ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১

ট্রাম্পের চালে গভীর সঙ্কটে পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৭:০৮, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

ট্রাম্পের চালে গভীর সঙ্কটে পাকিস্তান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফিরে একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। এবার তার নেওয়া বিশেষ এক সিদ্ধান্তের ফলে গুরুতর সংকটের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। দেশটির স্বাস্থ্য থেকে বিদ্যুৎ, কৃষি থেকে শিক্ষা,বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ এই পরিস্থিতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন।


সম্প্রতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (USAID) বিভিন্ন দেশের জন্য বরাদ্দকৃত আর্থিক সাহায্য সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। আগামী ৯০ দিনের জন্য এই অর্থায়ন বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।


 ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে পাকিস্তানে, কারণ এই সাহায্যের উপর নির্ভর করে চলছিল দেশটির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সাময়িক আর্থিক সহায়তা বন্ধ হওয়ার কারণে দেশটির অনেক উন্নয়নমূলক কাজ স্থগিত হতে চলেছে।


জানা গেছে, পাকিস্তানে ঐতিহ্য সংরক্ষণের জন্য পরিচালিত "এএফসিপি" প্রকল্প মার্কিন সহায়তার মাধ্যমে পরিচালিত হতো। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশটির সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষণ করা হতো। কিন্তু মার্কিন সাহায্য বন্ধ হওয়ায় এই প্রকল্প কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।


এছাড়াও পাকিস্তানের বিদ্যুৎ খাতেও এই সহায়তার বড় ভূমিকা ছিল। বর্তমানে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য পাঁচটি হচ্ছে-পাওয়ার সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাকটিভিটি, পাকিস্তান প্রাইভেট সেক্টর এনার্জি অ্যাকটিভিটি, এনার্জি সেক্টর অ্যাডভাইসরি সার্ভিসেস প্রজেক্ট, ক্লিন এনার্জি লোন পোর্টফোলিও গ্যারান্টি প্রোগ্রাম এবং পাকিস্তান ক্লাইমেট ফাইনান্সিং অ্যাকটিভিটি। এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে পাকিস্তানে বিদ্যুৎ উৎপাদন, নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার এবং জ্বালানি ব্যবস্থাপনার উন্নতি সাধনের কাজ চলছিল। অর্থায়ন বন্ধ হওয়ার ফলে এসব প্রকল্পের কাজ থমকে গেছে।


শুধু বিদ্যুৎ খাতই নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও বড় ধাক্কা খেয়েছে পাকিস্তান। দেশটির অর্থনীতি, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ সংরক্ষণ, বন্যা প্রতিরোধ এবং শিক্ষা সম্পর্কিত প্রকল্পগুলোর কাজও স্থগিত হয়ে গেছে। এসব খাতে মার্কিন সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতা বেশি থাকায় পাকিস্তানের বর্তমান প্রশাসন গভীর সঙ্কটে পড়েছে।


বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, আগামী দিনে যদি এই আর্থিক সহায়তা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে পাকিস্তানের অর্থনীতি চরম সংকটের মুখে পড়বে। বর্তমানে সাময়িকভাবে ৯০ দিনের জন্য বন্ধ করা হলেও ভবিষ্যতে এই নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী হলে দেশটির উন্নয়ন প্রকল্পগুলো মুখ থুবড়ে পড়বে। এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পাকিস্তানের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।


তবে পাকিস্তানই শুধু নয়, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অন্যান্য দেশগুলোর উপরও প্রভাব ফেলেছে। প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশও মার্কিন সহায়তার মাধ্যমে বেশ কয়েকটি প্রকল্প পরিচালনা করছিল, যা আপাতত স্থগিত হয়েছে। ৯০ দিনের নিষেধাজ্ঞার ফলে কোন কোন দেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা বিশেষ নজর রাখছেন।


সূত্র:হান্ট

আফরোজা

×