ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৯ পৌষ ১৪৩১

মহাশূন্যে সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে চীন

প্রকাশিত: ১৯:৫৯, ১২ জানুয়ারি ২০২৫

মহাশূন্যে সোলার প্যানেল বসিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে চীন

মহাশূণ্যে বাঁধের রুপরেখা

এবার মহাশূন্যে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ প্রকল্প বানাবে চীন। দেশটির এই উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বিশ্বজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের জোগান রাখতে এই কাজে হাত দিতে চলেছে বেজিং। যদিও এর বাস্তবায়ন নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান বিশ্বের তাবড় মহাকাশ গবেষকেরা। সম্প্রতি মহাশূন্যে চীনের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে চীনা সংবাদমাধ্যম ‘সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট’। এরপরই প্রকাশ্যে আসে বিষয়টি। খবর এনডিটিভি ও গ্লোবাল কনস্ট্রাকশন রিভিউ অনলাইনের।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহাশূন্যে বাঁধ তৈরির নীল-নকশা এঁকেছেন ড্রাগনল্যান্ডের বিখ্যাত রকেট বিজ্ঞানী লং লেহাও। এই প্রকল্পের পোশাকি নাম ‘থ্রি গর্জেস ড্যাম প্রজেক্ট অন আর্থ’। কীভাবে মহাশূন্যে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ তৈরি করবেন চীনা বিজ্ঞানীরা? ওই প্রতিবেদনে তার রূপরেখাও তুলে ধরা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভূপৃষ্ঠ থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার ওপরে পৃথিবীর জিওস্টেশনারি কক্ষপথে এক কিলোমিটার প্রশস্ত সৌর প্যানেল বসানোর পরিকল্পনা করছেন চীনা গবেষকরা। মহাশূন্যে সৌর প্যানেল বসানোর কাজ শেষ হলে সেগুলো দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করবে ড্রাগন। চীনা গবেষকদের দাবি, দিন-রাতের চক্র, আবহাওয়া বা ঋতু পরিবর্তনের জেরে এই সৌর প্যানেলের কোনো ক্ষতি হবে না। সবসময় সেখান থেকে পাওয়া যাবে বিদ্যুৎ। চীনা মহাকাশ গবেষক লং বিদ্যুৎ তৈরির এই নিরবচ্ছিন্ন প্রকল্পকে তিন গিরিখাত বাঁধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। বর্তমানে ড্রাগনল্যান্ডের ইয়াংজি নদীর ওপর রয়েছে ওই বাঁধ। সেখান থেকে বছরে প্রায় ১০ হাজার কোটি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বেজিং। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা জানিয়েছে, চীনের এই তিন গিরিখাত বাঁধ এতটাই বড় যে, সেটি পৃথিবীর ঘূর্ণন ০.৬ মাইক্রো সেকেন্ড কমিয়ে দিয়েছে। তাই এই ধরনের প্রকল্পকে মানবজাতির জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে মনে করেন যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা। চীনা গবেষক লং বলেছেন, ‘আমরা এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছি। ভূপৃষ্ঠের ২২ হাজার ৩৭০ মাইল ওপরে জিওস্টেশনারি কক্ষপথে ওই তিন গিরিখাত বাঁধ মতোই সৌর প্যানেল বসানো হবে।

সেখান থেকে আমরা যে সৌরশক্তি পাব তা এক বছরে উত্তোলন করা অপরিশোধিত তেলের সমান হবে। এটা একটা অবিশ্বাস্য প্রকল্প। আমরা এখন শুধুই সামনের দিকে তাকিয়ে আছি। এই প্রকল্পের বাস্তবায়নে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রকেটের প্রয়োজন। জানা গেছে, বর্তমানে এই বিষয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন চীনা মহাকাশ বিজ্ঞানীরা। পুনর্ব্যবহারযোগ্য ভারি বস্তু বহনে সক্ষম রকেট নির্মাণের চেষ্টা হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন গবেষক লং। তবে বেজিং এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে একটি শব্দও খরচ করেনি। লং জানিয়েছেন, এই প্রকল্পের জন্য মোট দুইটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন রকেটের প্রয়োজন হবে। তার মধ্যে একটি হলো ‘সিজেড-৫’। এটি লম্বায় ৫০ মিটার বলে জানা গেছে। দ্বিতীয় রকেটটির নাম ‘সিজেড-৯’ রেখেছেন চীনা মহাকাশ গবেষকেরা।

×