ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১

aiub
aiub

সিডনিতে প্রতীতির শ্রোতার আসর

অনলাইন ডেস্ক 

প্রকাশিত: ২২:৩৭, ১৬ জুলাই ২০২৪

সিডনিতে প্রতীতির শ্রোতার আসর

প্রতীতির শ্রোতার আসর।

অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রতীতির শ্রোতার আসর অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ জুলাই) ডাউনদাস কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তনে এই আসর অনুষ্ঠিত হয়। 

২০০৭ সাল থেকে প্রতীতি নিয়মিতভাবে শ্রোতার আসর এর আয়োজন করে আসছে। মূলত বাংলা গানের বিভিন্ন ধারা প্রবাসী বাঙালিদের সামনে উপস্থাপন করাই এই শ্রোতার আসরের আয়োজন করা হয়। বাংলার লোকগান, দেশের গান, আধুনিক, নজরুল, রবীন্দ্র, পুরাতনী গান- এসব গানই এই শ্রোতার আসরে পরিবেশিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আয়োজন করা হয় এবারের শ্রোতার আসর। 

প্রথম পর্বে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন অদিতি শ্রেয়সী বড়ুয়া পিয়া, সাজ্জাদুল আনাম চৌধুরী বাপ্পী, শরিফা সুলতানা মুন্নী ও ফয়সালখালিদ শুভ। তবলায় ছিলেন- শান্তনু কর, কীবোর্ডে নিলাদ্রি চক্রবর্তী, মন্দিরায় সুমিতা দে, হারমোনিয়ামে সিরাজুস সালেকিন। এ পর্বে অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন রুমানা সিদ্দিকী। তিনি যন্ত্রশিল্পী ও কণ্ঠশিল্পীদের সঙ্গে দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেন।

প্রথমেই ফয়সাল খালিদ শুভ পরিবেশন করেন একটি দেশের গান- ভেবোনা গো মা তোমার ছেলেরা গানটি। এর পরেই তিনি পরিবেশন করেন শ্যামল মিত্রের গাওয়া ‘কি নামে ডেকে বলবো তোমাকে’ একটি আধুনিক গান। পরের গান অখিল বন্ধু ঘোষ এর গাওয়া ‘যেনকিছু মনে করোনা, কেউ যদি কিছু বলে’।
 
এরপর শরিফা সুলতানা মুন্নী পরিবেশন করেন নজরুলগীতি গগনেকৃষ্ন মেঘ দোলে, এর পরে পরিবেশন করেন অনিল ভট্টাচার্য’র লেখাও নির্মল ভট্টাচার্য’র সুরে  সুপ্রভা সরকার এর গাওয়া গান ‘এ পথেযখনি যাবে, বারেক দাড়ায়ো ফুল বনে’। শেষে আরও দুটি গানপরিবেশন করেন- মোহাম্মাদ রফিকুজ্জামানের লেখা ও অনুপ ভট্টাচার্য’র সুরে মিতালী মুখারজি’র গাওয়া বিখ্যাত একটি গান ‘সুখপাখি রে’। এরপর একটি লোকগান ‘আমি কেমন করে পত্র লিখি রে’।  এরপরের শিল্পী ছিলেন সাজ্জাদুল আনাম চৌধুরী বাপ্পী। তিনিপরিবেশন করেন ভুপেন হাজারিকার গাওয়া গান ‘সহস্র জনে মোরে প্রশ্ন করে’। পরের গান ছিল শ্যামল মিত্রের গাওয়া ‘যা যা যারে, যা যা পাখি’। 

সবশেষ শিল্পী ছিলেন অদিতি শ্রেয়সী বড়ুয়া পিয়া। তার প্রথম পরিবেশনা ছিল নজরুল ইসলাম এর গান ‘পিয়া পিয়া পিয়া পাপিয়া পুকারে’। এর পরের গান খান আতাউর রহমান এর সুরে বাংলা ছায়াছবির গান ‘এ কি সোনার আলোয় জীবন ভরিয়ে দিলে’। এর পর তিনি আরতি ভট্টাচার্য’র গাওয়া অত্যন্ত বখ্যাত একটি গান ‘তখন তোমার একুশ বছর বোধ হয়’। সবশেষে তিনি পরিবেশন করেন লতা মঙ্গেসকর এর গাওয়া আর একটি বিখ্যাত গান ‘না, মন লাগে না’। 

বাপ্পী ও শুভ দ্বৈত কণ্ঠে পরিবেশন করেন ‘সলিল চৌধুরির কথা ও সুরে, শ্যামল মিত্রের গাওয়া’ দূর নয় বেশি দূর ওই সাজানো সাজানো। সবশেষে অদিতি শ্রেয়সী বড়ুয়া পিয়া ও শরিফা সুলতানা মুন্নী দ্বৈত কণ্ঠে পরিবেশন করেন দেওয়া নেওয়া ছায়াছবির গান শ্যামলমিত্র ও মানবেন্দ্র মুখার্জির গাওয়া ‘দোলে দোদুল দোলে ঝুলনা’। 

৩০ মিনিট এর বিরতির পর শুরু হয় প্রতীতির দলীয় পরিবেশনা বর্ষার গান ও কবিতা নিয়ে আলেখ্য  ‘প্রথম কদম ফুল’। এ পর্বটি সাজানো হয় কথা ও গান নিয়ে। কবিগুরুর ছিন্নপত্রে লেখা বর্ষার বর্ণনা, জীবনানন্দ দাশের কবিতা এ পর্বের পরিবেশনাকে অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যায়।

ওই আসে ওই অতি ভৈরব হরষে, ওই মালতী লতা দোলে, আবার এসেছে আষাঢ়, শাওন গগনে ঘোর ঘনঘটা, নীল-অঞ্জন ঘন পুঞ্জছায়ায় সম্বৃত অম্বর হে গম্ভীর, আজ শ্রাবণের পূর্ণিমাতে কী এনেছিস বল, মন মোর মেঘের সঙ্গী, পাগলা হাওয়ার বাদল দিনে, সঘন গহন রাত্রি, বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান, মধু-গন্ধেভরা মৃদু-স্নিগ্ধছায়া, শ্রাবন তুমি বাতাসে কার আভাস পেলে, বঁধূয়া নিদ নাহি আঁখি পাতে, বাদলা রাতে চাঁদ উঠেছে, এসো হে সজল শ্যাম ঘন দেওয়া, এমন দিনে তারে বলা যায়, কোথা যে উধাও হোলমোর প্রাণ উদাসী, শ্রাবণ ঘনায় দু নয়নে, এমনি বরষা ছিল সেদিন, এই মেঘলা দিনে একলা ঘরে থাকে না তো মন- এমন কিছু গান পরিবেশন করে প্রতীতির শিল্পীরা। সমস্ত মিলনায়তন জুড়ে বর্ষার অপরূপ এক আবহ দর্শকদের মোহাবিষ্ট করে রাখে।

সবশেষে প্রতীতির কর্ণধার সিরাজুস সালেকিন এর ধন্যবাদ বক্তব্যে শেষ হয় প্রতীতির শ্রোতার আসর। এই প্রবাসে প্রতীতির এই মনোমুগ্ধকর আয়জনের জন্য সাধুবাদ জানাই। প্রবাসে বাংলা সংস্কৃতি প্রচারও প্রসারে প্রতীতির নিরলস প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক।

এম হাসান

×