ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

নিউইয়র্কের রাস্তায় ১৮ ইঞ্চি পুরু স্তর ৪ জনের প্রাণহানি

বরফে ঢেকে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের একাংশ

জনকণ্ঠ ডেস্ক

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ২২ জানুয়ারি ২০২৫

বরফে ঢেকে গেছে যুক্তরাষ্ট্রের একাংশ

যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানা অঙ্গরাজ্যে একটি গাছ তুষারে ঢেকে গেছে

প্রচণ্ড শীতকালীন ঝড়ের কবলে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শক্তিশালী এই ঝড়ের প্রভাবে দেশটির একাংশ বরফে জমে গেছে। ঠান্ডায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে টেক্সাস থেকে শুরু করে লুইসিয়ানা, মিসিসিপি, আলাবামা, জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা ও ফ্লোরিডার লাখ লাখ বাসিন্দা। কোনো কোনো জায়গায় ১০ ইঞ্চির বেশি তুষারপাত হয়েছে। নিউইয়র্কে সর্বোচ্চ ১৮ ইঞ্চি পুরু তুষার জমেছে। খবর বিবিসি, আলজাজিরা ও সিএনএন অনলাইনের।  
তীব্র ঠান্ডায় টেক্সাস ও আলাবামা অঙ্গরাজ্যে প্রাণ হারিয়েছেন। এই সংখ্যা অন্তত চারজন। এ ছাড়া কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। বাসিন্দারা বলছেন, এত ভারি তুষারপাতের কবলে আগে কখনো পড়েননি তারা। এই পরিস্থিতিতে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে অঙ্গরাজ্যগুলোর অনেক বিদ্যালয়। বাতিল হয়ে গেছে অঞ্চলজুড়ে বিভিন্ন বিমানবন্দরের ২ হাজারের বেশি ফ্লাইট। এ ছাড়া ৩ হাজারের বেশি ফ্লাইটের বিলম্ব হয়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে অঙ্গরাজ্যগুলোর গুরুত্বপূর্ণ অনেক সড়ক। এ ছাড়া বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে টেক্সাসের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বেশকিছু ঘরবাড়ি।
এর আগে বুধবার সকাল পর্যন্ত তুষারঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছিল আবহাওয়া বিভাগ। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে বলেও জানিয়েছে তারা। খবরে বলা হয়েছে, প্রবল ঠান্ডা ও দুর্যোগে টেক্সাস, জর্জিয়া এবং মিলওয়াকিতে অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। বিগত এক দশকের মধ্যে প্রকৃতির এমন ভয়াবহ রূপ দেখেনি আমেরিকাবাসী।

নিউ অরলিন্স এবং লুইসিয়ানায় ১৯৬৩ সালের পর থেকে এত তুষারপাত হয়নি। টেক্সাস, লুইসিয়ানা, মিসিসিপি, আলাবামা, জর্জিয়া, সাউথ ক্যারোলিনা এবং ফ্লোরিডা স্টেটে প্রবল তুষারপাত হচ্ছে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে শুধু বরফ আর বরফ। পরিস্থিতি এমনই যে, কোথাও ফাঁকা জায়গা দেখা যাচ্ছে না। বিমান সেবার পাশাপাশি ব্যাহত হচ্ছে সড়কপথে যাতায়াত ব্যবস্থাও। মঙ্গলবার লুইসিয়ানার গভর্নর জেফ ল্যান্ড্রি বলেন, ‘প্রশাসনের তরফে নেওয়া সতর্কতাগুলোই প্রমাণ করে পরিস্থিতি কতটা ভয়াবহ। আগামী এক সপ্তাহে তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

এই কয়েকদিন প্রয়োজন ছাড়া মানুষকে রাস্তায় বেরোতে বারণ করা হয়েছে। সপ্তাহ দুয়েক আগেই ‘স্টর্ম ব্লেয়ার’ নামের এক তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল পূর্ব ও মধ্য আমেরিকা। ঝড়ের বলি হয়েছিলেন পাঁচজন। জরুরি অবস্থা ঘোষণা হয়েছিল আমেরিকার সাতটি প্রদেশ মেরিল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, কানসাস, মিসৌরি, কেনটাকি এবং আরকানসাসে। গত সপ্তাহে দেশটির ওপর দিয়ে বয়ে যায় ভয়াবহ এক তুষারঝড়। তুষারে ঢেকে যায় বাড়িঘর-রাস্তাঘাট।

৬ কোটির বেশি মানুষ আবহাওয়া সতর্কতার আওতায় ছিল। অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যে জারি করা হয় জরুরি অবস্থা। এই তুষারঝড়ের কারণে প্রতিবেশী দেশ কানাডার অনেক এলাকাও সতর্কতার মধ্যে ছিল। তুষারঝড়টির নাম দেওয়া হয় ‘স্টর্ম ব্লেয়ার’। কানাডার বাসিন্দাদেরও তুষারঝড়ের কারণে কম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে না।

দেশটির অনেক অংশে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কিছু এলাকায় ঝড়ের সঙ্গে হঠাৎ করে ভারি তুষারপাত হচ্ছে। কানাডার মধ্যাঞ্চলের প্রদেশ মানিটোবায় তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নিচে নামে। গত রবিবার অন্টারিও প্রদেশে ১২ ইঞ্চি তুষার জমতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল।

×