ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

তাইওয়ান ইস্যুতে চীনের হুঁশিয়ারি

যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ-আসক্ত দেশ

প্রকাশিত: ২০:৩০, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ-আসক্ত দেশ

যুক্তরাষ্ট্রকে যুদ্ধ-আসক্ত দেশ বলে মন্তব্য করেছে চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। চীন মনে করে, বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য ওয়াশিংটন সবচেয়ে বড় হুমকিতে পরিণত হয়েছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ চীনের প্রতিরক্ষা নীতিকে বিকৃত করে বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করেছে বলেও অভিযোগ করেছে বেজিং।
মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝ্যাং জিয়াওগাং বলেন, এই সপ্তাহে প্রকাশিত মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের প্রতিবেদনে চীনের প্রতিরক্ষা নীতির ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে। তারা সামরিক সক্ষমতা সম্পর্কে অনুমান করছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে গর্ব করছে এবং তথাকথিত চীনা হুমকিকে অতিরঞ্জিত করার জন্য বেজিংকে মরিয়া অপবাদ দিচ্ছে।
ঝ্যাং বলেন, যুদ্ধ-আসক্ত যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার সবচেয়ে বড় ধ্বংসকারী এবং বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিতে পরিণত হয়েছে। বেজিং পেন্টাগনের ১৮২ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনের বিষয়বস্তুর তীব্র নিন্দা ও দৃঢ়ভাবে বিরোধিতা করেছে। ঝ্যাং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কেবল তার নিজস্ব সামরিক সক্ষমতা উন্নয়নের অজুহাত খুঁজছে। তিনি বলেন, চীন শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন ও জাতীয় প্রতিরক্ষা নীতি মেনে চলে। একই সঙ্গে একটি বৃহৎ শক্তির কাছ থেকে প্রত্যাশিত আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন করে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র একতরফা আধিপত্য বজায় রাখতে তার সামরিক শক্তি ব্যবহার করে এবং জোরপূর্বক শাসন পরিবর্তন প্রচার করতে এবং রঙিন বিপ্লব উস্কে দেওয়ার জন্য প্রায়শই চরম চাপ প্রয়োগ করে। তিনি ইরাক, আফগানিস্তান ও সিরিয়ায় ‘অবৈধ যুদ্ধ ও সামরিক তৎপরতার’ উদাহরণ তুলে ধরেন। যে সামরিক তৎপরতার ফলে বিপুল সংখ্যক বেসামরিক হতাহত এবং ব্যাপক মানবিক বিপর্যয় ঘটেছে।
আগুন নিয়ে খেলছে যুক্তরাষ্ট্র ॥ তাইওয়ানে আরও অস্ত্র সরবরাহ ও সামরিক সহায়তার মার্কিন ঘোষণার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে চীন। রবিবার বেজিং যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপকে ‘আগুন নিয়ে খেলা’ বলে অভিহিত করেছে।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, স্বশাসিত তাইওয়ানের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শনিবার সামরিক সরঞ্জাম ও প্রশিক্ষণের জন্য ৫৭ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার পর্যন্ত সহায়তা অনুমোদন করেছেন। এ ছাড়া প্রতিরক্ষা বিভাগ শুক্রবার জানিয়েছে, ২৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলারের সামরিক সরঞ্জাম বিক্রির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করা চীন স্বভাবতই এটি পছন্দ করেনি।
রবিবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, তাইওয়ানকে সমর্থন এবং অস্ত্র সরবরাহ ‘আগুন নিয়ে খেলার’ মতো, যা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মারাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে তাইওয়ানে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করতে এবং তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি ও স্থিতিশীলতা ব্যাহত করে এমন ‘বিপজ্জনক পদক্ষেপ’ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরেও তাইওয়ানকে ৫৬ কোটি ৭০ লাখ ডলার সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর আবারও ৫৭ কোটি ১০ লাখ ডলারের সহায়তা অনুমোদন করলেন বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, তাইওয়ানের আত্মরক্ষার সক্ষমতা বৃদ্ধি ও চীনের হুমকি প্রতিহত করতে তারা এই সহায়তা দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তাকে স্বাগত জানিয়েছে তাইওয়ান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স হ্যান্ডলে তাইওয়ানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, তাইওয়ানের প্রতিরক্ষার প্রতি মার্কিন সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত হলো এর মাধ্যমে।

×