যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত অধিকার আন্দোলনের একটি দৃশ্য। ছবি: সংগৃহীত।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাত নীতির ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠেছে। নির্বাচনের শেষদিকে ট্রাম্প বলেছিলেন, গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত রাজ্যগুলো নিজেরাই নির্ধারণ করবে। তবে তার অবস্থান বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হয়েছে। মার্চ মাসে এক সাক্ষাৎকারে তিনি ১৫ সপ্তাহ পর গর্ভপাত নিষিদ্ধের পক্ষে মত দেন এবং প্রেসিডেন্ট থাকাকালে তিনি ২০ সপ্তাহ পর গর্ভপাত নিষিদ্ধে একটি বিল সমর্থন করেছিলেন।
এদিকে, ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত জেডি ভ্যান্স একটি জাতীয় আইন পাসের মাধ্যমে গর্ভপাত সীমিত করতে আগ্রহী বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তিনিও ট্রাম্পের মতো রাজ্যগুলোর স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে গর্ভপাতের বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নীতিমালা নাও থাকতে পারে, তবে কিছু সম্ভাব্য পদক্ষেপ তারা অনুমান করেছেন। একটি জাতীয় গর্ভপাত নিষেধাজ্ঞা কংগ্রেসে অনুমোদিত হলে তা রাজ্যগুলোর বিদ্যমান সুরক্ষা আইনকে অকার্যকর করবে। তবে রিপাবলিকানরা কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণ নিলেও, জাতীয় পর্যায়ে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপের সম্ভাবনা ক্ষীণ। ট্রাম্প বলেছিলেন যে তিনি এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা স্বাক্ষর করবেন না, যদিও তিনি এ ব্যাপারে কিছুটা অস্পষ্ট অবস্থানও রেখেছেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসন সম্ভবত গর্ভপাতের ওষুধের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দিকে বেশি মনোযোগ দিতে পারে, বিশেষত যখন তা টেলিহেলথ বা ডাকযোগে সরবরাহ করা হবে। গুটমাচার ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের মোট গর্ভপাতের ৬৩% ওষুধের মাধ্যমে হয়েছে।
নির্বাচনে গর্ভপাত অধিকার সমর্থনের পক্ষে জনগণের ব্যাপক সমর্থন পাওয়া গেছে। ১০টি রাজ্যের মধ্যে ৭টি রাজ্যে গর্ভপাত অধিকার রক্ষার পক্ষে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। অ্যারিজোনা ও মিজৌরিতে এই প্রস্তাবনা বিদ্যমান সীমাবদ্ধতাগুলো বাতিল করেছে এবং অন্য পাঁচটি রাজ্যে, যেখানে গর্ভপাত পূর্বে সীমাবদ্ধ ছিল না, প্রস্তাবগুলো পাশ হয়েছে। ফ্লোরিডায় গর্ভপাত অধিকার সংরক্ষণের প্রস্তাবনা ৫৭% ভোট পেয়েছে, তবে আইন অনুসারে প্রস্তাবটি পাস করতে ৬০% সমর্থন প্রয়োজন ছিল।
এদিকে ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)-এর মাধ্যমে গর্ভপাতের ওষুধ মিফেপ্রিস্টোনের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের চেষ্টাও হতে পারে বলে অনেকে ধারণা করছে। ট্রাম্পের নিয়োগকৃত এফডিএ কর্মকর্তারা হয়তো এই ওষুধটি শুধুমাত্র চিকিৎসকের উপস্থিতিতে সরবরাহ বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিতে পারেন। এছাড়াও, কমস্টক অ্যাক্টের অধীনে ডাকযোগে গর্ভপাতের ওষুধ সরবরাহ নিষিদ্ধ করার হুমকিও আসতে পারে, যা গর্ভপাত পরিষেবা সরবরাহকারীদের ওপর একটি প্রভাব ফেলতে পারে।
নাহিদা