![যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের দূরত্ব বাড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের দূরত্ব বাড়তে পারে](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/23-2502121510.jpg)
ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা দখলের পরিকল্পনার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের মধ্যে দূরত্ব বাড়ছে। একটি বার্তা সংস্থাকে বিশ্লেষকরা জানান, ট্রাম্পের এমন পরিকল্পনা সৌদি আরব-ইসরাইলের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে। ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সমর্থন গড়ে তুলতেই কায়রোতে জরুরি আরব সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সৌদি আরব যদি ইসরাইলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, তবে তা মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেবে। ইসরাইল ও সৌদি আরবের মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালনে ইচ্ছুক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার প্রথম মেয়াদে তিনি আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্যোগ নেন। সেসময় তিনি আশা প্রকাশ করেন যে সৌদি আরবও এ চুক্তির অংশ হবে। যদিও সৌদি আরব তা করেনি। খবর ইরনার।
এবার ট্রাম্পের গাজা খালি করার পরিকল্পনা তার এ আকাক্সক্ষা পূরণ হতে দেবে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ট্রাম্পের এমন নীতি প্রকৃতপক্ষে সৌদি আরবের জন্য ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়ার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে। ফিলিস্তিনের বাসিন্দাদের মিসর ও জর্ডানে পাঠানোর বিষয়ে ট্রাম্পের ঘোষণার বিরোধিতা করেছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সবকটি দেশ। এর মধ্যেই ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, সৌদি আরবের পর্যাপ্ত জমি আছে। তারা চাইলে তাদের ফাঁকা ভূখণ্ডে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। বিশ্লেষকরা জানান, যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র ইসরাইলের এমন অবস্থানে মর্মাহত আরব দেশগুলো। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বিরুপ মনোভাব তৈরি হবে বলে মনে করছেন তারা। এদিকে ফিলিস্তিন ইস্যুতে আলোচনার জন্য আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি মিসরে আরব দেশগুলোর জরুরি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। ফিলিস্তিন ইস্যুতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আঞ্চলিক সমর্থন গড়ে তুলতে কায়রো এ সম্মেলনের আয়োজন করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশ ট্রাম্পের প্রস্তাবের নিন্দা জানিয়ে ফিলিস্তিন-সংকট নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের ওপর জোর দেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গাজায় অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকাজুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরাইল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস হামলা চালিয়ে গেছে। ইসরাইলি হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। এ ছাড়া ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। মূলত ইসরাইলি হামলা গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরাইলের বর্বর হামলার কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন। এ ছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।