ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

adbilive
adbilive
শ্রীলঙ্কার ঋণের কিস্তি ছাড়ে সম্মত আইএমএফ

শ্রীলঙ্কার ঋণের কিস্তি ছাড়ে সম্মত আইএমএফ

বাংলাদেশের সঙ্গে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় করতে সময় নিলেও শ্রীলঙ্কার ঋণের কিস্তি ছাড় করতে প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ঋণের পঞ্চম কিস্তির বিষয়ে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সংস্থাটির প্রাথমিক বা কর্মী পর্যায়ের চুক্তি হয়েছে। ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ মূল্যায়ন শেষে আইএমএফ শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংস্কারের বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করায় এই চুক্তি হয়েছে। এখন আইএমএফের পরিচালনা পর্ষদের সভায় অনুমোদন হলে পঞ্চম কিস্তির ৩৪ কোটি ৪০ লাখ ডলার পাবে শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কার কিস্তি পাওয়া নিয়ে দেশটির আইএমএফ মিশনপ্রধান ইভান পাপাজর্জিও একটি বিবৃতিও দিয়েছেন। শুক্রবার তা আইএমএফের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। অন্যদিকে বাংলাদেশ তৃতীয় কিস্তির অর্থ পেয়েছে ২০২৪ সালের জুন মাসে। তিন কিস্তিতে আইএমএফ থেকে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। চতুর্থ কিস্তির অর্থ পাওয়ার কথা ছিল গত বছরের ডিসেম্বর মাসে। কিন্তু তখন তা পাওয়া যায়নি। জুন মাসে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ একত্রে পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক সংস্কার সম্পর্কে আইএমএফ বলেছে, কর্মসূচির অধীনে যেসব কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোতে শ্রীলঙ্কা সামগ্রিকভাবে ভালো করেছে। দেশটি জিডিপি সংকোচনের ধারা থেকে বেরিয়ে প্রবৃদ্ধির ধারায় ফিরেছে। রাজস্ব আহরণ, রিজার্ভ বৃদ্ধি ও কাঠামোগত সংস্কারের যে রূপরেখা করা হয়েছিল, সেগুলো পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে। ঋণ পুনর্গঠন প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কর্মসূচির যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, শ্রীলঙ্কা সরকার তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ। ২০২২ সালে ভয়াবহ আর্থিক সংকটের মুখে পড়ে শ্রীলঙ্কা। সেই সংকটের জেরে দেশটিতে সরকারের পতন হয়। এরপর দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নেয়। তার অংশ হিসেবে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে আইএমএফের সঙ্গে ঋণচুক্তি করে দেশটি। সেই চুক্তির আওতায় এখন পর্যন্ত চার কিস্তিতে অর্থ পেয়েছে দেশটি। এখন তারা পঞ্চম কিস্তির অপেক্ষায়, যার প্রাথমিক অনুমোদন তারা পেয়ে গেল। এপ্রিল মাসে শ্রীলঙ্কা সফরে আসে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। কিন্তু ২ এপ্রিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের সব দেশের পণ্যে পাল্টা শুল্ক আরোপ করলে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। শ্রীলঙ্কার পণ্যে ৪৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই সময় কিস্তি ছাড়ের বিষয়ে প্রাথমিক চুক্তি করেনি আইএমএফ। এরপর ৯ এপ্রিল ট্রাম্প তিন মাসের জন্য পাল্টা শুল্ক স্থগিত করেন। তারপর এই প্রাথমিক চুক্তি হলো। যদিও আইএমএফ বলছে, বিশ্ববাণিজ্যের ক্ষেত্রে এই নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে শ্রীলঙ্কার অর্থনীতি বড় ঝুঁকির মধ্যে আছে। ট্রাম্পের শুল্কের স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হলে আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির আওতায় শ্রীলঙ্কা কর্তৃপক্ষ ও আইএমএফ পরিস্থিতি বুঝে কাজ করবে। অর্থাৎ শুল্কের কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিরূপণ করে নীতি প্রণয়ন করবে শ্রীলঙ্কা।  প্রাথমিক চুক্তিতে আইএমএফ আরও বলেছে, বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি, করছাড় হ্রাস ও বিদেশী মুদ্রার রিজার্ভ পুনর্গঠনে জোর দিতে হবে। সেই সঙ্গে দরিদ্র মানুষের সহায়তায় আরও শক্তিশালী কর্মসূচি নিতে হবে বলে জানিয়েছে আইএমএফ। তারা মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের কারণে শ্রীলঙ্কার পোশাক খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দেশটির প্রায় তিন লাখ মানুষ এই খাতে কাজ করে। এদিকে শুক্রবার বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর শ্রীলঙ্কার ৩ দশমিক ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে। গত বছরের অক্টোবর মাসেও তারা একই পূর্বাভাস দিয়েছিল। ২০২৪ সালে দেশটির প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ৫ শতাংশ। ওয়াশিংটনে চলমান বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বসন্তকালীন বৈঠকে যোগ দেওয়া শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি দল ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে শুল্ক নিয়ে আলোচনা করেছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট বিবৃতিতে বলেছেন, শুল্ক নিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনা চলবে। ঋণের কিস্তি নিয়ে আশাবাদী বাংলাদেশ ॥ শ্রীলঙ্কার মতো বাংলাদেশের সঙ্গেও আইএমএফের ঋণচুক্তি চলমান আছে। আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি।  সম্প্রতি ঢাকা সফর করে গেছে আইএমএফের প্রতিনিধি দল। ঢাকা ছাড়ার আগে আইএমএফের মিশন ১৭ এপ্রিল আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়েছে, এ বিষয়ে আরও আলোচনা চলবে এবং সব ঠিকঠাক থাকলে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ পাওয়া যেতে পারে আগামী জুনের শেষ দিকে। সে বিষয়ে এখন আলোচনা চলছে। সামগ্রিকভাবে এই ঋণ কর্মসূচির পরবর্তী কিস্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জের মুখে আছে বাংলাদেশ।

মাইক্রোবাস-হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক হ্রাসের দাবি

মাইক্রোবাস-হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক হ্রাসের দাবি

আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছর সামনে রেখে মাইক্রোবাস-হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক হ্রাসের দাবি জানিয়েছেন এখাতের আমদানিকারক ব্যবসায়ীরা। তারা জানান, মাইক্রোবাস, অ্যাম্বুলেন্স, জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব  হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক হ্রাস করা হলে সরকারের রাজস্ব আদায় বাড়বে। শুল্কহ্রাস হলে গাড়ি আমদানি ও  বিক্রি বাড়ার সুযোগ তৈরি হবে। ফলে বিক্রি বাড়লে বৃদ্ধি পাবে সরকারের রাজস্ব আদায়। উদাহরণ দিয়ে তারা বলেন, ইতোপূর্বে মাইক্রোবাসের শুল্ক হ্রাসের ফলে ইতোপূর্বে সরকারের রাজস্ব আদায় বেড়েছিল।  শনিবার রাজধানীর একটি স্থানীয় এক হোটেলে বারভিডা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আবদুল হক এসব বক্তব্য তুলে ধরেন। আগামী বাজেট সামনে রেখে বারভিডা এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যাল্স ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) সেক্রেটারি জেনারেল রিয়াজ রহমান, সংগঠনের ভাইস প্রেসিডেন্ট-১ মো. সাইফুল ইসলাম (সম্্রাট), ভাইস প্রেসিডেন্ট-৩ ফরিদ আহামেদ, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল সৈয়দ জগলুল হোসেন, ট্রেজারার মো. সাইফুল আলম, জয়েন্ট ট্রেজারার হাফিজ আল আসাদ, অর্গানাইজিং সেক্রেটারি জোবায়ের রহমান, পাবলিকেশন অ্যান্ড পাবলিসিটি সেক্রেটারি মো. আব্দুল আউয়াল, প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেক্রেটারি এস এম মনসুরুল করিম (লিংকন), কালচারাল সেক্রেটারি মো. গোলাম রব্বানি (শান্ত) প্রমুখ।

বুদ্ধিমানরা কেন সব সময় নীরব থাকে?

বুদ্ধিমানরা কেন সব সময় নীরব থাকে?

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে সফল ব্যক্তিরা জীবনের কোনো এক পর্যায়ে সাধারণ মানুষের চোখে নির্বোধ বা অদ্ভুত মনে হতেন। তবে তারা অন্যের কথায় কান না দিয়ে নিজেদের মেধা ও দূরদৃষ্টি অনুসরণ করতেন। শেষ পর্যন্ত তারাই হতেন সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং সফল। কারণ প্রকৃত সফলতা বাহ্যিক প্রদর্শনীতে নয়, বরং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে নিহিত। সফল ব্যক্তিদের একটি বিশেষ গুণ হলো চুপ থাকা এবং বুঝে-শুনে কথা বলা। এই বিষয়ে ইসলামও আমাদের একই শিক্ষা দেয়। এই প্রসঙ্গে একটি শিক্ষণীয় গল্পও রয়েছে। এক দেশে এক মন্ত্রী ছিলেন যিনি রাজার প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করতেন। মন্ত্রী এতটাই বুদ্ধিমান ছিলেন যে, রাজা তার পরামর্শ ছাড়া কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতেন না। তবে রাজদরবারের অন্যরা তাকে হিংসা করত। একদিন রাজা মন্ত্রীকে বললেন, "তুমি এত বুদ্ধিমান, অথচ তোমার ছেলে একেবারে নির্বোধ।" রাজা অভিযোগ করলেন, প্রতিদিন সকালে গ্রামের বাজারে গেলে মন্ত্রীর ছেলেকে তিনি দুটি মুদ্রার সামনে দাঁড় করিয়ে প্রশ্ন করেন, "সোনার দাম বেশি নাকি রূপার?" ছেলেটি প্রতিবারই উত্তর দেয়, "রূপার দাম বেশি।" এতে সবার হাসাহাসির কারণ হয়ে দাঁড়ায় মন্ত্রীর ছেলে। বাড়ি ফিরে মন্ত্রী তার ছেলেকে জিজ্ঞাসা করলেন কারণ কী। ছেলে জানালো, রাজা প্রতিদিন তার সামনে একটি সোনার এবং একটি রূপার মুদ্রা রাখেন। যদি সে সঠিক উত্তর দিয়ে সোনার মুদ্রা তুলে নেয়, তাহলে রাজা মনে করবেন তার আর বিনা কারণে সোনার মুদ্রা দেওয়া উচিত নয়। সেদিন থেকেই রাজা আর তাকে কিছু দেবেন না। কিন্তু রূপার মুদ্রা নিতে থাকলে রাজা প্রতিদিন খুশি হয়ে হাসেন এবং তাকে রূপার মুদ্রা দিয়ে যান। ছেলে তার বাবাকে একটি বাক্স দেখাল, যা রূপার মুদ্রায় পূর্ণ। এভাবে দিনের পর দিন ছোট ছোট রূপার মুদ্রা জমিয়ে সে বড় সম্পদ তৈরি করেছিল। মন্ত্রী তখন উপলব্ধি করলেন, তার ছেলে আসলে নির্বোধ নয়; বরং দূরদৃষ্টি ও ধৈর্যের এক চমৎকার উদাহরণ। এই গল্প আমাদের শেখায়—জীবনে কখনো নিজেকে অতিরিক্ত চালাক প্রমাণের চেষ্টা করা উচিত নয়। কখনো অতিরিক্ত লোভী হওয়া উচিত নয়। নিজের সিদ্ধান্তের সঠিকতা অন্যের সামনে বারবার প্রমাণ করতে যাওয়া ঠিক নয়। প্রকৃত বুদ্ধিমত্তা চুপচাপ কাজ করা এবং সময়মতো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার মধ্যে নিহিত। বুদ্ধিমানরা জানেন, কখন কথা বলা উচিত আর কখন নীরব থেকে কাজ চালিয়ে যাওয়া উত্তম। তারা জানেন, অন্যেরা যতই তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করুক না কেন, প্রকৃত অর্জন নীরবে ও ধৈর্যের সাথে গড়ে ওঠে। ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/BbozKDHuXqg?si=qsVBDU2-okvcVuRo