ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২ আশ্বিন ১৪৩১

ভয়াবহ নাইন ইলেভেন হামলার ২৩ বছর পূর্ণ হলো আজ

প্রকাশিত: ১৫:৫৭, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪; আপডেট: ১৫:৫৯, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ভয়াবহ নাইন ইলেভেন হামলার ২৩ বছর পূর্ণ হলো আজ

নিউইয়র্ক শহর

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর।  আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার। নিমেষেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ‘টুইনস টাওয়ার্স’। সেই ঘটনারই ২৩ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ।

১৯৪১ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর ঠিক আগে আগে পার্ল হারবারে আমেরিকার নৌবাহিনীর ওপর হামলা চালিয়েছিল জাপানের বিমানবাহিনী। তারপর থেকে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের এ হামলা ছিল যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে হওয়া সবচেয়ে মারাত্মক হামলা।

২৩ বছর আগে সন্ত্রাসবাদী এ হামলার ভয়াবহতা এতটাই ছিল যে তা সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছিল। ইতিহাসের পাতায় সেই ঘটনা ‘৯/১১ হামলা’ নামে পরিচিত।


যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ ১১ সেপ্টেম্বর দিনটিকে কালো দিন হিসেবে স্মরণ করেন। প্রতি বছর দিনটিতে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ হামলায় নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ফুল-মালা-মোমবাতি নিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চত্বরে হাজির হন।

হামলার নেপথ্যে ও পরিকল্পনায় যারা

ভয়াবহ এ হামলায় ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রেরর বুকে মোট চারটি বিমান হামলা চালিয়েছিল আল-কায়দার জঙ্গিরা। ঘটনার দিন সকালে, নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আল-কায়দার ১৯ জন জঙ্গি আলাদা আলাদা বিমানবন্দর থেকে চারটি বাণিজ্যিক বিমান ছিনতাই করে। এর পর বন্দুক, বোমা, গোলাবারুদ সঙ্গে নিয়ে চারটি দলে ভাগ হয়ে চেপে বসে সেই বিমানগুলোতে।

প্রথম দু’টি বিমান নিয়ে নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ‘টুইন টাওয়ার্সে’ হামলা চালায় জঙ্গিরা। সেই সময়ে বিশ্বের পাঁচটি সবচেয়ে উচু বহুতলের মধ্যে দু’টি ছিল টুইন টাওয়ার্স। প্রথম বিমানটি সকাল ৮টা ৪৬ মিনিটে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উত্তর মিনারের ৯৩ তলা থেকে ৯৯ তলার মধ্যে গিয়ে ধাক্কা দেয়।

ঠিক সাত মিনিট পর অর্থাৎ, ৯টা ৩ মিনিটে দ্বিতীয় বিমানটি নিয়ে আঘাত হানে জঙ্গিরা। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের দক্ষিণ মিনারের ৭৭ তলা থেকে ৮৫ তলার মধ্যে আছড়ে পড়ে সেটি। এই দুই বিমানে মোট ১০ জন জঙ্গি ছিল। দু’টি বিমানে মোট যাত্রী এবং বিমানের সদস্য সংখ্যা ছিল ১৪৭। এই দুই হামলায় প্রাণ গিয়েছিল মোট দু হাজার ৭৬৩ জনের। এর পর দু’ঘণ্টার মধ্যে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ‘টুইন টাওয়ার্স’ ধুলোয় মিশে যায়। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চত্বরের আরও একটি ৪৭ তলা ভবন ভেঙে পড়ে।

অন্য দু’টি বিমান নিয়ে দেশের রাজধানী ওয়াশিংটনে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করেছিলেন জঙ্গিরা। তৃতীয় বিমানটিতেও ছিলেন পাঁচ জঙ্গি। যাত্রী এবং বিমানের সদস্যদের মিলিয়ে ৫৯ জন বিমানটিতে ছিলেন। ৯টা ৩৭ মিনিটে বিমানটি গিয়ে ভার্জিনিয়ার আর্লিংটন কাউন্টিতে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিভাগের সদর দফতর পেন্টাগনের একটি দেওয়ালে সজোরে ধাক্কা মারে। এই মোট ১৮৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল।

এই চার জঙ্গি হামলায় সব মিলিয়ে ৯৩টি দেশের প্রায় তিন হাজার মানুষের প্রাণহানি হয়েছিল। আহতও হয়েছিলেন বহু মানুষ। ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর তা আমেরিকার অর্থনীতি এবং বিশ্ববাজারে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে। প্রায় সাত-আট মাস ধরে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার চত্বর মেরামত করা হয়।

এর পর ২০০৬ সালে আবার ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে ১১ সেপ্টেম্বরের হামলায় নিহতদের স্মরণে সেখানে বেশ কয়েকটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করা হয়েছে।

তাসমিম

×