আর এই জীবনধারাই সারা বিশ্বের পর্যটকদের আকর্ষণ করে। সেখানে হলিউডের ছবির শূটিং হয়েছে। ২০০০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পিচ ব্ল্যাক’ ছবির শূটিং এখানে হয়েছিল।
শূটিং শেষে চলচ্চিত্রে ব্যবহৃত স্পেস শিপটি এখানে ফেলে রেখে যায় প্রযোজক সংস্থাটি। সেই স্পেস শিপও এখন পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।
মাটির নিচের এই শহরের বিদ্যুতের চাহিদার ৭০ শতাংশ মেটানো হয় এখানে নির্মিত হাইব্রিড এনার্জি পাওয়ার প্লান্টের মাধ্যমে। কুবার পেডিতে আসা পর্যটকদের জন্য একটি আন্ডারগ্রাউন্ড হোটেল আছে। এখানে এক রাত থাকার জন্য পর্যটকদের ১২ হাজারেরও বেশি টাকা গুনতে হতে পারে। হোটেলে আছে একটি দুর্দান্ত ক্লাব, পুল গেমের জন্য টেবিল, ডাবল ও সিঙ্গল বেডসহ কক্ষ। আছে সোফা ও রান্নাঘরের সুবিধাও।-টাইমস অব ইন্ডিয়া